Advertisement
০২ মে ২০২৪
RBI

RBI: ৬০০-র বেশি অ্যাপে আর্থিক ক্ষতির ভয়, বিপদ চিনিয়ে সতর্ক করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

ভারতে দিন দিন ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রাহকদের ঠকানো। অতীতেও একাধিক বার এ নিয়ে সতর্ক করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

ঋণ সংক্রান্ত অধিকাংশ অ্যাপই অবৈধ।

ঋণ সংক্রান্ত অধিকাংশ অ্যাপই অবৈধ। গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২১ ১৫:২৭
Share: Save:

ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার যত অ্যাপ চালু রয়েছে তার সিংহ ভাগই অবৈধ। এমন দাবিই করা হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি রিপোর্টে। এই মুহূর্তে ভারতে ১,১০০-র মতো অ্যাপ রয়েছে যেগুলি কয়েকটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ড টাইপ করলে পাওয়া যায়। বিভিন্ন অ্যাপ স্টোরে ‘লোন’, ‘ইনস্ট্যান্ট লোন’, ‘কুইক লোন’ লিখলে এই অ্যাপগুলি পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬০০-র বেশি অ্যাপই অবৈধ বলে আরবিআই-এর ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।

ভারতে দিন দিন ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গ্রাহকদের ঠকানোর ঘটনাও। অতীতেও একাধিক বার এ নিয়ে সতর্ক করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। অনেক অ্যাপ কোনও নিয়ম নীতি না মেনেই আর্থিক লেনদেন করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে সবিস্তারে খোঁজ নেওয়ার জন্য গত জানুয়ারিতে একটি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’ তৈরি করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই গ্রুপের রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে, দেশে বিভিন্ন অ্যাপ স্টোরে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের উপযোগী ঋণ দেওয়ার এমন ৬০০-র বেশি অ্যাপ রয়েছে যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দৃষ্টিতে অবৈধ। এগুলি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নীতি মেনে চলে না। তবে কোন কোন অ্যাপ ওই তালিকায় রয়েছে তা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ভারতে মোট ৮১টি অ্যাপ স্টোর রয়েছে যেখানে ওই বিপজ্জনক অ্যাপগুলি পাওয়া যায়।

ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে এই অ্যাপগুলি যে বিপজ্জনক, তা অনেক দিন আগে থেকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নজরে আসে। ২০২০-র জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ২,৫৬২টি অভিযোগ পায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাপ ব্যবহারকারী ব্যক্তি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, তাঁরা না জেনেই এমন সংস্থার থেকে ঋণ নিয়েছেন যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদনপ্রাপ্ত এনবিএফসি (নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি) নয়। অনেক সময়ে অ্যাপের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির থেকেও ঋণ নিচ্ছেন গ্রাহকরা। এমন ঘটনার অভিযোগ যে সব রাজ্যে বেশি তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। এ ছাড়াও এমন জাল চক্র সক্রিয় তামিলনাড়ু, গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, দিল্লি, হরিয়ানা, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশে।

সহজে ঋণ পাওয়ার আকর্ষণে অনেকেই আধার, প্যান ছাড়াও ব্যাঙ্কের তথ্য এই সব অ্যাপে দিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি ওই অ্যাপগুলি গ্রাহকের ফোনে সেভ থাকা নম্বর অবৈধ ভাবে ব্যবহার করছে। অতিরিক্ত সুদ তো বটেই, সেই সঙ্গে নানা গোপন খরচ নেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের থেকে। আবার ঋণের টাকা আদায়ের ক্ষেত্রেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চাপ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট ভাবে অবৈধ অ্যাপের তালিকা প্রকাশ না করলেও অতীতে একাধিক বার বলা হয়েছে যে, অজ্ঞাত ব্যক্তি বা সংস্থার কাছে ব্যক্তিগত তথ্য দিলে আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। এ বারের রিপোর্টেও সেই আশঙ্কা রয়েছে। এই ধরনের অ্যাপ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

RBI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE