দেশে যত হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ঘটে, তার প্রায় ৩০ শতাংশই খারাপ আবহাওয়ার কারণে। অথচ হেলিপ্যাডগুলিতে সেই আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য জানানোর কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেই। বিশেষত দুর্গম এলাকায়। ফলে বিমানচালক যেমন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের মাধ্যমে সর্বক্ষণ এই সম্পর্কে বিশ্লেষিত তথ্য পেতে থাকেন, সেই সুবিধা হেলিকপ্টার চালকের বরাতে জোটে না। এই সমস্যা মেটাতেই সৌর বিদ্যুৎকে কাজে লাগিয়ে হেলিপ্যাডে আবহাওয়ার তথ্য জানানোর স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা তৈরি করেছে টাটা গোষ্ঠীর সংস্থা নেলকো। মুম্বইয়ে জুহু এবং জম্মুর বৈষ্ণোদেবীতে তা চালুও করেছে তারা। এ বছরই এই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে আরও ১০০টি হেলিপ্যাডে।
বিক্রির পরে গাড়িতে ত্রুটি ধরা পড়লে, তা ফেরানোর ঝক্কি যেমন অনেক, তেমনই খরচও বিস্তর। ফলে সংস্থাগুলির পক্ষে তা মস্ত সমস্যা। এই পরিস্থিতিতে গাড়িতে ত্রুটি কমাতে জাপানি বহুজাতিক নিসানের সঙ্গে যৌথ ভাবে বিশেষ সফটওয়্যার তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছিল টিসিএস। প্রায় আড়াই বছরের চেষ্টায় সাফল্য মেলার পর পেটেন্ট নিয়েছে দুই সংস্থাই।
টাটা স্টিলের ওয়েস্ট বোকারোর খনি থেকে কয়লা তোলার সময় পাওয়া গিয়েছিল পাথরের খাঁজে আটকে থাকা শেল গ্যাস। যা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে লাগিয়ে সেই ক্ষেত্রে কয়লার চাহিদা বেশ কিছুটা কমিয়েছে সংস্থাটি।
তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে দু’কদম এগিয়ে থাকতে অন্যান্য বহুজাতিকের মতোই নিত্যনতুন উদ্ভাবনে বরাবর জোর দিয়ে এসেছে টাটা গোষ্ঠী। নিজেদের সংস্থা ও কর্মীদের এ বিষয়ে উৎসাহ দিতে তাদের নিয়ে ২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছরই ‘টাটা ইনোভিস্টা’ নামে প্রতিযোগিতা আয়োজন করে তারা। যেমন, ২০১৩-’১৪ অর্থবর্ষে চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতায় যে ৪৩টি নতুন উদ্ভাবনী চিন্তা জায়গা করে নিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উপরোক্ত তিন প্রকল্প। উল্লেখ্য, এ বার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে টাটা গোষ্ঠীর ৬০টি সংস্থা মোট ১,৭০০টি নতুন পরিকল্পনার প্রস্তাব পাঠিয়েছিল।
এই প্রথম কলকাতায় প্রতিযোগিতাটির ফল ঘোষণা করল টাটা গোষ্ঠী। সেই উপলক্ষে মঙ্গলবার কর্তাদের দাবি, শেষ পর্যন্ত প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে, বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের আর্থিক সুবিধা হবে গোষ্ঠীর। ২০০৬ থেকে এখনও পর্যন্ত এমন ধরনের প্রায় সাত হাজার নতুন ভাবনা কার্যকর করলেও, এ বারই প্রথম তার মূল্যায়ন কষেছে তারা।
টাটা গোষ্ঠীর হোল্ডিং সংস্থা টাটা সন্সের ‘ব্র্যান্ড কাস্টোডিয়ান’ মুকুন্দ রাজন বলেন, ২০১১-’১২ সালে উদ্ভাবনী কাজে মোট ব্যবসার প্রায় ২.৩% অর্থ বরাদ্দ করলেও, পরের বার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৫%। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, সার্বিক ভাবে ভারতে জাতীয় আয়ের মাত্র ০.৭৬% বিনিয়োগ হয় গবেষণায়।
টাটা সন্সের অন্যতম কর্তা সুনীল সিংহ জানান, জাগুয়ার অ্যান্ড ল্যান্ডরোভার, টাইটান, টাটা গ্লোবাল বেভারেজেস, টিসিএস, টাটা স্টিল, টাটা কেমিক্যালসের মতো সংস্থাগুলি নতুন ভাবনার ক্ষেত্রে অগ্রণী।