শিল্পে খরা। তাই আয়কর আদায় বাড়ছে না যথেষ্ট পরিমাণে। আর সেই কারণেই রাজ্যে কর্মী সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস বা সিবিডিটি)। শুক্রবার এই অভিযোগ তুলল আয়কর দফতরের কর্মী ও অফিসারদের যৌথ সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অব অ্যাকশন।
পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ মিলিয়ে মোট ৭,০২৪ জন কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে ১,৬৩৩ জনকে অন্য অঞ্চলে (রিজিয়ন) বদলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিবিডিটি। সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর ভট্টাচার্যের দাবি, বছর তিনেকের মধ্যেই ওই সব কর্মীকে বদলি করা হবে। তাঁর অভিযোগ, শিল্পে নতুন বিনিয়োগ সে ভাবে না-আসায় আয়কর আদায়ও সন্তোষজনক ভাবে বাড়ছে না। আর সেই কারণেই এই অঞ্চলে কর্মী কমানোর এই সিদ্ধান্ত। পশ্চিমবঙ্গ রিজিয়নের মুখ্য আয়কর কমিশনার গিরিশ পান্ডে অবশ্য জানিয়েছেন, ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরে এই অঞ্চলে আগের বারের তুলনায় আয়কর আদায় বেড়েছে ১১.৫%।
শিল্প না-হলে যে কর আদায়ে টান পড়বে, এ প্রসঙ্গে তা ফের মনে করিয়ে দিয়েছে শিল্পমহলও। এ প্রসঙ্গে বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সের প্রেসিডেন্ট কল্লোল দত্ত বলেন, “শিল্প না-হলে এটাই ভবিতব্য। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র, রাজ্য, কোনও সরকারেরই আয় বাড়বে না। তখন খরচ কমাতে কর্মী সংখ্যা কমানো হবেই।”
শুধু তা-ই নয়। আয়কর আদায় বাড়াতে সম্প্রতি সারা দেশে ২০,৭৫১টি নতুন পদ তৈরি করেছে সিবিডিটি। যা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে দেশে আয়কর দফতরের মোট ১৮টি অঞ্চলের মধ্যে। সেখানেও পশ্চিমবঙ্গের ভাগে পড়েছে মাত্র ৫০টি। উল্লেখ্য, এর আগে ২০০১ সালে সিবিডিটি যখন ১৩ হাজার নতুন পদ তৈরি করেছিল, তখনও পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের বরাতে জুটেছিল ৭০০টি পদ।
ইনকাম ট্যাক্স গেজেটেড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মৃণাল কান্তি চন্দের দাবি, “এমনিতেই গ্রাহক পরিষেবার মান এখনও আশানুরূপ নয়। রিফান্ড পাওয়া-সহ বেশ কিছু বিষয়ে হয়রান হতে হচ্ছে তাঁদের। এ বার তার উপর নতুন করে কর্মী কমানো হলে, সেই পরিষেবার আরও অবনিত হবে।”
একই সঙ্গে ইউনিয়নের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে রাজ্যে আয়কর আদায়ের ক্ষেত্রেও। এমনকী তাঁরা মনে করছেন, এতে কেন্দ্রীয় করের ভাগেও টান পড়বে রাজ্যের। মৃণালবাবু বলেন, “সিবিডিটি নতুন পদের অতি সামান্য অংশ পশ্চিমবঙ্গ রিজিয়নকে দেওয়ায় এখানকার কর্মীদের পদোন্নতি ব্যাহত হবে। ফলে তাঁরা কাজে উৎসাহ হারাতে পারেন।”