আথেন্সে পার্লামেন্টের সামনে জন-বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স।
ঋণের বোঝায় ঘোরতর সঙ্কটে পড়া গ্রিস তার ঋণের মেয়াদ ছ’মাস পর্যন্ত বাড়ানোর আবেদন জানাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে। এই লক্ষ্যে আগামী কালই ঋণদাতাদের কাছে প্রস্তাব পেশ করবে তারা। তবে ব্যয় সঙ্কোচ এড়াতে ত্রাণ প্রকল্প সম্প্রসারণের ব্যাপারে এখনও নারাজ গ্রিস। তবে এ ব্যাপারে ইউরোপের সঙ্গে আলোচনা যাতে ভেস্তে না-যায়, সেই চেষ্টাও তারা চালাবে বলে বুধবার জানিয়েছে।
মূল ঋণদাতা জার্মানির অবশ্য এ ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তারা কড়া ভাষায় জানিয়েছে, ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব মানা তাদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। জার্মান অর্থ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, ঋণের মেয়াদ বাড়িয়ে নিলেই খরচ কমানোর দায় থেকে অব্যাহতি পাবে না গ্রিস। অথচ এ দিনও সরকারের মুখপাত্র গ্যাভরিল সাকেলারিদিস বলেন, ত্রাণ চুক্তি বহাল রাখলেও আর খরচ কমাতে ও কর বাড়াতে সরতে চান তাঁরা।
পাশাপাশি মার্কিন অর্থ সচিব জ্যাক লিউ দ্রুত এই সমস্যার সমাধানে গঠনমূলক পদক্ষেপ করতে এ দিন গ্রিসের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। গ্রিসের অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকনিস-কে তিনি বলেন, এই অচলাবস্থা ইউরোপের পক্ষে ভাল লক্ষণ নয়। তিনি ঋণদাতাদের সঙ্গে রফায় আসতে বলেছেন গ্রিসকে। অন্য দিকে আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ হুমকি দিয়েছে, ত্রাণ প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে গ্রিসের অর্থনীতি ফের তলিয়ে যেতে পারে মন্দায়।
জার্মানি জানিয়েছে, গ্রিস সরকারের উচিত তাদের ২৪,০০০ কোটি ইউরোর (প্রায় ১৭ লক্ষ কোটি টাকা) ত্রাণ প্রকল্পের মেয়াদ আরও ছ’মাস বাড়ানোর যে-প্রস্তাব ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থমন্ত্রীরা আগেই দিয়েছিলেন, তা মেনে নেওয়া। ওই প্রস্তাব সম্প্রতি ফিরিয়েছে গ্রিস, কারণ জন-বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যয়সঙ্কোচ কর্মসূচি থেকে সরতে চায় সে দেশের নয়া বাম সরকার। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আইএমএফ নিয়ন্ত্রিত এই ত্রাণ প্রকল্প বহাল রাখার মূল শর্তই সরকারি খরচে রাশ টানা ও চড়া হারে কর বসানো।
জার্মানির মতে ত্রাণ প্রকল্প ও ঋণ চুক্তি দু’টিই গ্রিসের সার্বিক আর্থিক সংস্কার কর্মসূচির অন্তর্গত। তাই দু’টিকে আলাদা করা যায় না। ত্রাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ ২৮ ফেব্রুয়ারি। আর তা সম্প্রসারণের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে শুক্রবারের মধ্যে। ঋণের মেয়াদ না-বাড়ানোর ব্যাপারে জার্মানি এককাট্টা থাকলে গ্রিসকে ১৯ রাষ্ট্রের ইউরোপীয় অঞ্চল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হতে পারে বলে আশঙ্কা। ত্রাণ প্রকল্প শেষ হলে গ্রিসের হাতে ঋণ মেটানোর মতো অর্থ থাকবে না।
গ্রিস সরকারের দাবি খরচ কমানোর জেরে বেকারত্ব ছুঁয়েছে ২৫%। বাম সরকার ক্ষমতায় আসার সময়ে ব্যয়সঙ্কোচ ও চড়া কর তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়। তা থেকে সরলে জনপ্রিয়তা হারাতে হবে বলেই শঙ্কিত নয়া সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy