Advertisement
১১ মে ২০২৪

এই প্রথম ২২ হাজার ছুঁল সেনসেক্স

ইতিহাসে এই প্রথম ২২ হাজারের ঘরে ঢুকে পড়ল সেনসেক্স। সোমবার লেনদেন চলাকালীন এক সময় তা পৌঁছে গেল ২২,০২৩.৯৮ পয়েন্টে। যে উচ্চতায় আগে কখনও পৌঁছয়নি বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকটি। দিনের শেষে সেনসেক্স ২২ হাজারের ঘর থেকে নেমে এসেছে ঠিকই। কিন্তু সামান্য। লেনদেন বন্ধের পর থিতু হয়েছে ২১,৯৩৪.৮৩ অঙ্কে। আগের দিনের থেকে যা মাত্র ১৫ পয়েন্ট বেশি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৪ ০২:৫১
Share: Save:

ইতিহাসে এই প্রথম ২২ হাজারের ঘরে ঢুকে পড়ল সেনসেক্স। সোমবার লেনদেন চলাকালীন এক সময় তা পৌঁছে গেল ২২,০২৩.৯৮ পয়েন্টে। যে উচ্চতায় আগে কখনও পৌঁছয়নি বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সূচকটি।

দিনের শেষে সেনসেক্স ২২ হাজারের ঘর থেকে নেমে এসেছে ঠিকই। কিন্তু সামান্য। লেনদেন বন্ধের পর থিতু হয়েছে ২১,৯৩৪.৮৩ অঙ্কে। আগের দিনের থেকে যা মাত্র ১৫ পয়েন্ট বেশি। তবে বাজার বন্ধের সময়ের হিসেবে নতুন রেকর্ড। একই ভাবে এ দিন লেনদেন চলাকালীন নিজের ইতিহাসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে উঠে গিয়েছিল ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টি-ও। পৌঁছে গিয়েছিল ৬,৫৬২.২০ পয়েন্টে। দিনের শেষে অবশ্য সেনসেক্সের মতোই তা সামান্য নেমে দাঁড়িয়েছে বাজার বন্ধকালীন রেকর্ড, ৬,৫৩৭.২৫ অঙ্কে।

ভোট যতপূর্বাভাসই ভুল প্রমাণ করে তত দ্রুত পারদ চড়ছে সেনসেক্সের। মাত্র গত পাঁচ দিনের লেনদেনেই তা উঠেছে ৯৮৮ পয়েন্ট। সঙ্গের সারণি থেকেও স্পষ্ট যে, গত ২৮ অগষ্টও যে সেনসেক্স ১৭ হাজারের ঘরে ছিল, মাত্র এই ক’মাসে তা হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছে ২২ হাজারের ঘরে। শুধু তা-ই নয়, এ দিন ২২ হাজারের মতো ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেই তা দুদ্দাড় বেগে নীচে নেমে আসেনি। বরং কিছুটা নেমে ফের মুখ তুলেছে উপরের দিকে। যেন লগ্নিকারীরা কিছুটা বিশ্বাসী হয়েই ফের শেয়ার কিনছেন। ফলে দিনের একেবারে শেষ দিকে ফের সেই ২২ হাজারের দিকেই মুখ তুলছে সেনসেক্স।

সত্যিই সেনসেক্স এখন ২২ হাজারের ঘরে থিতু হতে পারবে কিনা, তার উত্তর দেবে সময়ই। কিন্তু এই উত্থানে সাধারণ লগ্নিকারীদের বিভ্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ তাঁদের মতে, বাজার বা অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলির তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাজার উঠছে মূলত বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার কেনার উৎসাহে ভর করে। যাদের দৃঢ় বিশ্বাস যে, ভোটের পর কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে স্থায়ী সরকার তৈরি হতে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের হাওয়া দেখে তাদের ধারণা, মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি একক ভাবেই যে আসন পাবে, তা কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার গঠনে সহায়ক হবে। আর এই আশায় ভর করেই এ দেশের বাজারে ডলার ঢালছে তারা। যার দৌলতে ডলারের সাপেক্ষে বাড়ছে টাকার দামও।

আর ঠিক এই কারণেই এই উত্থানের স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত যেখানে সূচক তরতরিয়ে উঠলেও বহু ভাল সংস্থার শেয়ার দরের নড়াচড়া তেমন নেই। বাজার উঠছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগের আওতায় থাকা গুটিকয় ওজনদার শেয়ারে ভর করে।

শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “প্রায় কোনও শিল্পেরই অবস্থা ভাল নয়। অথচ কিছু শেয়ারের লেনদেনের জোরে সূচকের উত্থানের প্রভাব অন্য শেয়ারের উপরও কিছুটা পড়ছে। কিছুটা দাম বাড়ছে তাদের। কিন্তু তা দেখে সাধারণ ছোট লগ্নিকারীরা টাকা ঢাললে, হাত পোড়ার সম্ভাবনা আছে।”

ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের আশঙ্কা, “কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার হবে, এই আশায় বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি বিনিয়োগের বহর বাড়িয়েছে। কিন্তু এতে বড় ঝুঁকি রয়েছে। কারণ বাস্তবে তা না-ঘটলে, তখন বিপদ। কোনও কারণে সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিলে, তখন চটজলদি বিনিয়োগ তুলে নিতে পারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি।” ফলে শুধু সূচকের উত্থানে বিভ্রান্ত না-হয়ে সমঝে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sensex nifty index
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE