সুযোগ বা সম্ভাবনা কম নেই। চাষের উপযোগী স্বল্প লবনাক্ত জলযুক্ত জমিও অন্ধ্রপ্রদেশের থেকে প্রায় আড়াই-তিন গুণ বেশি। তবু ভ্যানামেই চিংড়ির উৎপাদনে পিছিয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ। যে চিংড়ির প্রায় পুরোটাই বিক্রি হয় বিদেশে। রফতানি শিল্পের হিসেব, পশ্চিমবঙ্গে যেখানে বছরে খুব বেশি হলে এখন ৬০ হাজার টন ভ্যানামেই উৎপাদন হচ্ছে, সেখানে শুধু অন্ধ্রপ্রদেশেই ৪ লক্ষ টন।
মোটা সাদা খোলসের ভ্যানামেই চিংড়ি বাগদার মতোই সুস্বাদু। বিশ্ব বাজারে ক্রমশ কদর বাড়ছে এর। ফলে রাজ্যের সামনে ব্যবসার বিপুল সুযোগ খুলেছে। তুলনায় তা লাভজনকও। কিন্তু সামুদ্রিকপণ্য রফতানিকারী সংস্থাগুলির আক্ষেপ, স্রেফ চাহিদা মতো চিংড়ি না মেলায় রফতানি বাড়ানো যাচ্ছে না। কারণ, উপযুক্ত জমি থাকলেও চাষ হচ্ছে সামান্য অংশে। ধাক্কা খাচ্ছে উৎপাদন। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, এর কারণ মূলত ভেড়ির মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া, যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার, ভর্তুকিহীন বিদ্যুৎ ইত্যাদি। সঙ্গে যোগ হয়েছে আধুনিক চিংড়ি চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে একাংশের অজ্ঞানতাও।
দেশে সামুদ্রিকপণ্য রফতানিকারী সংস্থাগুলির সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার চেষ্টা করছে। আমরাও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে চিংড়ি চাষে উৎসাহ দিচ্ছি। তাতে কিছুটা লাভ হয়েওছে।
পশ্চিমবঙ্গ
• উপযুক্ত চাষের জমি প্রায় ৪ লক্ষ হেক্টর
• চাষ হয় ৫০ হাজারে
• উৎপাদন ৬০ হাজার টন
• চিংড়ি-সহ সামুদ্রিকপণ্য রফতানির অঙ্ক ৮,০০০ কোটি
অন্ধপ্রদেশ
• উপযুক্ত চাষের জমি প্রায় ১.৫২ লক্ষ হেক্টর
• চাষ হয় ১.৩০ লক্ষে
• উৎপাদন ৪ লক্ষ টন
• দেশে মোট ভ্যানামেই উৎপাদনের ৭৩%
• চিংড়ি-সহ সামুদ্রিকপণ্য রফতানির অঙ্ক ১৮,০০০ কোটি
সমস্যা কোথায়?
• ভেড়ির মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া
• ভর্তুকিহীন বিদ্যুৎ
• যথেচ্ছ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার
• আধুনিক চিংড়ি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে একাংশের অজ্ঞানতা
কিন্তু তা সম্ভাবনার তুলনায় অনেক কম।’’ রফতানিকারীদের দাবি, সমপরিমাণ জমিতে বাগদার তুলনায় ভ্যানামেই চিংড়ি উৎপাদন হয় বেশি। লাভও বেশি থাকে। অথচ রফতানির চাহিদা মেটাতে অনেক সময় এ রাজ্যের সংস্থাগুলিকে তা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
রফতানি সংস্থাগুলির মতে, সরকার নানা ভাবে চিংড়ি চাষে উৎসাহ দিলেও, কেন উৎপাদন তেমন বাড়ছে না তা পর্যালোচনা জরুরি। সমস্যা মেটাতে রাজ্যের সঙ্গে ফের আলোচনাতেও বসতে চায় তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy