Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রাণচঞ্চল অর্থনীতির আশায় সূচক

হিসেবনিকেশ শুরু হয়েছে মোদী সরকারের প্রথম ১০০ দিনে দেশ কতটা এগোল তাই নিয়ে। প্রাথমিক রিপোর্ট মন্দ নয়। যদিও একটি সরকারের কাজকর্ম বিচার করার জন্য ১০০ দিন যথেষ্টই ছোট সময়। কাজের থেকেও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি সকলের পছন্দ হয়েছে। কিছু ইঙ্গিত মিলেছিল নতুন সরকারের প্রথম বাজেটেই।

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৪৯
Share: Save:

হিসেবনিকেশ শুরু হয়েছে মোদী সরকারের প্রথম ১০০ দিনে দেশ কতটা এগোল তাই নিয়ে। প্রাথমিক রিপোর্ট মন্দ নয়। যদিও একটি সরকারের কাজকর্ম বিচার করার জন্য ১০০ দিন যথেষ্টই ছোট সময়।

কাজের থেকেও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি সকলের পছন্দ হয়েছে। কিছু ইঙ্গিত মিলেছিল নতুন সরকারের প্রথম বাজেটেই। আর্থিক সংস্কারের ব্যাপারে স্পষ্ট দিশা ছিল অরুণ জেটলির বাজেটে। রেল ও প্রতিরক্ষায় প্রথম বিদেশি লগ্নির প্রস্তাব মনে ধরেছিল লগ্নিকারীদের। চটজলদি ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বহু দিন ধরে আটকে থাকা বেশ কয়েকটি প্রকল্পকে। আনা হয়েছিল বিমা বিল-ও। আগের তুলনায় অনেক সদর্থক হয়েছে লগ্নির পরিবেশ। আস্থা ফিরে পাচ্ছেন দেশ-বিদেশের লগ্নিকারীরা। এর ফলে বিশ্ব বাজারের উত্থান-পতন সত্ত্বেও অনেকটাই স্থায়িত্ব পেয়েছে ভারতীয় বাজার। দুই সূচকই ঘোরাফেরা করছে সর্বোচ্চ অঙ্কের আশেপাশেই। বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন ছোট লগ্নিকারীরা। আসতে শুরু করেছে নতুন নতুন মিউচুয়াল প্রকল্প। মূল্যবৃদ্ধি তেমন না-কমলেও নতুন করে সে ভাবে বাড়েওনি। বেশ কয়েকটি শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধির খবর আসছে। পণ্যের জোগান বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা থাকবে। বৃষ্টিপাতে যতটা ঘাটতির আশঙ্কা করা হয়েছিল, অবস্থা তার থেকে ভাল।

খাদ্য উৎপাদন কিছুটা কমলেও সরকারের মতে তাতে আশঙ্কার বড় কোনও কারণ নেই। যতটা খাদ্যপণ্য মজুত আছে, তাতে সরবরাহ কমার আশঙ্কা নেই। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসেমোট জাতীয় উৎপাদন বেড়েছে ৫.৭ শতাংশ হারে। এই তথ্য খুবই উৎসাহ -ব্যঞ্জক। এর পুরো কৃতিত্ব অবশ্যই মোদী সরকারের প্রাপ্য নয়। অরুণ জেটলির মতে, বৃদ্ধির তো এই সবে শুরু। পরবর্তী ৮/৯টি ত্রৈমাসিকে উৎপাদন বাড়বে আরও দ্রুতগতিতে।

বাজারের কাছে এটি একটি বড় খবর। আগামী মাসগুলিতে অর্থনীতি আরও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে, এই আশায় অনেকেই এখন সূচককে আগামী দিনে অনেকটা উপরে দেখতে পাচ্ছেন।

বাজার ভবিষ্যতে উঠলেও মাঝেমধ্যে কিন্তু সংশোধনও হবে। এই সংশোধনই সুযোগ করে দেবে নতুন করে লগ্নি করার। এই বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডেও লগ্নি করা চলে এসআইপি পদ্ধতিতে। এখন ডিভিডেন্ডের ভরা মরসুম। খেয়াল রাখুন, সব ডিভিডেন্ড সময় মতো ব্যাঙ্কে ঢুকছে কি না।

এ বার নতুন করে কোনও করমুক্ত বন্ড বাজারে আসবে না। তবে বাজার থেকে কেনা যেতে পারে নথিবদ্ধ বন্ড। গত এক বছরের সুদ দেওয়া হয়ে গেলে বাজার দর ৮০/৯০ টাকা নেমে আসবে বলে আশা করা যায়। উঁচু হারের করদাতারা সেই সময়ে বাজার থেকে তুলে নিতে পারেন করমুক্ত বন্ড। কিছুটা প্রিমিয়াম দিতে হলেও ৮ শতাংশ করমুক্ত ইল্ড থাকবে বলে আশা করা যায়। বাজার এখন বেশ ভাল জায়গায়। যে-সব শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্প এই বাজারেও ভাল লাভের সন্ধান দিতে পারেনি, তাদের মায়া ত্যাগ করাই ভাল। এই ধরনের লগ্নি বিক্রি করে পরে সংশোধনের বাজারে সম্ভাবনাময় শেয়ার অথবা মিউচুয়াল প্রকল্পে লগ্নি করার কথা ভাবা যেতে পারে।

কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্প ১৯৯৫-এর অধীনে মাসিক ন্যূনতম পেনশন বাড়িয়ে ১০০০ টাকা করা হয়েছে। এতে উপকৃত হবেন ২৮ লক্ষ পেনশন প্রাপক, যাঁরা এর থেকে কম পেনশন পাচ্ছিলেন। আগে প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতায় আসার জন্য বেতনের ঊর্ধ্বসীমা ছিল মাসে ৬৫০০ টাকা। এই ঊর্ধ্বসীমা এ বার বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫,০০০ টাকা। এর ফলে অতিরিক্ত ৫০ লক্ষ কর্মী পিএফের সুবিধা পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

দু’টি নিয়মই চালু হবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। এতে সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত মানুষের সামাজিক সুরক্ষা অনেকটা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তও আস্থা বাড়াবে মোদী সরকারের প্রতি। আরও একটি ভাল খবর হল, গত বছরের মতো এ বারও (২০১৪-’১৫) প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমার উপর সুদ দেওয়া হবে ৮.৭৫% হারে। করমুক্ত এই সুদের হার যথেষ্টই আকর্ষণীয়। এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন প্রায় ৫ কোটি মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE