ফাইল চিত্র।
গত ২১ জানুয়ারি সেনসেক্স প্রথম বারের জন্য ৫০ হাজারের স্পর্শ পেলেও, সেখানে থিতু হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। অতি আশাবাদীদের কেউ কেউ তখন বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই বাজার ৬০ হাজার ছুঁতে পারে। তাঁদের ভুল প্রমাণ করে বিএসই-র সূচকটি সেই মাইলফলক পেরিয়ে গেল সেপ্টেম্বর শেষে না-হতেই (২৪ তারিখ)। এমন দৌড় আগে কখনও দেখেননি শেয়ারে লগ্নিকারীরা। ৫০ থেকে ৬০ হাজারে পৌঁছতে সেনসেক্স সময় নিয়েছে মাত্র ১৫৮টি কাজের দিন। বাজারে সব শেয়ারের মোট মূল্য ৭১.৯১ লক্ষ কোটি টাকা বেড়ে পৌঁছেছে ২৬১.১৯ লক্ষ কোটি টাকায়।
১৯৮৬ সালের ২ জানুয়ারি ১০০ পয়েন্ট থেকে শুরু করে ৬০ হাজারে পৌঁছতে সেনসেক্স সময় নিল ৩৬ বছরের কয়েক মাস কম। ১৯৯০-এর ২৫ জুলাই যে সূচক ১০০০ পার করে থেমেছিল, সে-ই পাক্কা ৩১ বছর পরে ৬০ হাজার পার। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত উত্থান ১২,২৯৭ পয়েন্ট। অর্থনীতির যে চোখে পড়ার মতো বিরাট উন্নতি হয়েছে তা নয়। বরং বলা যায়, দ্রুত তেমন উন্নতি হতে চলেছে, এই আশায় বুক বেঁধেই এমন দৌড়। সঙ্গে যোগ হয়েছে নগদের বিপুল জোগান। দেশীয় আর্থিক সংস্থা, বিদেশি আর্থিক সংস্থা, সাধারণ লগ্নিকারী— সকলেরই তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে (উত্থানের কারণ সঙ্গের সারণিতে)।
সেনসেক্স যেখানে দাঁড়িয়ে, তাতে বাজারে শেয়ারের মোট দাম এবং আয়ের অনুপাত (পিই রেশিও) বেশ উঁচুতে, ৩০.৯৬। অর্থাৎ প্রায় ৩১ গুণ। আর বাজারের বেশি উঁচু পি ই রেশিও হঠাৎ পতনের আশঙ্কা জাগায়। তার উপরে অর্থনীতির বর্তমান সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করে ছুটছে সেনসেক্স। যত উঁচুতে উঠছে ততই বাড়ছে বড় পতনের ঝুঁকি।
এত উঁচু বাজারে পুরনো লগ্নিকারীরা খুশি। তবে নতুন লগ্নিতে ঝুঁকি আছে। এখন সূচকের দিকে তাকিয়ে নয়, কেনা-বেচা করতে হবে নির্দিষ্ট শেয়ারের গুণমান এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার বিচারে। দামের ভিত্তিতে তলানিতে পড়ে থাকা কিংবা অতিরিক্ত চড়ে থাকা (সংশ্লিষ্ট সংস্থার আয় ও লাভের নিরিখে), দু’ধরনের শেয়ার নিয়ে সাবধান থকতে হবে সাধারণ লগ্নিকারীদের। অনেকেই ঝুঁকি এড়াতে শেয়ার ভিত্তিকে মিউচুয়াল ফান্ডে পুঁজি ঢালছেন। মোটা লাভের সন্ধান দিয়েছে সেই লগ্নিও।
আগামী কয়েক সপ্তাহ বাজারের নজর যে সব দিকে থাকবে—
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফর থেকে প্রাপ্তি।
অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের জন্য এনএসসি, পিপিএফের মতো স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হারে কোনও বদল হয় কি না। ৩০ সেপ্টেম্বর এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে পারে।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়। ৬-৮ অক্টোবর তা নির্ধারণের জন্য শীর্ষ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির বৈঠক।
উৎসবে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা।
জুলাই-সেপ্টেম্বরে সংস্থাগুলির আর্থিক ফল। পুজো শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হবে চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের ফল প্রকাশ।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy