ঠিক যেন লটারিতে মোটা অঙ্কের টাকা জেতা। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম গত পাঁচ মাসে অর্ধেকে নামায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ভাগ্যে সেটাই ঘটতে চলেছে বলে তাঁরই মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি।
স্রেফ বিনা চেষ্টাতেই ফেব্রুয়ারিতে বাজেট পেশের আগে এই খাতে তিনি রাজকোষে কমপক্ষে ১২০০ কোটি ডলার বা ৭৫ হাজার কোটি টাকা ঢোকাতে পারবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে নীচে নামায় ব্রিটেনের বাজারে উঁচু মানের তেল ব্রেন্ট-এর দাম নেমে এসেছে ব্যরেলে ৬০ ডলারের আশেপাশে। আমেরিকায় অশোধিত তেলের দাম তারও নীচে। ২০০৯ সালের পর থেকে বিশ্ব বাজারে তেল এত নীচে নামায় যে-সমস্ত কারণে জেটলি বাড়তি অর্থ হাতে পাবেন, সেগুলিও চিহ্নিত করেছেন অর্থ মন্ত্রকের অফিসাররা। এই কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
• অশোধিত তেল আমদানির খরচ কমে আসা।
• পেট্রোল-ডিজেলে বাড়তি উৎপাদন শুল্ক।
• ফের আমদানি শুল্ক চালু হওয়ার সম্ভাবনা।
• রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার বাড়তি মুনাফা খাতে আয়।
• দেশে তেলে ভর্তুকি উঠে যাওয়ায় সাশ্রয়।
এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত প্রতিদিন ৪০ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল আমদানি করে। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ১০৫ ডলার ধরলে চলতি ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে তার আমদানি বাবদ ৮৮০০ কোটি ডলার খরচ হওয়ার কথা। গত বাজেটে এই হিসাবই ধরা হয়েছিল। কিন্তু অরুণ জেটলির প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেটের আগাম হিসাব কষতে গিয়ে অফিসাররা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল নেমে আসবে গড়ে ৬৫ থেকে ৭০ ডলারে। ফলে তেল আমদানির খরচ কমতে পারে ১৮০০ কোটি ডলার, যা জাতীয় আয়ের প্রায় ১ শতাংশ। তবে সব কিছু হিসাব করে সাশ্রয়ের অঙ্ক দাঁড়াতে পারে ৭৫ হাজার কোটি টাকা।
ইতিমধ্যেই ডিজেলের দামে নিয়ন্ত্রণ তুলে নিয়েছে মোদী সরকার। পেট্রোল-ডিজেল দু’টি জ্বালানির দামই এখন বাজারের হাতে। ফলে শুধু ভর্তুকি খাতেই জেটলি ৪০ হাজার কোটি টাকা বাঁচাতে পারবেন। প্রসঙ্গত, অশোধিত তেলের দাম কমার হাত ধরে পেট্রোল-ডিজেলের দাম গত ৫ মাসেই কমেছে ৬ শতাংশ।
পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমে আসায় ইতিমধ্যেই এগুলিতে দু’দফায় উৎপাদন শুল্ক বাড়িয়েছে কেন্দ্র। ২০১১ সালে তুলে নেওয়া ৫% আমদানি শুল্কও অর্থমন্ত্রী ফিরিয়ে আনতে পারেন। তিনি সম্ভবত বাজেটে এই ঘোষণা করবেন। তেলের পড়তি দাম রাজকোষ ঘাটতি কমাতে জেটলিকে যথেষ্ট সাহায্য করবে বলেই মনে করছেন অর্থ মন্ত্রকের অফিসাররা। তাঁর লক্ষ্য, এই অর্থবর্ষে তা জাতীয় আয়ের ৪.১ শতাংশে নমিয়ে আনা, ২০১৫-’১৬ সালে ৩.৬ শতাংশে, ২০১৬-’১৭ সালে ৩ শতাংশে। পাশাপাশি, চলতি খাতে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন ঘাটতি নেমে আসার প্রভাবেও রির্জাভ ব্যাঙ্ক সুদ কমাতে পারে। তাই অর্থনীতির চাকাকে জেটলি বিনা পরিশ্রমেই অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে মনে করছে তাঁরই মন্ত্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy