কেন্দ্রীয় বাজেট ভাল হবে সকলেই বলছে। তবুও সংশয় কাটেনি শেয়ার বাজারের। যা আশা করা হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত যদি তা পূরণ না-হয়, তখন কী হবে— এই অনিশ্চয়তার জেরেই বাজেটের ঠিক দু’দিন আগে মঙ্গলবার লাভের টাকা তুলে নিতে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে লগ্নিকারীদের মধ্যে। হু হু করে নামে সূচকের পারা। দিনের শেষে ৫১৭.৯৭ পয়েন্ট পড়ে ২৫,৫৮২.১১ অঙ্কে থিতু হয় সেনসেক্স। যা সোমবারই ২৬ হাজার ছাড়িয়ে দৌড় শেষ করেছিল। টাকার দাম অবশ্য ২৩ পয়সা বেড়েছে। প্রতি ডলার দাঁড়িয়েছে ৫৯.৭৮ টাকা।
মঙ্গলবার সংসদে রেল বাজেট পেশ করে কেন্দ্র। তবে এ দিন শেয়ার বাজারের পতনের সঙ্গে রেল বাজেটের তেমন কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ব্যাখ্যা যে ভুল নয়, তা রেল বাজেটের দিকে একটু চোখ ফেরালেই বোঝা যাবে। রেলমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া রেলের পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি আহ্বান করেছেন। অন্য সময় হলে তা বাজারকে উৎসাহিত করত। কিন্তু সূচকের পারা এ বার আগে থেকেই অনেক চড়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই সাধারণ বাজেটের আগে মুনাফা ঘরে তুলতে এ দিন রেলমন্ত্রীর ওই প্রস্তাব সত্ত্বেও পতন হয়েছে শেয়ার বাজারের।
তবে নতুন ওয়াগন কেনার ব্যাপারে বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ না-থাকায় এ দিন হতাশ ওয়াগন শিল্পের বেশ কিছু সংস্থার শেয়ার দর ২০% পর্যন্ত পড়ে যায়। ওয়াগন সংস্থা টেক্সম্যাকো-র দরই বিএসই-তে পড়েছে ১৯.৮৪%। রেলের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য শিল্পের শেয়ার দরও এ দিন পড়েছে। যেমন ভারী যন্ত্রপাতি তৈরির সংস্থা বিইএমএলের শেয়ার পড়েছে ৫%, টিটাগড় ওয়াগন্স ৪.৯৯%। হিন্দ রেক্টিফায়ার্স, স্টোন ইন্ডিয়ার শেয়ারও পড়েছে। তবে এই সব সংস্থার শেয়ার দর এর আগে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। শুধু রেল বাজেট নিয়ে হতাশা নয়, পতন মূলত সেই কারণেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ প্রসঙ্গে স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখ বলেন, “বাজেট নিয়ে অনিশ্চয়তা সব সময়েই লগ্নিকারীদের মনে থাকে। তাই সাধারণত লাভের টাকা ঘরে তোলার একটা প্রবণতা বাজেটের আগে দেখা যায়। এ বার সূচক আগে অনকটাই বেড়ে গিয়েছে। তাই পতনের অঙ্কও একটু বেশি।”
বিজেপি ক্ষমতায় আসা নিয়ে আশায় ভর করে এ বার সূচকের দৌড় শুরু হয় নির্বাচনের আগেই। তাই বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছিলেন, দামে সংশোধন হওয়ার সময় এসে গিয়েছে। সাধারণ বাজেটের আগে আংশিক ভাবে সেটাই হল। বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, “এই অবস্থায় সেনসেক্সের ২৫ হাজারের আশেপাশে থাকা উচিত। এই পতন ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের শেয়ার কেনার সুযোগ করে দেবে। বাজেট ভাল হলে তো বাজার আরও তেজী হবেই। না-হলেও দ্রুত পতনের সম্ভাবনা কম। কারণ, সে ক্ষেত্রে পড়তি বাজারের সুযোগে বিদেশি সংস্থাগুলি তাদের লগ্নির পরিমাণ বাড়াবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy