সতর্কতা: সাইবার সচেতনতা নিয়ে নির্দেশিকা ক্লাসঘরে। শনিবার, দমদম মতিঝিল গার্লস স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
সরস্বতী পুজো উপলক্ষে শুধু পুষ্পাঞ্জলি, আলপনা দেওয়া আর ভোগ খাওয়া নয়। পুজোকে কেন্দ্র করে কোথাও দেওয়া হচ্ছে সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতনতার পাঠ, কোথাও আবার পুজো মণ্ডপেই চলছে পড়ুয়াদের ইতিহাস সচেতন করার প্রয়াস। আলপনা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ছাত্রীরা শিল্পীসত্তা ফুটিয়ে তোলারও সুযোগ পাচ্ছে।
নাগেরবাজার এলাকার দমদম মতিঝিল গার্লস স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, পুজো মণ্ডপের পাশেই একটি ক্লাসঘরে রীতিমতো প্রোজেক্টর লাগিয়ে সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। স্লাইড শো-এর মাধ্যমে সেই পাঠ দিচ্ছে একাদশ শ্রেণির ছাত্রীরা। তত্ত্বাবধানে রয়েছেন স্কুলেরই শিক্ষিকা স্বাতী সরকার। এ ছাড়াও ক্লাসের বোর্ডে লেখা রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার জন্য কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কী কী সতর্কতা নেওয়া উচিত, জানানো হয়েছে তা-ও। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুলগ্না চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখন তো একটু উঁচু ক্লাসের ছাত্রীদের হাতে হাতে মোবাইল ফোন। স্কুলে ফোন ব্যবহার না করলেও অনেকে হয়তো বাড়িতে ব্যবহার করে। তারা যেন সাইবার ক্রাইম নিয়ে সচেতন থাকে, তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে ওরা যেমন সচেতন হবে, তেমনই আর পাঁচ জনকে সচেতন করবে।’’ কয়েক জন ছাত্রী জানায়, তাদের অনেকেরই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে অনেক ভুল ধারণা ভেঙে গেল বলে জানায় তারা।
সম্প্রতি স্কুলের পড়ুয়াদের ভারী ব্যাগ নিয়ে নানারকম বিধিনিষেধ জারি করেছে রাজ্য সরকারের স্কুল শিক্ষা দফতর। হেয়ার স্কুল সরস্বতী পুজো উপলক্ষে পড়ুয়াদের সচেতন করছে এই ভারী ব্যাগ নিয়েই। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল দাস বলেন, ‘‘ভারী ব্যাগ নিতে কত কষ্ট হয় পড়ুয়াদের। তার কী প্রভাব পড়ে শরীরে, সেই নিয়ে ছবি এঁকেছে পড়ুয়ারা। এর ফলে একদিকে যেমন ছাত্ররা সচেতন হচ্ছে, তেমনই ছাত্রদের নিয়ে যে সব অভিভাবকেরা স্কুলে পুজো দেখতে আসছেন, তাঁরাও সচেতন হচ্ছেন।’’ স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বিষয়টি নিয়ে সাড়া মিলেছে ছাত্রদের থেকে।
সরস্বতী পুজোয় পড়ুয়াদের ইতিহাস নিয়ে সচেতন করছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠ। সেখানে এ বার মণ্ডপ সজ্জার পাশাপাশি গুপ্ত যুগের নানা তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রতি বছরই আমরা পুজো উপলক্ষে ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করি। শুধু পুষ্পাঞ্জলি বা ভোগ খাওয়া নয়, কখনও বিজ্ঞান নিয়ে সচেতন করা হয়, কখনও আবার পরিবেশ সচেতনতার উপরে জোর দেওয়া হয়।’’
অন্য দিকে, রামমোহন মিশন হাইস্কুল এ বার জোর দিয়েছে পুজো মণ্ডপের পরিচ্ছন্নতার দিকে। পরিচ্ছন্নতার উপরে নজর রাখতে স্কুলে একটি দল তৈরি করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রসাদ বা ভোগ খাওয়ার
জন্য ব্যবহার করা শালপাতা স্কুলের যেখানে সেখানে যাতে কেউ না ফেলেন, তার জন্য নজরদারি চালাচ্ছে পড়ুয়াদেরই একটি দল। স্কুলের বাইরে রাস্তাঘাট, ফুটপাথেও রয়েছে নজরদারি।’’ স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, কেউ মাটিতে বা স্কুলের মাঠে শালপাতা ফেললে তাঁকেই সেই জায়গা পরিষ্কার করতে বলা হচ্ছে। এই ভাবে স্কুল চত্বর হয়ে উঠেছে
ঝকঝকে পরিষ্কার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy