Advertisement
০৬ মে ২০২৪

পরিকাঠামোয় বৃদ্ধি ৫ মাসে সর্বোচ্চ

কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াল পরিকাঠামো শিল্প। চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতিও লক্ষ্যমাত্রার অনেক নীচে থাকবে বলে ফের দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কিন্তু অর্থনীতির পক্ষে এই জোড়া সুখবরের মধ্যেও অস্বস্তির কাঁটা হয়ে রইল রাজকোষ ঘাটতি। কারণ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার এক মাস আগেই তা ছাপিয়ে গিয়েছে পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রাকে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৪ ০২:২৬
Share: Save:

কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াল পরিকাঠামো শিল্প। চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতিও লক্ষ্যমাত্রার অনেক নীচে থাকবে বলে ফের দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। কিন্তু অর্থনীতির পক্ষে এই জোড়া সুখবরের মধ্যেও অস্বস্তির কাঁটা হয়ে রইল রাজকোষ ঘাটতি। কারণ সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার এক মাস আগেই তা ছাপিয়ে গিয়েছে পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রাকে।

সোমবার পরিকাঠামো শিল্পে বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। সেখানে দেখা যাচ্ছে, মূলত বিদ্যুৎ, কয়লা, তেল এবং ইস্পাতের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভর করে গত ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে পরিকাঠামো শিল্প। সার, সিমেন্ট, ইস্পাত, বিদ্যুৎ, অশোধিত তেল, কয়লা, তেল শোধন এবং প্রাকৃতিক গ্যাস এই আট ক্ষেত্রকে নিয়ে তৈরি পরিকাঠামো শিল্পের বৃদ্ধির হার পৌঁছেছে ৪.৫ শতাংশে। ঠিক আগের মাস জানুয়ারি (১.৬%) এবং আগের বছরের একই সময়ের (১.৩%) তুলনায় যা অনেকটাই বেশি। গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চও।

পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, পরিকাঠামো শিল্পের এই ঘুরে দাঁড়ানোর পিছনে মূল কারিগর বিদ্যুৎ উৎপাদনের চমকপ্রদ বৃদ্ধি (১০.৪%)। ৪.৮% বেড়েছে ইস্পাত তৈরিও। কয়লা ও অশোধিত তেল উৎপাদনও বেড়েছে যথাক্রমে ০.১% ও ১.৯%। এই দুই ক্ষেত্রের বৃদ্ধি হয়তো তেমন চোখে পড়ার মতো নয়। কিন্তু আগের বার সরাসরি তাদের উৎপাদন কমেছিল ৬.১ ও ৪%। তাই সেখান থেকে তারা অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। সার্বিক শিল্প সূচকে পরিকাঠামো শিল্পের গুরুত্ব প্রায় ৩৮%। তাই পরিকাঠামোর এই ঘুরে দাঁড়ানো শিল্প সূচকেও সদর্থক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

শিল্পমহলের একাংশ অবশ্য মনে করে, পরিকাঠামো কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ঠিকই। তবে তা মূলত বিদ্যুতে ভর করে। বাকি ক্ষেত্রে বৃদ্ধি চোখে পড়ার মতো নয়। সিমেন্টে উৎপাদন বৃদ্ধির হার শ্লথ হয়েছে। আর উৎপাদন সরাসরি কমেই গিয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। তাই তাদের দাবি, পরিস্থিতি বদলাতে কেন্দ্রের পরবর্তী সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে।

অবশ্য অর্থনীতির হাল ফেরাতে বর্তমান সরকার যে যথাসাধ্য করছে, তা প্রমাণে এ দিনও জোরালো সওয়াল করেন চিদম্বরম। তাঁর দাবি, এই অর্থবর্ষের পরিসংখ্যান সামনে এলে দেখা যাবে চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনে ঘাটতি নেমে এসেছে ৩,৫০০ কোটি ডলারে। আগের বারের ৮,৮০০ কোটি ডলারের তুলনায় যা অনেকখানি কম। প্রায় অর্ধেক এ বারের প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ৭,০০০ কোটি ডলারের সাপেক্ষেও।

বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতিতে রাশ টানা নিয়ে অর্থমন্ত্রী আশার কথা শোনালেও, উদ্বেগের কারণ থাকছে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে। কারণ, কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টসের তথ্য মাফিক, এপ্রিল-ফেব্রুয়ারি, এই ১১ মাসে ওই ঘাটতি ৫.৯৯ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। অথচ গত ফেব্রুয়ারির অন্তর্বর্তী বাজেটে কেন্দ্রের দাবি ছিল, অর্থবর্ষ শেষে আগের বারের (৫.৪২ লক্ষ কোটি) থেকে কমে তা হবে ৫.২৫ লক্ষ কোটি। অর্থাৎ, কেন্দ্র যেখানে রাজকোষ ঘাটতি কমার কথা বলেছিল, সেখানে এক মাস বাকি থাকতেই তা ছাপিয়ে গিয়েছে পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

infrastucture economy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE