ফের পড়ল শেয়ার বাজার। বুধবার সেনসেক্স পিছলে গেল আরও ২০৭.৯১ পয়েন্ট। দিনের শেষে থিতু হল ২৭,০৫৭.৪১ অঙ্কে। ফলে এই নিয়ে টানা তিন দিনের লেনদেনে তার মোট পতন দাঁড়াল ৫৫৫ পয়েন্ট। আর এক সূচক নিফ্টিও ৫৮.৮৫ পয়েন্ট পড়ে থেমেছে ৮,০৯৪.১০ অঙ্কে।
এ দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামও এক ধাক্কায় ৩৫ পয়সা পড়ে গিয়েছে। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬০.৯৫ টাকায়। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এক দিকে শেয়ার বাজারের পতন, অন্য দিকে আমদানিকারীদের মধ্যে ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়া, এই দুইয়ের জেরেই পড়েছে টাকা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মুনাফার টাকা ঘরে তুলতে শেয়ার বিক্রির হিড়িকই মূলত এ দিন বাজারকে টেনে নামিয়েছে। যাতে আবার ইন্ধন জুগিয়েছে বারাক ওবামার দেশে সুদের হার বাড়ানোর সম্ভবনা। কারণ লগ্নিকারীদের আশঙ্কা, মার্কিন মুলুকে বেশি সুদ পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে বিদেশি লগ্নিকারীরা তাদের বিনিয়োগ সে দেশে তুলে নিয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে তখন ভারতে ওই বিনিয়োগে কিছুটা টান পড়তে পারে। তাই এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে হাতের শেয়ার ধরে রাখতে ভরসা পাচ্ছেন না দেশীয় লগ্নিকারীরা। অল্প কিছু মুনাফা দেখলেই তাঁরা সেগুলি বেচে লাভ তুলে নিচ্ছেন।
এর উপর আবার মূল্যবৃদ্ধি ও শিল্পোৎপাদন সূচক দু’টি কোথায় গিয়ে দাঁড়াল, তা জানা যাবে চলতি সপ্তাহেই। ওই দুই সূচকের অবস্থান নেতিবাচক হলে তার বিরূপ প্রভাব শেয়ার বাজারে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। এই অবস্থাও বাজারের সার্বিক পরিবেশকে বেশ কিছুটা অনিশ্চিত করে তুলেছে।
তবে এ নিয়ে তেমন কোনও চিন্তার কারণ নেই বলেই জানিয়েছেন ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ। তাঁর কথায়, “বাজারের এই সংশোধন খুবই স্বভাবিক। এটা তার ভাল স্বাস্থ্যের ইঙ্গিত। শেয়ার বাজার কখনওই নিরবচ্ছিন্ন ভাবে বেড়ে যেতে পারে না। সেটা ঘটলে বরং চিন্তার কারণ থাকত।”
বাজারের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে কমলবাবু বলেন, “মাঝে মধ্যে সংশোধন হবেই। তবে নিট হিসাবে সূচকের গতি উপরের দিকেই থাকবে।” সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, ক্ষুদ্র লগ্নিকারীরা এখন বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন। যে-কারণে ছোট ও মাঝারি মূলধনের সংস্থার শেয়ার দরও বাড়তে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ।
কমলবাবুও এ দিন বলেন, “বড় সংস্থাগুলির অধিকাংশেরই শেয়ার দর সাধারণ লগ্নিকারীদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছে। তাই এখন এই সমস্ত লগ্নিকারী ছোট ও মাঝারি সংস্থার শেয়ারের দিকে নজর দিয়েছেন। এটা অর্থনীতির পক্ষে ভাল লক্ষণ। কারণ এর হাত ধরেই বাজারের সার্বিক ভাবে বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy