মধ্যবিত্ত আবাসনের হাত ধরেই পশ্চিমবঙ্গে ফের বিনিয়োগ দেড়শো বছরের পুরনো শাপুরজি-পালোনজি গোষ্ঠীর।
নতুন ব্র্যান্ড ‘জয়ভিল শাপুরজি’-র আওতায় হাওড়ার সলপে ৩,০০০ ফ্ল্যাট তৈরি করছে তারা। বুধবার মুম্বইয়ে মধ্যবিত্ত আবাসন তৈরির এই ব্র্যান্ড আনার কথা ঘোষণা করে সংস্থা জানিয়েছে এটির সূচনাই হচ্ছে সলপের প্রকল্পের হাত ধরে। ‘জয়ভিল শাপুরজি’-র কর্তা বেঙ্কটেশ গোপালকৃষ্ণন জানান, এই গোষ্ঠীর তরফে এ ধরনের ব্র্যান্ড এই প্রথম। ওমানের সুলতানের স্টোন প্যালেস থেকে শুরু করে মুম্বইয়ের বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন, তাজ মহল প্যালেস তৈরির মতো বহু কৃতিত্ব শাপুরজি-পালোনজির রয়েছে। কিন্তু সে ভাবে তারা কোনও দিন প্রচারের আলোয় আসতে চায়নি বলেই আবাসনের আলাদা ব্র্যান্ডও আনেনি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ বার মধ্যবিত্ত আবাসনের বাজারে আরও বড় ভাবে পা রাখতেই তাদের এই বিপণন কৌশল।
বাম আমলে পাওয়া জমিতে রাজারহাটে তৈরি মধ্যবিত্ত আবাসন প্রকল্প ‘সুখবৃষ্টি’র পথেই নতুন ব্র্যান্ড এনে দেশ জুড়ে হাঁটতে চলেছে টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম চালিকাশক্তি শাপুরজি-পালোনজি। রাজারহাটে ৫০ একরে ২০,০০০ আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমেই পশ্চিমবঙ্গে প্রথম পা রাখে তারা। প্রথম দফাতেই ৩,০০০ ফ্ল্যাটের জন্য ৩৮ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। গোপালকৃষ্ণনের দাবি, ক্রেতাদের এ রকম সাড়াই ব্যবসার নতুন দরজা খোলে।
সলপের নতুন প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে তৈরি হবে ৮০০ ফ্ল্যাট। গোপালকৃষ্ণনের দাবি, আগামী তিন বছরের মধ্যেই ফ্ল্যাটগুলি তৈরি হবে। আবাসনে থাকবে টেনিস কোর্ট, ফুটবল মাঠ, ক্লাব, খুচরো বিপণি-সহ বিনোদন ও দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের পরিকাঠামো।
প্রসঙ্গত, মধ্যবিত্ত আবাসনের নতুন ব্র্যান্ড জয়ভিলে শাপুরজি ছাড়াও পুঁজি ঢেলেছে এডিবি, আইএফসি ও স্ট্যানচার্ট পিই। সব মিলিয়ে তহবিলের পরিমাণ ২৫০ কোটি ডলার (১৬,৭৫০ কোটি টাকা)। এই টাকা জমি কেনার জন্যই খরচ করা হবে বলে দাবি সংস্থার। জয়ভিল ব্র্যান্ডের ছাতার তলায় প্রথম পর্যায়ে ৭টি শহরে তৈরি হবে মধ্যবিত্ত আবাসন প্রকল্প। প্রতি বর্গফুটের দাম ৩,০০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা। মুম্বই বাদে বাকি ছ’টি শহরে দাম শুরু হবে ২০ লক্ষ টাকা থেকে। সর্বোচ্চ দাম ৬৫ লক্ষ। ২০ হাজার ফ্ল্যাট আগামী ৬-৭ বছরে তৈরি হবে। এই খাতে মোট জমি অধিগ্রহণের পরিমাণ ২০০-২৫০ একর। প্রকল্প প্রতি জমির পরিমাণ ১০-৩০ একর।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বড় জমি ছাড়া কম দামের আবাসন প্রকল্পে ব্যবসায় লাভের অঙ্ক বজায় রাখা যায় না। হাওড়া ছাড়া মুম্বই, পুণে, আমদাবাদ, দিল্লি, চেন্নাই ও বেঙ্গালুরুতে এ ধরনের প্রকল্প তৈরি করবে শাপুরজি। ইতিমধ্যেই সলপ, মুম্বইয়ের বিরার ও পুণের হিঞ্জওয়াড়িতে জমি হাতে এসেছে বলে দাবি সংস্থার। বাকি জমি দেড় বছরের মধ্যেই অধিগ্রহণ করা হয়ে যাবে বলে দাবি।
নতুন ব্র্যান্ডের আওতায় প্রথম পর্বের সব প্রকল্প মিলিয়ে খরচ দাঁড়াবে ৫,০০০ থেকে ৬,০০০ কোটি টাকা। শাপুরজি-পালোনজি কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্যবসার অঙ্ক দাঁড়াবে ৯,০০০ কোটি টাকা।