Advertisement
E-Paper

কর্মী অসন্তোষের জেরে টয়োটার বেঙ্গালুরু কারখানায় লকআউট

বেতন সংশোধন-সহ কর্মী ইউনিয়নের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে দীর্ঘ দশ মাস ধরে আলোচনা। কর্মী-কর্তৃপক্ষের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রফাসূত্র না-মেলায় কর্নাটক সরকারের মধ্যস্থতায় সাত-সাত বারের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। কিন্তু কাজ হল না কোনও কিছুতেই। শেষ পর্যন্ত শ্রমিক অসন্তোষের অভিযোগে রবিবার তাদের বেঙ্গালুরু কারখানা আপাতত বন্ধ (লকআউট) করার কথা জানাল টয়োটা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০২:১৭
আপাতত বন্ধ কারখানা। সোমবার বেঙ্গালুরুতে। ছবি: এপি।

আপাতত বন্ধ কারখানা। সোমবার বেঙ্গালুরুতে। ছবি: এপি।

বেতন সংশোধন-সহ কর্মী ইউনিয়নের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে দীর্ঘ দশ মাস ধরে আলোচনা। কর্মী-কর্তৃপক্ষের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে রফাসূত্র না-মেলায় কর্নাটক সরকারের মধ্যস্থতায় সাত-সাত বারের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। কিন্তু কাজ হল না কোনও কিছুতেই। শেষ পর্যন্ত শ্রমিক অসন্তোষের অভিযোগে রবিবার তাদের বেঙ্গালুরু কারখানা আপাতত বন্ধ (লকআউট) করার কথা জানাল টয়োটা।

জাপানি গাড়ি সংস্থাটির (যার ভারতীয় শাখা টয়োটা কির্লোস্কর মোটর) অভিযোগ, ইউনিয়নের প্ররোচনায় কারখানার কর্মীদের একাংশ ইচ্ছাকৃত ভাবেই গত ২৫ দিন ধরে গাড়ি তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করছিলেন। দুর্ব্যবহার করছিলেন সুপার-ভাইজারদের সঙ্গে। দিচ্ছিলেন হুমকিও। এই অবস্থায় লকআউট ঘোষণা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না বলেই সংস্থাটির দাবি।

অবশ্য এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে কর্মী সংগঠনের দাবি, কারখানার দু’টি অ্যাসেম্বলি লাইনে মোট ৪,২০০ জন কর্মী রয়েছেন, যাঁরা ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত। লকআউট প্রযোজ্য শুধু এই সমস্ত কর্মীর জন্যই। কারণ, এঁদের ছাড়াও কারখানায় ১,৫০০ ঠিকা শ্রমিক রয়েছেন। আছেন ম্যানেজাররাও। আর এঁদের দিয়ে আসলে গাড়ি তৈরি বহাল রেখেছে টয়োটা। ইউনিয়নের পাল্টা অভিযোগ, তাঁরা যে হারে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন, সংস্থা আগে তা মেনে নিলেও পরে দিতে চাইছে না। সমস্যা মেটাতে দ্রুত কর্নাটক সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করছে তারা। শ্রমিক অসন্তোষকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন কারখানা বন্ধ ছিল মারুতি সুজুকি-রও। সেই গোলমালে সংস্থার এক পদস্থ কর্তার মৃত্যু হয়। জখমও হন অনেকে। ক্ষতির অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

বেঙ্গালুরুর কারখানায় দু’টি অ্যাসেম্বলি লাইনে গাড়ি তৈরি করে টয়োটা। দু’টিই বন্ধের নোটিস দিয়েছে সংস্থা। প্রথমটি চালু হয়েছিল ১৯৯৯-এ। সেখানে বছরে এক লক্ষ গাড়ি তৈরি হয়। আর ২০১০ সালে চালু হওয়া দ্বিতীয়টির উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ২.১০ লক্ষ। কর্মী সংখ্যা সব মিলিয়ে ৬,৪০০-রও বেশি।

টোকিও থেকে টয়োটার মুখপাত্র নাওকি সুমিনো জানিয়েছেন, কারখানা বন্ধ থাকায় দিনে প্রায় ৭০০টি গাড়ি কম তৈরি হবে। ফলে শঙ্কিত ডিলাররাও। আপাতত বেশ কিছু দিনের গাড়ি মজুত থাকলেও, তাঁদের আশঙ্কা, কারখানা দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকলে জোগানের সমস্যা হবে। ভারতে সংস্থার এক মুখপাত্র অবশ্য পরে জানান, মঙ্গলবারই কর্নাটক সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। সেখানে রফাসূত্র বেরোনো নিয়েও তাঁরা আশাবাদী।

এ দেশে গাড়ি নির্মাতাদের সংগঠন সিয়াম-এর তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে ওই কারখানায় ১০,০৩৯টি গাড়ি তৈরি করেছিল টয়োটা। ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪-র ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তৈরি হয়েছে ১ লক্ষ ৪৬ হাজার গাড়ি। কিন্তু গত বছর টয়োটার বিশ্বজোড়া ব্যবসায় ভারতের অংশীদারি ছিল মাত্র ১.৬%। আর দেশের গাড়ি বাজারে ৪.৫%।

উল্লেখ্য, মাস দুয়েক আগে সামাজিক অসন্তোষের কারণে তাইল্যান্ডে নিজেদের লগ্নি পুনর্বিবেচনার কথা জানিয়েছিল টয়োটা। আবার সপ্তাহ খানেক আগেই জাপানি কর্মীদের বেতন রেকর্ড পরিমাণ (২১ বছরে সর্বাধিক) বাড়িয়েছে তারা। এ সবের পর এ বার ভারতের কারখানায় লকআউটই ঘোষণা করল তারা।

toyota labour problem bangalore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy