Advertisement
১০ মে ২০২৪

পড়শিকে চেনার স্বাদ-সেতু

ঢাকার স্ট্রিটফুড কল্লু মিয়াঁর খাস্তা বাখরখানি নিয়ে নস্ট্যালজিয়া রয়েছে বহু দেশহারা কাঠবাঙালের। সমাজকর্মী সাবির আহমেদ গল্প শোনালেন, কী ভাবে ঢাকার নবাব-বাড়ির আভিজাত্য মিশে আছে তাতে। অনেকেই খবর রাখেন না, কলকাতার খিদিরপুর-বৌবাজারের মহল্লাতেও স্বমহিমায় বিরাজ করছে বাখরখানি

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:১৭
Share: Save:

ডাক্তারের নিষেধে এখন কিছু দিন মাংসের ঝাল-মশলা চাখা বারণ তাঁর। তা বলে খাবারের মধ্যে সাংস্কৃতিক-সন্ধানে আপত্তিটা কোথায়?

রবিবার সকালে তাই সল্টলেক থেকে খিদিরপুরে হাজির সংঘমিত্রা চৌধুরী বাখরখানি-ডালপুরি-নিহারি বা নানখাটাই বিস্কুটের ছবি তুলতেই ব্যস্ত থাকলেন। পড়শিকে চেনার এই স্বাদ-সেতু মেলে ধরতে বসেছিল অভিনব প্রাতঃরাশের আসর। বাঙালি বাড়ির বৌ, কন্নড়ভাষী স্কুলশিক্ষিকা মাধুরী কাট্টি বলছিলেন, আজকের ভারতে খাদ্য নিয়ে রাজনীতির কিসসা! ‘‘সবাই সব কিছু না-ই খেতে পারেন! কিন্তু অন্যের খাবারকে সম্মান করতে শেখা খুব জরুরি।’’ গোমাংস আস্বাদের ‘অপরাধে’ হিংসাদীর্ণ ভারতে দাঁড়িয়েই অন্য এক অভিজ্ঞানের পাঠ তখন মেলে ধরল কলকাতা।

ঢাকার স্ট্রিটফুড কল্লু মিয়াঁর খাস্তা বাখরখানি নিয়ে নস্ট্যালজিয়া রয়েছে বহু দেশহারা কাঠবাঙালের। সমাজকর্মী সাবির আহমেদ গল্প শোনালেন, কী ভাবে ঢাকার নবাব-বাড়ির আভিজাত্য মিশে আছে তাতে। অনেকেই খবর রাখেন না, কলকাতার খিদিরপুর-বৌবাজারের মহল্লাতেও স্বমহিমায় বিরাজ করছে বাখরখানি। শীতের সকালে এ পাড়ার নিহারি না-চাখলেও জীবন বৃথা। পার্ক সার্কাস পাড়ার বৌমা তালাত কাদরি বাড়িতে রাতভর ফোটানো মাংসের এই থকথকে সুপ তৈরির কসরত শেখান। তাঁর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধর্ম-ভাষার ফারাক উড়িয়ে অজস্র মহিলা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রবীণ অফিসার সূক্তি সরকার বললেন, ‘‘নিউ আলিপুরে থেকেও এত কাছে খিদিরপুর-মেটিয়াবুরুজ পাড়ার কত ঐশ্বর্য, তা অজানা ছিল।’’ অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক দম্পতি অশোকেন্দু সেনগুপ্ত, অর্পিতা সেনগুপ্ত বা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা সুদেষ্ণা মৈত্ররাও কদাচিৎ নিহারি চাখার সুযোগ পেয়েছেন আগে। স্বাদ ছাড়াও ঢের বেশি কিছু প্রাপ্তির আনন্দে তাঁদের সকাল ভরে উঠল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nankhatai Nihari Food Culture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE