Advertisement
০৪ মে ২০২৪

এ বার তোপ নির্মলার স্বামীরও

এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত লেখায় কেন্দ্রকে বিঁধে প্রভাকর বলেছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন নীতি তৈরির কোনও আগ্রহই দেখায়নি তারা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৩৪
Share: Save:

বিভিন্ন পরিসংখ্যানে স্পষ্ট দেখা গেলেও, অর্থনীতির সঙ্কটের কথা মানতে নারাজ নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রীরা। যার মধ্যে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। তবে এ বার সেই সঙ্কট নিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে তোপ এল নির্মলার ঘর থেকেই। শ্লথ অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন তাঁর স্বামী, অর্থনীতিবিদ পরকাল প্রভাকর। গোটা পরিস্থিতির জন্য চাঁছাছোলা ভাষায় দুষলেন কেন্দ্রকে। তীব্র সমালোচনা করলেন সরকারের সমস্যার কথা মানতে না চাওয়া নিয়েও। তাঁর দাবি, গোটা সমস্যার পেছন রয়েছে এই অনিচ্ছাই।

প্রভাকরের কথায়, ‘‘সরকার অস্বীকার করলেও, নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সকলের সামনে আসা পরিসংখ্যান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, একের পর এক ক্ষেত্র কী ভাবে গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।’’

এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত লেখায় কেন্দ্রকে বিঁধে প্রভাকর বলেছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন নীতি তৈরির কোনও আগ্রহই দেখায়নি তারা। তাঁর হুঁশিয়ারি, নেহরুর সমাজতান্ত্রিক ভাবনা নিয়ে সমালোচনা না করে বরং নরসিমহা রাও-মনমোহন সিংহের অর্থনৈতিক মডেলকে অনুসরণ করায় মন দিক সরকার। ১৯৯১ সালে রাও জমানার যে নীতিতে অর্থনীতির উদারিকরণের পথ পোক্ত করার বন্দোবস্ত রয়েছে।

তাঁর মতে, বিজেপি পুঁজিবাদের ওকালতি করলেও, কার্যক্ষেত্রে মুক্ত বাজারের কাঠামোকে কাজে লাগানোর পথে হাঁটেইনি। প্রভাকরের কথায়, ‘‘আর্থিক নীতির ক্ষেত্রে এই দল নিজস্ব নীতি (পলিসি) তৈরি করার বদলে প্রধানত ‘নেতি নেতি’ (এটা নয়, এটা নয়)-কে গ্রহণ করেছেন।’’

তাঁর লেখায় অর্থনীতির সমস্যার খুঁটিনাটি তুলে এনেছেন প্রভাকর। ছ’বছরের তলানি ছোঁয়া বৃদ্ধি বা চাহিদার ধাক্কা খাওয়া থেকে ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ বেকারত্ব, ছোট শিল্পে ঋণের খরা, রফতানির হোঁচট খাওয়া— সবই আছে সেই তালিকায়।

কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির দাবি, ‘‘ওনার লেখা থেকে স্পষ্ট আর্থিক নীতির ক্ষেত্রে আদর্শগত ভাবে দেউলিয়া হয়েছে বিজেপি। বুদ্ধিও লোপ পেয়েছে। আমি আর প্রভাকর একসঙ্গে কাজ করেছি। উনি কাকে বিয়ে করেছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’ আর খোদ অর্থমন্ত্রীর ঘর থেকে এই তোপ আসা নিয়ে দিনভর হইচইয়ের পরে, বিজেপি সভাপতি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দাবি, ‘‘দম্পতিদের পৃথক মতামত থাকতেই পারে।’’

বস্তুত, রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে নির্মলা ও প্রভাকর বরাবরই উল্টো সারিতে। স্ত্রী যখন বিজেপিতে যোগ দেন, তখন তার বিরোধী দলের সমর্থক তিনি। বিজেপি শিবিরের একাংশ অবশ্য বলছেন, এটা মনে করার কারণ নেই তিনি নির্মলা বিরুদ্ধে কথা বললেন। বরং খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে জনসঙ্ঘের আমল থেকে বিজেপির যে আর্থিক নীতি, মূলত তারই সমালোচনা করেছেন তিনি।

তবে অন্য অংশের দাবি, কেন্দ্রের আর্থিক সঙ্কট না মানা নিয়ে যে ভাবে তুলোধোনা করেছেন প্রভাকর, তার থেকে নির্মলাকে বাদ দেওয়া যায় না। যিনি সম্প্রতি বলেছেন, নতুন প্রজন্ম অ্যাপ-ক্যাবে চড়ে বলেই না কি গাড়ি বিক্রি কমেছে! এটাও দাবি করেছেন, দেশের কোথাও কোনও চাহিদার অভাবের কথা না কি শোনেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE