নথি: রাজ্য বাজেটের আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাজেট নথি হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। মাঝে মুখ্যসচিব মলয় দে। ধর্মতলায় ধর্নামঞ্চের পিছনে। নিজস্ব চিত্র
ভোট বছরে বাজেটে কল্পতরু হয়েছে কেন্দ্র। এ বার যথাসম্ভব ঝুলি উপুড় করল রাজ্যও। যদিও কেন্দ্রের মতো এই বাজেট অন্তর্বর্তী ছিল না।
সোমবার রাজ্য বাজেটে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানালেন রাজ্যের ৫০ হাজার কর্মহীনকে এককালীন এক লক্ষ টাকা করে সাহায্য দেওয়ার কথা। বললেন ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের কথাও। যদিও কী শর্তে, কেন এই সাহায্য দেওয়া হবে, কীসের ভিত্তিতে তাঁদের বাছা হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। অর্থমন্ত্রীর দাবি, স্বচ্ছতার সঙ্গেই উপভোক্তাদের বাছাই করা হবে।
অঙ্গনওয়াড়ি বা আশা কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধি, চুক্তিতে নিযুক্ত গ্রুপ-সি, ডি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতির কথা বাজেটে বলা হলেও রাজ্য আগেই ঘোষণা করেছে।
হাত খুলে
• রাজ্যের ৫০ হাজার কর্মহীন যুবক-যুবতীকে এক লক্ষ টাকা করে এককালীন আর্থিক সহায়তা। বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকা।
• উল্লেখ করা হল আগেই ঘোষিত ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের কথা। যাতে বলা হয়েছে, চাষিদের অ্যাকাউন্টে বছরে ৫,০০০ টাকা করে জমা পড়বে।
• উল্লেখ রয়েছে আগে বলা বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির কথাও।
আয়ের উৎস
• ২০১৮-১৯ সালের সংশোধিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ১,৫২,৬২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮৮,৩৯২ কোটিই এসেছে কেন্দ্রীয় করের ভাগ কিংবা অনুদান থেকে।
• জিএসটি বাবদ আয়ের অনুমান ছিল ১৩,০৯৪
কোটি টাকা। হয়েছে ২৭,১৭৩ কোটি।
• বেশির ভাগ সময় পেট্রল-ডিজেলের চড়া দর থাকায় মোটা টাকা এসেছে তার বিক্রয় কর খাতে।
হিসেব বলছে, পরিকাঠামো, শিল্প, সামাজিক ক্ষেত্রে বিশেষ নতুন প্রকল্প না থাকলেও রাজ্যের খরচের বহর কমেনি। আর আয়ের মোটা অংশ এসেছে কেন্দ্রের কাছে প্রাপ্য করের ভাগ ও অনুদান থেকে। জিএসটি বাবদ আয়ও প্রত্যাশার থেকে অনেক বেশি। পেট্রল-ডিজেলের বিক্রয় কর থেকে এসেছে ৭,৩৯০ কোটি টাকা। অর্থ দফতরের কর্তাদের দাবি, প্রতি লিটার তেলে এক টাকা ছাড় না দিলে রোজগার আরও বাড়ত।
বাজেট পেশের আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক বসেছিল ধর্মতলার মঞ্চের পিছনে। সেই মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্য বাজেটের বেশির ভাগ অংশজুড়ে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের সাফল্যের কথা জানানো হয়েছে। তবে কোনও ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম পর্যন্ত উল্লেখ করেনি রাজ্য। প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনাকে রাজ্য বাজেটেও বাংলা সড়ক যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনাকে বাংলা আবাস যোজনা বলা হয়েছে।
খরচের পাশাপাশি আয় বাড়ায় রাজস্ব ঘাটতি কমাতে সক্ষম হয়েছেন অমিতবাবু। ২০১৬-১৭ সালে যেখানে বছরে ১৬ হাজার কোটির বেশি রাজস্ব ঘাটতি ছিল, তা ২০১৮-১৯ সালে সাড়ে ৭ হাজার কোটিতে দাঁড়াতে পারে বলে বাজেটে দাবি। অর্থমন্ত্রী জানান, এ বছর ৪৯ হাজার কোটি টাকা ধার শোধ করতে হয়েছে। শুরু হয়েছে বাম জমানায় নেওয়া ঋণের আসল শোধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy