উষ্ণায়নের পাশাপাশি উধাও বৃষ্টি। আর বৃষ্টির অভাবে উত্তরবঙ্গ ও অসমে খরার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় মরসুমের গোড়াতেই ধাক্কা খেয়েছে চা উৎপাদন। উৎপাদন কমায় ইতিমধ্যেই রফতানি বাজারের একটা অংশ হারিয়েছে দার্জিলিং চা। প্রাকৃতিক অবস্থার উন্নতি না-হলে এ বার চা উৎপাদন আরও কমবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট শিল্পের।
ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশেষ একটা চা উৎপাদন হয় না। এই সময় রক্ষণাবেক্ষণ ও নতুন মরসুমের জন্য জমি তৈরিতেই ব্যস্ত থাকে বাগানগুলি। ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিএ) দাবি, এ রাজ্যে দার্জিলিং, ডুয়ার্স ও তরাইতে এ বার জানুয়ারি-মার্চের মধ্যে বৃষ্টির ঘাটতি যথাক্রমে ৩৭, ৩৫ ও ৪০%। ওই সময়ে উত্তর অসমে ৪৯% ও দক্ষিণ অসমে ২৫% কম বৃষ্টি হয়েছে। আর বৃষ্টির অভাবে সবচেয়ে ভুগছে দার্জিলিঙের চা। সেখানে চা উৎপাদনের ঘাটতি এখনই ৫০ শতাংশের বেশি। ডুয়ার্স ও তরাইতে তা প্রায় ৩০%।
চা শিল্পের বক্তব্য, এপ্রিল-মে তে যে চা তৈরি হয় তা ‘ফার্স্ট ফ্লাশ’। অসম-ডুয়ার্স-তরাইয়ের চেয়ে দার্জিলিঙের ফাস্ট-ফ্লাশ চায়ের কদর অনেক বেশি। বিশেষত রফতানি বাজারে সেই চায়ের চাহিদা সর্বাধিক। বৃষ্টির উপর নির্ভর করে এর পর সাধারণত মে মাসের শেষের দিক থেকে ওঠে ‘সেকেন্ড ফ্লাশ’ চা। ডুয়ার্স-তরাই এবং অসমের ফার্স্ট-ফ্লাশের চেয়ে আবার এই সেকেন্ড-ফ্লাশ চায়ের বাজার ভালো। চা শিল্পের বক্তব্য, এমনিতেই এখন সব জায়গায় ফার্স্ট ফ্লাশ চা উৎপাদন মার খেয়েছে। এই পরিস্থিতি চললে, একই দশা হবে সেকেন্ড ফ্লাশ চা-এও।
উৎপাদন কমলে চায়ের দাম কি বাড়বে? বাড়বে কি চা পানের খরচ? এখনই এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ চা শিল্পমহলের বক্তব্য, এমনিতে কম সময়ের জন্য চায়ের দামের খুব একটা ওঠাপড়া হয় না। তবে গোটাটাই নির্ভর করছে ভবিষ্যতে বৃষ্টি কেমন হয় তার উপর। চায়ের জোগান অনেকটা কমে গেলে অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়মে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
তবে দাম বাড়লেও তাদের ক্ষতি কতটা পোষাবে তা নিয়ে সন্দিগ্ধ চা শিল্প। তাদের দাবি, যে হারে উৎপাদন কমছে, সেই হারে কখনও দাম বাড়তে পারে না। ফলে সার্বিক ভাবে সংস্থার আয় কমারই সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি অনাবৃষ্টির জেরে সেচের খরচ বাড়বে, দাবি আইটিএ-র। উল্লেখ্য, শ্রমিকদের সঙ্গে চা বাগানগুলির বেতন চুক্তি গত ৩১ মার্চ শেষ হয়েছে। নির্বাচন মিটলেই নতুন বেতন হার নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy