Advertisement
১৭ মে ২০২৪
উদ্বেগ বাণিজ্য দূতের

লগ্নির পথে বাধা রাজ্যে অশান্তিও

এর আগে সিঙ্গুর থেকে ন্যানো বিদায়ের পরে কিংবা নন্দীগ্রামের ঘটনার সূত্রে অনেকেই বারবার এই একই কথা বলেছেন। বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতায় এসে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই রাজনৈতিক ঝুঁকির কথা বলেছিলেন ফোর্ডের কর্তা মাইকেল বোনহ্যামও। শিল্পমহল বরাবর বলে এসেছে যে, বিনিয়োগ সব সময়ই রাজনৈতিক ঝুঁকি এড়াতে চায়। যেখানে অশান্তি, গণ্ডগোল কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে, সাধারণত তাকে এড়িয়ে চলতে চায় শিল্প। যাতে তার আঁচে ব্যবসার ক্ষতি না হয়। পরিস্থিতি তৈরি না হয় লগ্নি

বৈঠক: (বাঁ দিকে) রাজ্যের শিল্পসচিব রাজীব সিন্‌হা ও মার্চেন্টস চেম্বারের প্রেসিডেন্ট হেমন্ত বাঙ্গুর। শুক্রবার কলকাতায়। নিজস্ব চিত্র

বৈঠক: (বাঁ দিকে) রাজ্যের শিল্পসচিব রাজীব সিন্‌হা ও মার্চেন্টস চেম্বারের প্রেসিডেন্ট হেমন্ত বাঙ্গুর। শুক্রবার কলকাতায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৬
Share: Save:

পাহাড়ের অশান্তি হোক বা বসিরহাটের গোলমাল। রাজ্যে বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে এ ধরনের ঘটনা বাধা হতে পারে বলে এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রতিবেশী দেশের বাণিজ্য দূত।

শুক্রবার মার্চেন্টস চেম্বার আয়োজিত সভায় আলোচনার বিষয় ছিল ‘বিনিয়োগের গন্তব্য পশ্চিমবঙ্গ’। সেখানেই কলকাতায় ভুটানের ট্রেড কনসাল লেকি তেনজিন বলেন, লগ্নিকারীদের টাকা ঢালার উৎসাহ শুষে নেয় এ ধরনের রাজনৈতিক গণ্ডগোল। তেনজিন ছাড়াও ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতায় আমেরিকা, নেপাল, ইতালির কনসুলেট জেনারেলের কর্তারা। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজ্যের শিল্প সচিব রাজীব সিন্‌হাও।

তেনজিনের মতে, বিনিয়োগের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘দার্জিলিং, বসিরহাটে গণ্ডগোলের মতো সমস্যা মেটানো প্রয়োজন। নইলে রাজ্যের লগ্নিতে তার প্রভাব পড়তে পারে।’’ এ ধরনের গোলমাল হলে, সারা বিশ্বেই এই ঘটনা ঘটে বলেও জানান তিনি।

এর আগে সিঙ্গুর থেকে ন্যানো বিদায়ের পরে কিংবা নন্দীগ্রামের ঘটনার সূত্রে অনেকেই বারবার এই একই কথা বলেছেন। বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতায় এসে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই রাজনৈতিক ঝুঁকির কথা বলেছিলেন ফোর্ডের কর্তা মাইকেল বোনহ্যামও।

শিল্পমহল বরাবর বলে এসেছে যে, বিনিয়োগ সব সময়ই রাজনৈতিক ঝুঁকি এড়াতে চায়। যেখানে অশান্তি, গণ্ডগোল কিংবা রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে, সাধারণত তাকে এড়িয়ে চলতে চায় শিল্প। যাতে তার আঁচে ব্যবসার ক্ষতি না হয়। পরিস্থিতি তৈরি না হয় লগ্নিকে রাজনৈতিক গোলমালের আশঙ্কার খাদে ঠেলে দেওয়ার। এ রাজ্যে শিল্পমহলের একাংশ মনে করছেন, ঠিক এই জায়গা থেকেই এ দিন দার্জিলিং, বসিরহাটের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন তেনজিন। তাঁদের মতেও, যে ভাবে পাহাড়ে লাগাতার অশান্তি আর বন্‌ধ চলছে, তা বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে রাজ্যের পক্ষে ভাল বিজ্ঞাপন নয়। একই কথা প্রযোজ্য বসিরহাটের বেলাতেও।

সভায় উপস্থিত শিল্পসচিব তেনজিনের মন্তব্যের কোনও জবাব এ দিন দেননি। কিন্তু শিল্প দফতর সূত্রে খবর, এ ধরনের গোলমাল যে বিনিয়োগের পরিপন্থী এবং লগ্নিকারীদের ভাবনায় রাজ্য সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, সেই বার্তা সরকারের উচ্চ স্তরে পৌঁছে দেবে তারা। এমন নয় যে, এ কথা রাজ্য সরকারের অজানা। কিন্তু পড়শি মুলুকের বাণিজ্য দূতের কথায় তা উঠে আসায় সম্ভবত তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে দফতর।

অন্য দিকে, ভুটান অনেক খাদ্যপণ্য, আনাজ ইত্যাদি পশ্চিমবঙ্গ কথা ভারত থেকে আমদানি করে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চাষ ও খাদ্য সুরক্ষায় জোর দেওয়ার কথাও এ দিন বলেন তেনজিন। জানান, আমদানির বিষয়ে ভূটানের নিয়ম এখন অনেক কড়া। যেমন, নিয়ম মেনে চাষ না-হওয়ায় ফালাকাটা থেকে আপাতত লঙ্কা আমদানি বন্ধও রেখেছেন তাঁরা। তবে রাজ্যের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভুটানে বিদেশি পর্যটক টানার যৌথ পরিকল্পনা তৈরির পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

investment Bengal Unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE