অতীন মাইতি
পুলিশের ১০০ ডায়ালে আগে কখনও ফোন করতে হয়নি তাঁকে।
কিন্তু হাসপাতালে জরুরি বিভাগে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে চট করে সিদ্ধান্তটা নিতে দেরি হয়নি তাঁর। এম আর বাঙুর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক অতীন মাইতি বলছিলেন, ‘‘তখন কামরার বাইরে আগুনের শিখা দেখতে পাচ্ছি। ধোঁয়াও ঢুকছে কামরায়। অন্য যাত্রীদের সঙ্গে পরের কামরায় ছুটে যাচ্ছিলাম। হুড়োহুড়ির মধ্যেই মনে হল, ১০০ ডায়াল করি।’’ লালবাজারের দাবি, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা বেজে দু’মিনিটে ময়দান স্টেশনের মুখে মেট্রোয় আগুন লাগার খবর পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের কাছে।
২৯ বছরের অতীনের দাবি, লালবাজার থেকেও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর কাছে ফোন আসে। পুলিশ জানতে চায়, কোথায় কী হয়েছে। আশ্বস্ত করা হয়, আগুন নেভানোর ও যাত্রীদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দিলেও খুব একটা নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারেননি অতীন। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশ মুখে দেখছি বললেও বাইরে কী পরিস্থিতি, বুঝতে পারছিলাম না! আগুন যে ভিতরে ঢুকবে না, সেই আশ্বাসবার্তাও মেট্রোর তরফে কেন ঘোষণা করা হল না, বুঝছি না।’’
এম আর বাঙুর হাসপাতালে ডাক্তারদের আবাসনে থাকেন অতীন। টালিগঞ্জ থেকে মেট্রোয় সেন্ট্রাল যাচ্ছিলেন কলেজ স্ট্রিট থেকে ডাক্তারির বইপত্র কিনতে। পথে ওই ঘটনা। মেট্রোয় দ্বিতীয় কামরায় ছিলেন অতীন। তাই বিপদের আঁচ ভাল ভাবেই টের পান। তবে মাথা ঠান্ডা রেখে সময়মতো ফোন করার জন্য পুলিশ তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছে।
অতীন অবশ্য বলছেন, ‘‘পুলিশকে ফোন করার পরেও একটা সময়ে মনে হচ্ছিল, বুঝি বেরোতে পারব না।’’ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার শুরু হলে ফের ইঞ্জিনের দিকে পিছিয়ে আসেন অতীন! মোটরম্যানের বসার কেবিনের সঙ্গে কামরার সংযোগের দরজাটা তখন খোলা হয়েছে। মোটরম্যানের কেবিন দিয়েই বাইরে বেরোন। বিপদে মা আর দিদির কথা মনে হলেও ওই সময়ে কাউকে ফোন করতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘তখন ফোন করলে শুধু শুধু ভাবনা বাড়ত।’’ শুক্রবার ফের সময়মতো ডিউটিতে এসেছেন অতীন। অগ্নি-আতঙ্ক সত্ত্বেও তৃপ্তির ভাব কাজ করছে তাঁর মনে। বলছিলেন, ‘‘আমি সঙ্গে সঙ্গে খবর না দিলে হয়তো উদ্ধার পর্ব শুরু হতে আরও দেরি হয়ে যেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy