আড্ডার মেজাজে দুই বন্ধু। গোপালকৃষ্ণন (বাঁ দিকে) ও নারায়ণমূর্তি। বুধবার বিদায় সম্বর্ধনা শুরুর আগে। ছবি: এএফপি।
তেত্রিশ বছর আগে ছয় বন্ধুর সঙ্গে মিলে পুণেতে ইনফোসিস গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন এন আর নারায়ণমূর্তি। তার মধ্যে পাঁচ জন বিদায় নিয়েছেন আগেই। এ বার বাকি পড়ে থাকা শেষ বন্ধু কৃষ গোপালকৃষ্ণনের পালা। নন্-এগ্জিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর পর্ষদে থাকার মেয়াদ ফুরোচ্ছে শুক্রবার। বুধবার সেই উপলক্ষেই বেঙ্গালুরুতে ইনফোসিসের সদর দফতরে কৃষের বিদায় সম্বর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার পর্ষদ থেকে বিদায় নিচ্ছেন বর্তমানে সংস্থার নন্-এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান নারায়ণমূর্তিও। তবে থাকছেন সাম্মানিক পদে, সংস্থার চেয়ারম্যান এমেরিটাস হিসেবে।
সকলেরই মতে, শুক্রবার দেশের অন্যতম বৃহত্ এই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটির পর্ষদে কার্যত একটি ‘যুগ’-এর অবসান ঘটতে চলেছে। পরিচালনার দায়িত্বে তো রক্ত বদল হয়েছে আগেই। প্রথম বার প্রতিষ্ঠাতাদের বাইরে থেকে সিইও করা হয়েছে। আনা হয়েছে বিশাল সিক্কা-কে। আর এ বার নারায়ণমূর্তি সংস্থার সঙ্গে কিছুটা ‘জড়িত’ থাকলেও, এই প্রথম পরিচালন পর্ষদে আর দেখা যাবে না ইনফোসিসের জন্মদাতাদের কাউকেই।
এর আগে অবশ্য গত ১৪ জুনই যথাক্রমে ইনফোসিসের এগ্জিকিউটিভ চেয়ারম্যান ও এগ্জিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরেছিলেন নারায়ণমূর্তি ও গোপালকৃষ্ণন। সেই সময়েই বলা হয়েছিল যে, দু’জনেই ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পর্ষদে থাকবেন।
তবে মূর্তির ক্ষেত্রে এটা দ্বিতীয় বার সরে যাওয়া। ২০১১ সালে তাঁর অবসরের পরে পায়ের তলার জমি আলগা হয়েছিল ইনফোসিসের। কমছিল মুনাফার হার। বাজারের দখল ছিনিয়ে নিচ্ছিল টিসিএস, কগনিজ্যান্ট, উইপ্রো, এইচসিএল টেকনোলজিসের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরা। এই পরিস্থিতিতে ২০১৩-র মে মাসে অবসর ভেঙে ফিরে সংস্থার রাশ ধরেন ৬৭ বছরের নারায়ণমূর্তি। কিন্তু তাঁর সেই ‘কামব্যাক ইনিংসে’ সংস্থার হাল পুরো ফেরেনি। বরং মাঝের ওই সময়ে সংস্থা ছাড়তে দেখা গিয়েছে বহু শীর্ষ স্তরের কর্তাকে। ফলে অনেকেই মনে করছিলেন, চাপে পড়েছেন নারায়ণমূর্তি। এ দিন সেই প্রসঙ্গও ওঠে। মূর্তির স্পষ্ট জবাব, দ্বিতীয় বার ফিরে আসা নিয়ে কোনও অনুতাপ নেই তাঁর।
অনুষ্ঠানে ছিলেন কে দীনেশ, নন্দন নিলেকানি, শিবুলাল, এন এস রাঘবনের মতো সংস্থার অন্য প্রতিষ্ঠাতারাও। সেখানে কৃষের ইঙ্গিত, ভবিষ্যতে গবেষণা ও নিজস্ব উদ্যোগে কিছু করবেন তিনি।
এ দিন মূর্তি-সহ সকলেই স্মরণ করেছেন তুমুল আনন্দে তাঁদের একসঙ্গে কাজ করার মুহূর্তগুলোকে। বলেছেন, সংস্থা হিসেবে ইনফোসিসের মূল্যবোধ, বিশ্বাস, উদ্ভাবনী ক্ষমতা, গ্রাহকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার কথা। তাঁদের আশা, যে-গতিতে ১৯৯৩ সালের ২৮.৫ কোটি টাকার সংস্থা এখন ২ লক্ষ কোটিতে পৌঁছেছে, তা বহাল থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy