টানা পাঁচ দিনের লেনদেনে ৯৮৮ পয়েন্ট ওঠার পর থমকাল শেয়ার বাজার। মঙ্গলবার সেনসেক্স পড়ল ১০৮.৪১ পয়েন্ট। ফলে সোমবার ইতিহাসে প্রথম বার ২২ হাজারের ঘর ছুঁয়ে দেখার পর এ দিন সূচক থিতু হল ২১,৮২৬.৪২ অঙ্কে। রেকর্ড উচ্চতা থেকে নেমে এসে ৬,৫১১.৯০ পয়েন্টে দাঁড়াল ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টিও।
দিনের শুরুর দিকে অবশ্য ছবি ছিল কিছুটা আলাদা। আগের দিনের ২১,৯৩৪ পয়েন্ট থেকে দৌড় শুরু করে ফের ২২ হাজারের ঘরে ঢুকে পড়েছিল সেনসেক্স। নিজের ইতিহাসের সর্বকালীন উচ্চতা ৬,৫৬২.৮০ ছুঁয়ে ফেলেছিল নিফ্টিও। কিন্তু তার পর নীচের দিকে নামে দুই সূচকই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর কারণ মূলত দু’টি—
(১) লাভের টাকা ঘরে তুলতে লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রির তাড়া।
(২) মূল্য ও শিল্পবৃদ্ধির হার নিয়ে বাজারের উদ্বেগ।
আজ, বুধবারই মূল্য ও শিল্প বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে কেন্দ্র। আর এই দু’য়ের দিকেই সাগ্রহে তাকিয়ে আছে বাজার। কারণ, মূল্যবৃদ্ধি কমলে, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে সুদ কমানোর পথ প্রশস্ত করা সম্ভব হবে। আর শিল্প সূচক (বিশেষত উৎপাদন শিল্প) থেকে কিছুটা হলেও আঁচ পাওয়া যাবে দেশের অর্থনীতির। তা ছাড়া, ১৫ মার্চ জানা যাবে আগাম আয়কর আদায়ের হিসাবও। তাই এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যার দিকে বাজার আপাতত সতর্ক নজর রাখছে বলে মনে করছেন অনেকে।
তবে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির কাছে এই সব তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, তারা শেয়ার কিনছে বাজার বা অর্থনীতির পোক্ত ভিতের ভরসায় নয়। বরং লোকসভা ভোটের পর নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে স্থায়ী সরকার তৈরি হওয়ার আশায়। যে কারণে অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ মেম্বাসর্র্ অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন সভাপতি এবং সুমেধা ফিসক্যালের ডিরেক্টর বিজয় মুর্মুরিয়া বলেন, “ভোট পর্যন্ত নতুন কোনও ভাল বা খারাপ খবর আসার সম্ভাবনা কম। তাই পরবর্তী সরকার দেশের আর্থিক হাল ফেরাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে, এই আশাতেই বাজার আপাতত বাড়ার সম্ভাবনা।”
এ ছাড়া, বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির কাছে ভারতের বাজার তুলনায় বেশি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে আরও কয়েকটি কারণে। যেমন, এ দেশে বৃদ্ধির হার ঢিমে হলেও তা চিন ছাড়া বিশ্বের প্রায় সব দেশের তুলনাতেই বেশি। তার উপর সম্প্রতি বৃদ্ধির হাল খারাপ হয়েছে চিনেরও। এই প্রথম শিল্প সংস্থার জন্য নেওয়া বিদেশি ঋণ মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। তার উপর ভারতের বাজারে ‘লিকুইডিটি’ বা শেয়ার বিক্রি করার সুবিধা অন্য অনেক দেশের থেকেই বেশি। আর এই সমস্ত সুবিধার কারণেই এ দেশের বাজারে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির টাকা ঢালা আপাতত বজায় থাকবে, ধারণা বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, এই মুহূর্তে অস্বস্তির কাঁটা বলতে ইউক্রেন নিয়ে তৈরি হওয়া কিছুটা ঠাণ্ডা যুদ্ধের আবহ। যার কারণে তেল ও সোনার দর বাড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy