এক সপ্তাহেই বৃদ্ধি হাজার পয়েন্ট। নিট হিসাবে গত সপ্তাহে সেনসেক্স বেড়েছে ১১৮৮.১২ পয়েন্ট। দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বাজার। সোমবারও সেনসেক্সের উত্থান ১৮৩.৭৫ পয়েন্ট, যার জেরে সূচক ২৫,৫৮০.২১ অঙ্কে বন্ধ হয়ে ফের ছুঁয়েছে নতুন উচ্চতা। শেয়ার কেনার হিড়িকে বাজারে লেনদেন হওয়া ৩১০০টি শেয়ারের মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩০০টিরই।
নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রস্তাবিত আর্থিক কর্মসূচি লগ্নিকারীদের উৎসাহিত করেছে। এর প্রভাবই শেয়ার বাজারে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ দিন সূচকের উত্থানের পিছনেও ওই কারণটিই বিশেষ ভাবে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
শেয়ার বাজার যে-গতিতে চাঙ্গা হচ্ছে, তার পিছনে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, চলতি বছরে এ পর্যন্ত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি ভারতের বাজারে ১ লক্ষ কোটি টাকার উপর বিনিয়োগ করেছে। এর জেরে শুধু যে শেয়ার দর বাড়ছে, তাই নয়। পাশাপাশি বেড়েছে টাকার দামও। কারণ, ওই সব সংস্থা বিদেশ থেকে ডলার নিয়ে এসে তা টাকায় রূপান্তরিত করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে। এর ফলে ভারতের বাজারে ডলারের জোগান বেড়ে গিয়েছে। জোগান এবং চাহিদার স্বাভাবিক নিয়ম মেনে তাই বেড়ে গিয়েছে ডলারে টাকার দামও।
এই দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম বেড়েছে ১৬ পয়সা। যার ফলে দিনের শেষে প্রতি ডলারের দাম এসে ঠেকেছে ৫৯.১৭ টাকায়।
সূচকের উত্থান ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা এখন কম বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সূচক দ্রুত ৩০ হাজারের ঘর ছোঁবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের মনে। বাজার বিশেষজ্ঞ এবং ক্যলকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক বলেন, “৩০ হাজার কেন, সেনসেক্স এখন যতটা উঠেছে, তার যৌক্তিকতা নিয়েও আমার প্রশ্ন রয়েছে। নতুন সরকার এখন শুধু সুবিধা দেওয়ার কথা বলছে। এর পর যখন নেওয়ার কথা বলবে, তার প্রতিক্রিয়া বাজারে কী হবে, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে।” তিনি জানান, এটা সকলের মনে রাখা দরকার, সরকার জনসাধারণকে কিছু দিলে, তার রসদের ব্যবস্থা তাদের কাছ থেকেই করবে তারা।
কৌশিকের সঙ্গে একই মত প্রকাশ করেছেন স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ এবং বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজিত খান্ডেলওয়াল। এঁরা দুজনেই মনে করেন, “এ বারের বাজেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকার বাজেটে কী কী পদক্ষেপ করে, তার উপর শেয়ার বাজারের গতিপ্রকৃতি অনেকটাই নির্ভর করবে। পাশাপাশি এটা মনে রাখা দরকার, এ বার কিন্তু বর্ষা কেমন হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।”
কৌশিক মনে করেন, বর্তমানে অনেক সংস্থার শেয়ার দরই এমন জায়গায় উঠে গিয়েছে, যার পিছনে কোনও যুক্তি খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
প্রকৃতপক্ষে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে প্রায় সকলেরই মত, শেয়ার বাজারে এখন বড় ধরনের একটা সংশোধন বা ‘কারেকশন’ হওয়া দরকার। বাজারকে শক্ত জমির উপর দাঁড় করাতে এটা অত্যন্ত জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy