Advertisement
E-Paper

দাবি মেনে সুদ কমাল আরবিআই

প্রত্যাশা মতোই সুদ কমানোর পথে হাঁটলেন রঘুরাম রাজন। চলতি ২০১৫ সালে এ নিয়ে তিন বার। মঙ্গলবার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই ঋণে সুদ কমিয়ে দেয় এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক। তার পরেই স্টেট ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক ও দেনা ব্যাঙ্ক।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০৩:১০

প্রত্যাশা মতোই সুদ কমানোর পথে হাঁটলেন রঘুরাম রাজন। চলতি ২০১৫ সালে এ নিয়ে তিন বার।

মঙ্গলবার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই ঋণে সুদ কমিয়ে দেয় এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক। তার পরেই স্টেট ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক ও দেনা ব্যাঙ্ক। বাদবাকিরাও একই রাস্তা নেবে বলে ইঙ্গিত ব্যাঙ্কিং শিল্পের। এর জেরে মানুষকে স্বস্তি দিয়ে কমতে চলেছে গাড়ি-বাড়ি ঋণের মাসিক কিস্তি। কমছে শিল্পের ঋণ নেওয়ার খরচ। ফলে সাধারণ ভাবে রাজনের সিদ্ধান্তে খুশি শিল্পমহল।

এ দিন রেপো রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। ফলে তা নেমেছে ৭.২৫ শতাংশে। এই সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে স্বল্প মেয়াদে ঋণ দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তিন দফায় চলতি বছরে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এ দিন স্টেট ব্যাঙ্ক বেস রেট বা ন্যূনতম সুদের হার ১৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে করেছে ৯.৭%। এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক কমিয়েছে ৩০ বেসিস পয়েন্ট, পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক ও দেনা ব্যাঙ্ক ২৫ বেসিস পয়েন্ট করে।

রাজন জানান, মূল্যবৃদ্ধির চাপ কমায় সুদ হ্রাসের পথে এগোনো সম্ভব হল। তবে একইসঙ্গে অর্থনীতির হাল নিয়ে সতর্কও করেছেন তিনি। রাজন বলেন, ‘‘লগ্নি আসছে ঢিমেতালে। শিল্প সংস্থার আর্থিক ফলাফলও যথেষ্ট দুর্বল। যা থেকে স্পষ্ট, চাহিদা এখনও বাড়ার মুখ নেয়নি। পাশাপাশি, সরকারি হিসাবে ধরা পড়েনি আর্থিক বৃদ্ধির সত্যিকারের ছবি।’’ ঘাটতি বর্ষা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন রাজন। যে-কারণে তাঁর সংশয়, পরের দফায় সুদ আর কমানো যাবে কি না, তা নিয়ে। আর, রাজনের এই মন্তব্যের জেরেই মঙ্গলবার ধস নামে শেয়ার বাজারে। সেনসেক্স পড়ে যায় ৬৬১ পয়েন্ট। শুধু যে শেয়ার সূচক নেমেছে তাই নয়, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ফের বাজার জুড়ে তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। এ দিন সেনসেক্স থিতু হয়েছে ২৭,১৮৮.৩৮ অঙ্কে।

রাজন বলেন যে, আরও দু’টি বিষয়ে তিনি চিন্তিত:

বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা

আন্তর্জাতিক সমস্যার বিরূপ প্রভাব

রাজনের কথায় বাজারে বিশেষ করে এ দিন আতঙ্কিত হয় বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘বর্ষা কেমন হবে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করায় বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি আতঙ্কিত হয়ে আগাম লেনদেনে নিফ্‌টি ফিউচার টানা বিক্রি করতে থাকে। এর ফলেই ধস নামে বাজারে।’’ এমনিতেই আমেরিকায় সুদ বাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ। যে কারণে ভারতের শেয়ার এবং বন্ডের বাজার থেকে লগ্নি তুলে তা আমেরিকার বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে বিদেশিদের মধ্যে। তার উপর রাজনের মন্তব্যে আতঙ্ক বেড়েছে।

এ দিকে, শিল্পের প্রত্যাশা ছিল সুদ কমুক ৫০ বেসিস পয়েন্ট। সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সুরেই মন্তব্য করে অবশ্য বলেন, বৃদ্ধিকে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে কেন্দ্র ও শীর্ষ ব্যাঙ্ক হাত মিলিয়ে এগোচ্ছে, যা খুব জরুরি। একই বক্তব্য ফিকি প্রেসিডেন্ট জ্যোৎস্না সুরিরও।

সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষের শেষ তিন মাস, জানুয়ারি থেকে মার্চে নতুন পদ্ধতির হিসাবে বৃদ্ধি ‘বিশেষ কারণে’ই ৭.৫% ছুঁয়েছে বলেও মন্তব্য করেন রাজন। একই অভিযোগ আগেও উঠেছে। নতুন হিসেবে জাতীয় আয় মাপা হয় বাজার দরে উৎপাদনের মূল্য হিসেব করে। আগে তা মাপা হত, উৎপাদনের খরচের ভিত্তিতে। উৎপাদন খরচের ভিত্তিতে করা হিসেবের সঙ্গে পরোক্ষ কর যোগ করে এবং ভর্তুকি বাদ দিলে পাওয়া যায় বাজার দরের ভিত্তিতে জাতীয় আয়। রাজন বলেন, ‘‘ওই করের অঙ্ক বাদ দিলেই বৃদ্ধির ছবি আর তত উজ্জ্বল থাকবে না।’’ চলতি ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষের জন্য বৃদ্ধির পূর্বাভাসও আগের ৭.৮% থেকে কমিয়ে ৭.৬% করেছেন তিনি।

RBI Bank CII Mumbai Delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy