Advertisement
০২ মে ২০২৪

কলকাতা-কাঠমান্ডু আরও উড়ান

আরও কাছাকাছি আসছে কলকাতা আর কাঠমান্ডু। দু’দেশের দু’শহরের নৈকট্য বাড়ছে বাড়তি উড়ানের দৌলতে। এত দিন দু’শহরের মধ্যে সরাসরি উড়ান ছিল চাহিদার তুলনায় কম। সপ্তাহে সাকুল্যে চার দিন, এয়ার ইন্ডিয়া। আসন না- পেয়ে কলকাতার বহু যাত্রীকে ঘুরিয়ে নাক ধরতে হতো। জরুরি কাজেও দিল্লি ঘুরে কাঠমান্ডু যেতে হতো।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৪ ০২:১৬
Share: Save:

আরও কাছাকাছি আসছে কলকাতা আর কাঠমান্ডু। দু’দেশের দু’শহরের নৈকট্য বাড়ছে বাড়তি উড়ানের দৌলতে।

এত দিন দু’শহরের মধ্যে সরাসরি উড়ান ছিল চাহিদার তুলনায় কম। সপ্তাহে সাকুল্যে চার দিন, এয়ার ইন্ডিয়া। আসন না- পেয়ে কলকাতার বহু যাত্রীকে ঘুরিয়ে নাক ধরতে হতো। জরুরি কাজেও দিল্লি ঘুরে কাঠমান্ডু যেতে হতো। ফেরার সময়েও দিল্লি ছুঁয়ে কলকাতা আসা ছাড়া উপায় থাকত না অনেকের। এ বার কিছুটা সুরাহার আশা দেখা দিয়েছে। ১৬ জুলাই থেকে স্পাইসজেট ঢুকছে কলকাতা-কাঠমান্ডু রুটে, সপ্তাহে তিন দিনের উড়ানসূচি নিয়ে।

এবং তার সুবাদে বাগডোগরা তথা শিলিগুড়িও বিমান-সূত্রে জুড়ে যাচ্ছে কাঠমান্ডুর সঙ্গে। কী রকম?

কারণ, স্পাইসজেটের উড়ানের রুটটি আদতে কলকাতা-কাঠমান্ডু-বাগডোগরা-কাঠমান্ডু-কলকাতা। দুপুরে সেটি কলকাতা থেকে ছেড়ে কাঠমান্ডু যাবে। সেখান থেকে বাগডোগরা ঘুরে আবার কাঠমান্ডু ফিরবে। তার পরে উড়ে আসবে কলকাতায়। প্রসঙ্গত, বাগডোগরায় আপাতত একটাই আন্তর্জাতিক উড়ান ভুটানের পারো থেকে বাগডোগরা ঘুরে ব্যাঙ্কক। সপ্তাহে দু’দিন সেটি যাতায়াত করে। স্পাইসজেট চালু হলে আর একটা আন্তর্জাতিক উড়ান পাবে বাগডোগরা।

ব্যবসার তাগিদে, এমনকী বিনোদনের খাতিরেও বেশ কিছু লোক নিয়মিত কলকাতা থেকে নেপালে আসা-যাওয়া করেন। কাঠমান্ডু উড়ানের সংখ্যা বাড়ায় এঁদের পাশাপাশি সাধারণ পর্যটকদেরও সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির কথায়, “অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে নেপালে বেড়াতে যেতে চান। গোয়া-ম্যাকাওয়ে যেমন পর্যটন-বিনোদনের আকর্ষণীয় সব প্যাকেজ, নেপালে তেমন চালু হলে কাঠমান্ডু ফ্লাইটগুলো নিঃসন্দেহে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।” কলকাতার অনেকে আবার ক্যাসিনো খেলার জন্য নিয়মিত কাঠমান্ডু গিয়ে থাকেন। এঁদের এক জনের মন্তব্য, “দিল্লি ঘুরে যাওয়াটা অনেক ঝক্কির। এ বার হয়তো ঝামেলা কমবে।”

কাঠমান্ডু-বাগডোগরা উড়ান চালুর খবরে উত্তরবঙ্গের বণিকমহলও খুশি। সেখানকার এক বণিক সংগঠনের তরফে বিশ্বজিৎ দাসের প্রতিক্রিয়া, “বিস্কুট থেকে যন্ত্রাংশ সবই তো এখান থেকে কাঠমান্ডু নিয়ে যেতে হয়। ডিরেক্ট ফ্লাইট চালু হলে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি উত্তর-পূর্বের ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন।” কলকাতা তথা পূর্ব ভারতের ব্যবসায়ীরাও উৎসাহিত। বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট কল্লোল দত্ত জানাচ্ছেন, বেশ কিছু বহুজাতিকের উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে নেপালে। তাদের অফিসার-কর্মীরা ওখানে নিয়মিত যাতায়াত করেন। উপরন্তু চা থেকে লুব্রিক্যান্ট বহু কিছুর জন্য নেপাল ভারতের উপরে নির্ভরশীল। ফলে ব্যবসায়ীদেরও যাতায়াত করতে হয়। উড়ান বাড়লে ব্যবসাও বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন। আর বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কল্যাণকিশোর ভৌমিক বলছেন, “ঐতিহাসিক ঘটনা! অনেক পর্যটক এখান থেকে সড়কপথে বিরাটনগর গিয়ে কাঠমান্ডুুর উড়ান ধরেন। বাগডোগরা-কাঠমান্ডু চালু হলে শিলিগুড়িতেও পর্যটক বাড়বে।”

সম্ভাব্য পর্যটকদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে কল্যাণবাবুরা রাজ্য সরকারের সাহায্য চেয়েছেন। সরকার কী ভাবছে?

রাজ্যের পরিবহণ-সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কুড়ি আসনের বাস কেনা হচ্ছে। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে এই বাস-পরিষেবা চালু হবে। যাত্রী নিয়ে সেগুলো দার্জিলিং-গ্যাংটক পাড়ি দেবে। পাহাড়ি পথে যাতে সহজে

চলাচল করতে পারে,তাই ছোট বাস কেনা হচ্ছে।

এ দিকে এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রের খবর, সপ্তাহে চারটি কাঠমান্ডু উড়ানে তারা ৮০ শতাংশের বেশি যাত্রী পাচ্ছে। তা হলে তারা এই রুটে উড়ান বাড়াচ্ছে না কেন?

এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রের ব্যাখ্যা, বিমানের অভাবেই উড়ান বাড়ানো যাচ্ছে না। অন্য দিকে স্পাইসজেটের তরফে জানানো হয়েছে, ১৬ জুলাই-ই তারা কলকাতা-বাগডোগরা সরাসরি আর একটা উড়ান চালু করবে। সেটা সপ্তাহে প্রতি দিন দুপুরে বাগডোগরা গিয়ে সন্ধ্যায় কলকাতা ফিরবে। বাগডোগরায় এখন রাতে বিমান ওঠা-নামারও সুবিধা হয়েছে। “আমরা চাইছি, ওখানে রাতেও যাত্রী-উড়ান শুরু হোক।” বলছেন আলাপনবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sunanda ghosh new flight to bagfogra to kathmandu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE