আগামী ১ এপ্রিলের মধ্যে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করার লক্ষ্যে অটল কেন্দ্র। সেই কারণেই প্রস্তুতি কতটা হয়েছে, তার আঁচ পেতে বৈঠক সারলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কাজ কতটা এগিয়েছে, তার খোঁজ-খবর নিতে বুধবার অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, অর্থ সচিব অশোক লাভাসা ও রাজস্ব সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই বিভিন্ন রকম করের হার নিয়ে কথা হয়। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন, যা-ই হোক না কেন, জিএসটি চালুর জন্য ১ এপ্রিলের সময়সীমার আগেই যেন সব কাজ শেষ হয়। করের হার ঠিক করার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় জিএসটি আইন ও আন্তঃ-রাজ্য জিএসটি আইনের খসড়াও চূড়ান্ত করতে হবে জিএসটি পরিষদকে। তার জন্য সর্বাধিক দু’মাসের সময়সীমা রাখছেন অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা। না-হলে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই বিল দু’টি পাশ করানো যাবে না। এ জন্য অধিবেশন এগিয়ে ১২ নভেম্বর থেকে শুরু করা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।
আগামী ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা প্রথম জিএসটি পরিষদের বৈঠকে বসবেন। আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু করের হার নির্ধারণ। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বৈঠকে কেন্দ্রের রাজস্ব সচিব হাসমুখ অধিয়া হার যতটা সম্ভব কম রাখার পক্ষে সওয়াল করবেন। এমনিতেই অর্ধেক অত্যাবশ্যকীয় পণ্য জিএসটির বাইরে থাকায় গরিবদের উপর বাড়তি বোঝা চাপার সম্ভাবনা কমেছে।
বুধবারের বৈঠকে জিএসটি চালুর জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো তৈরির কাজ কতখানি এগিয়েছে, সে ব্যাপারেও খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী। দ্রুত ওই কাজ সারার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর পরেই বৃহস্পতিবার নর্থ ব্লকে ইনফোসিসের সিইও বিশাল সিক্কার সঙ্গে বৈঠক করেন জেটলি। গত বছর সেপ্টেম্বরে এই সংস্থাকে জিএসটির জন্য তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বৈঠকের পরে সিক্কা বলেন, ‘‘এখনও বেশ কিছু জায়গায় প্রস্তুতি বেশ দুর্বল। তবে হাতে সময় আছে। সরকার ওই সব অসুবিধা কাটিয়ে উঠতে দায়বদ্ধ।’’ সিক্কার মতে, ২০১৭ সালের এপ্রিলের সময়সীমা চ্যালেঞ্জিং হলেও তার আগেই কাজ শেষ হবে। প্রযুক্তিগত সমস্যা ছাড়াও নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর মানসিকতায় সমস্যা রয়েছে। তবে জিএসটির তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো যাতে সুরক্ষিত হয়, তার জন্য ইনফোসিস বিশ্বমানের ব্যবস্থা নিচ্ছে।
বস্তুত, জিএসটি এলে জিনিসের দাম বেড়ে যাক এবং সাধারণ মানুষের উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপুক, এমনটা চাইছেন না মোদী। কংগ্রেস যেখানে জিএসটির হার ১৮ শতাংশে বেঁধে রাখার দাবি তুলেছিল, সেখানে অনেক রাজ্যই আরও বেশি করের পক্ষে। যুক্তি হল, না-হলে রাজ্যের আয় কমবে। কিন্তু এমনিতেই পাইকারি বাজার দর ফের মাথা তুলতে শুরু করেছে। মোদী তাই চাইছেন, জিএসটির হার ঠিক করার আগে কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা নিজেদের মধ্যে বিশদে আলোচনা করুন। আসলে কেন্দ্রের সমস্যা হল, করের হার কম রাখতে গিয়ে রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি হলে কেন্দ্রের উপরও বেশি দায় চাপবে। কারণ ৫ বছর পর্যন্ত রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি কেন্দ্রকেই মেটাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy