কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকা। বিমানবন্দর এলাকায় হোটেল, শপিং মল বানিয়ে সেই টাকা তুলতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ। যে জমিতে নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার হওয়ার কথা ছিল, সেখানেই এ বার বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে নতুন এটিসি-র ঠিকানা বদলে যাবে।
নয়া এটিসি-র জন্য প্রাথমিক ভাবে তিনটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। বিমানবন্দরের ভিতরেই প্রধান রানওয়ের পাশে, ৬ নম্বর গেটের কাছে অথবা গঙ্গানগরের দিকে তৈরি হতে পারে এই এটিসি। রানওয়ের পাশে বা ৬ নম্বর গেটের কাছে যে জমি, তার মালিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গঙ্গানগরের দিকে নতুন টাওয়ার তৈরি করতে গেলে রাজ্য সরকারের কাছে জমি চাইতে হবে। সে ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে তৃণমূল সরকারের মনোভাব বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে কর্তৃপক্ষের একাংশের আশঙ্কা।
২০১৩ সালের গোড়ায় ২৫০০ কোটি টাকা খরচ করে চালু হয় কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল। কিন্তু নতুন টার্মিনাল থেকে যত টাকা আয় হবে বলে আশা ছিল কর্তৃপক্ষের, ততটা হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ মনে করেছিলেন, অনেক নতুন বিমানসংস্থা কলকাতা থেকে উড়ান চালু করবে। কিন্তু, বাস্তবে আগ্রহ দেখায়নি বেশির ভাগ বিমানসংস্থাই। এর কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করছেন, রাজ্যে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপে ভাটার টান। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের মনোভাব বড় শিল্প গড়ার পক্ষে অনুকূল নয় বলে তাঁদের ধারণা। আর বাণিজ্যিক কাজকর্মের নিম্নমুখী প্রবণতার জেরেই বিমানসংস্থাগুলি কলকাতা থেকে উড়ান চালু করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এমনকী, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, লুফত্হানসা-র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থা, যারা এক সময় এখান থেকে উড়ান চালাত, তারাও ফিরে আসার কথা ভাবেনি। এই পরিস্থিতিতেই টার্মিনাল লাগোয়া জমিকে বাণিজ্যিক ভাবে কাজে লাগিয়ে আয় বাড়ানোর কথা ভেবেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
প্রথমে ঠিক ছিল, কর্তৃপক্ষের অফিসের পাশে প্রায় তিন একর জমিতে নতুন এটিসি-র পাঁচতলা টেকনিক্যাল ব্লক ও প্রায় ৮০ মিটার উঁচু টাওয়ার তৈরি হবে। কিন্তু গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আর কে শ্রীবাস্তব কলকাতায় এসে ওই জমি দেখে জানিয়ে দেন, সেখানে নতুন এটিসি তৈরি হবে না।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই তিন একর জমিটির অবস্থান অত্যন্ত লাভজনক। ভবিষ্যতে সেখানে হোটেল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল বানিয়ে তা থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করতে হবে।
এর ফলে নতুন এটিসি টাওয়ার তৈরির পরিকল্পনা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল বলে অফিসারদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এটিসি-র দায়িত্বে থাকা পূর্বাঞ্চলের রিজিওনাল এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর শুদ্ধসত্ত্ব ভাদুড়ী অবশ্য বলেন, “নতুন এটিসি-র জন্য আরও ভাল জায়গার খোঁজ চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy