Advertisement
E-Paper

দামের অস্ত্রে ফের শুরু আকাশ দখলের লড়াই

চমকে দেওয়ার মতো কম ভাড়ার অস্ত্রেই ভারতে আকাশ দখলের যুদ্ধে ঝাঁপাল টাটা-এয়ার এশিয়া। শুক্রবার চেন্নাইয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার সিইও মিত্তু চান্ডিল্য জানালেন, আগামী ১২ জুন তাঁদের যে প্রথম উড়ান বেঙ্গালুরু থেকে গোয়া যাবে, তার টিকিট কাটতে খরচ হবে মাত্র ৯৯০ টাকা!

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৪ ০২:৫২

চমকে দেওয়ার মতো কম ভাড়ার অস্ত্রেই ভারতে আকাশ দখলের যুদ্ধে ঝাঁপাল টাটা-এয়ার এশিয়া। শুক্রবার চেন্নাইয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার সিইও মিত্তু চান্ডিল্য জানালেন, আগামী ১২ জুন তাঁদের যে প্রথম উড়ান বেঙ্গালুরু থেকে গোয়া যাবে, তার টিকিট কাটতে খরচ হবে মাত্র ৯৯০ টাকা! এ দিন রাত সাড়ে ন’টায় অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরুও করেছে তারা।

তবে দেশের আকাশে ডানা মেলতে চলা সংস্থাটির টিকিট বাজারে আসার আগে এ দিনই সন্ধ্যায় ওই একই রুটে (বেঙ্গালুরু-গোয়া) টিকিটের দাম কমিয়েছে স্পাইসজেট। দাম শুরু হচ্ছে ২,০৫৮ টাকা থেকে। তা-ও কিনা ১২ জুন ও তার পরের টিকিট। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, বিপদের গন্ধ পেয়েই বাজারের দখল ধরে রাখতে দামের লড়াইয়ে ঝাঁপাতে বাধ্য হয়েছে তারা। আগামী দিনে এই একই পথে হাঁটতে বাধ্য হবে ইন্ডিগো-সহ অন্য অনেক বিমান পরিষেবা সংস্থা। অর্থাৎ, টাটা-এয়ার এশিয়া মাঠে নামতেই ফের দামের লড়াই শুরু হচ্ছে আকাশে। আগামী দিনে সংস্থা অন্যান্য রুটেও উড়ান চালু করলে, যা আরও তীব্র হতে পারে।

কিন্তু একই সঙ্গে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে প্রশ্নও। অনেকেই মনে করেন, এখন বিমান জ্বালানি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক যা খরচ, তাতে এই ভাড়ায় টিকিট বেচলে ব্যবসা লাটে ওঠার কথা। ফলে তাঁদের প্রশ্ন, সত্যিই কি এ ধরনের ভাড়ায় দীর্ঘ মেয়াদে পরিষেবা চালিয়ে যেতে পারবে নতুন সংস্থা? না কি প্রথম পা রাখার পর এ শুধু তাদের বাজার ধরার কৌশল? বিশেষত যেখানে এখন উড়ান খরচের প্রায় ৬০% যায় জ্বালানির পিছনে। আর টাকার তুলনায় ডলারের দাম বাড়ার পর খরচ মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি।

কিন্তু এই যুক্তি মানতে নারাজ ক্যাপ্টেন গোপীনাথ। শুক্রবার বেঙ্গালুরু থেকে ফোনে ভারতে সস্তার উড়ান পরিষেবা চালুর ক্ষেত্রে এই পথিকৃতের দাবি, “আজকের দিনেও সস্তায় টিকিট বিক্রি সম্ভব। কারণ, তাতে আরও বেশি সংখ্যক সাধারণ মানুষ বিমানে চড়বেন। লাভবান হবে বিমান সংস্থাগুলি।”

গোপীনাথের যুক্তি, ভাড়া কম থাকলে, প্রায় সব দিনের সব সময়ের সমস্ত উড়ানেই সিট তেমন খালি থাকবে না। ফলে সেখান থেকে খরচ তুলে নিতে পারবে সংস্থাটি। তিনি বলেন, ভারতে উড়ানগুলিতে যাত্রী হয় গড়ে ৭০%। ফলে, উড়ানের খরচও তুলতে হয় তাঁদের কাছ থেকেই। কিন্তু সেখানে উড়ান ১০০% যাত্রী বোঝাই হলে, মাথা-পিছু খরচ কমবে। ফলে কমবে টিকিটের দরও। বরং তখন ওই একই পথে হাঁটতে বাধ্য হবে বাকি সংস্থাগুলি। তাঁর কথাকে সত্যি প্রমাণ করে এ দিনই টিকিটের দর কমিয়েছে স্পাইসজেট। ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির অনুমান, শনিবার থেকে দাম কমাবে ইন্ডিগোও।

সফল সস্তার উড়ানের উদাহরণ হিসেবে গোপীনাথ বলছেন রায়ন এয়ারের কথা। সস্তার টিকিট বিক্রি করেও বছরের পর বছর সফল ভাবে ব্যবসা করছে এই ইউরোপীয় সংস্থা। এই মূহূর্তে হাতে ৩০০ বিমান। প্রতি বছর তাতে চড়েন প্রায় ৮ কোটি মানুষ। তাঁদের মধ্যে আড়াই কোটি কার্যত বিনি পয়সায় (শুধু কর দিয়ে)। গোপীনাথের কথায়, “রায়ন টিকে গেলে, টাটা-এয়ার এশিয়া পারবে না কেন?”

শুধু তা-ই নয়, অধুনালুপ্ত এয়ার ডেকানের প্রতিষ্ঠাতা গোপীনাথ মনে করেন, সস্তায় টিকিট বিক্রি করে প্রথম কয়েক বছর যদি এয়ার এশিয়ার ক্ষতিও হয়, তবুও ব্যবসার জমি ছাড়বেন না কর্ণধার টনি ফার্নান্ডেজ। পকেটের সেই জোর ওই যৌথ উদ্যোগের রয়েছে। এবং তা এতটাই যে, এই ভাড়া নিয়েও অন্তত পাঁচ বছর উড়ান চালাতে পারবে তারা। সুতরাং শুধু গোড়ায় চমক দিয়ে রণে ভঙ্গ দেওয়ার বান্দা ফার্নান্ডেজ নন বলেই তাঁর দাবি।

তা ছাড়া, এখন দিল্লি-মুম্বই নয়, নতুন সংস্থার লক্ষ্য দ্বিতীয় শ্রেণির শহর। যেখানে বিমান নামা ও তা দাঁড় করিয়ে রাখার খরচ তুলনায় কম। গোপীনাথের দাবি, খরচ ছাঁটাইয়ের এমন জায়গা খুঁজতে সিদ্ধহস্ত ফার্নান্ডেজ। আর ব্যবসার সেই মডেল অনুসরণ করেই এশিয়ার আকাশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তাঁর সংস্থা।

tata air asia sunanda ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy