প্রতীকী ছবি।
লিখিত চুক্তির পরেও বহু ক্ষেত্রে সময়মতো ফ্ল্যাট হাতে পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। প্রোমোটারদের কাছ থেকে প্রতারিত হয়ে কখনও পুলিশ, কখনও ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ, বিভিন্ন দফতরে বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না।
অভিযোগ, এমনই ঘটেছে বেলেঘাটার বাসিন্দা বৃদ্ধা বেলা ভট্টাচার্যের সঙ্গে। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর চারেক আগে নারকেলডাঙায় পাঁচশো বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বেলাদেবী। ফ্ল্যাটের জন্য অগ্রিম প্রায় দেড় লক্ষ টাকাও দেন। নারকেলডাঙায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন বেলাদেবী। বাড়িওয়ালা পুরনো বাড়ি ভেঙে সংস্কার করায় বছর দশেক আগে বেলেঘাটায় মেয়ের কাছে ওঠেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘চার বছর আগে লিখিত চুক্তি অনুযায়ী, ২০১৬ সালে ফ্ল্যাট হাতে পাওয়ার কথা। কিন্তু দু’বছর পার হলেও প্রোমোটার কোনও উচ্চবাচ্য করছেন না।’’ প্রোমোটার প্রভাত পান বলেন, ‘‘পাঁচশো বর্গফুটের ফ্ল্যাট বুকিং করলেও বেলাদেবীর ফ্ল্যাটটি আয়তনে কিছুটা বেশি হয়েছে। যার জন্য ওঁকে কিছু বাড়তি টাকা দিতে বলেছি। কিন্তু উনি যোগাযোগ করছেন না।’’
প্রতিশ্রুতি মতো ফ্ল্যাট হাতে না পাওয়ায় নারকেলডাঙায় প্রভাত পান-সহ আরও তিন প্রোমোটারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বেলাদেবী। তার পরেও সময় পেরিয়েছে। নারকেলডাঙা থানার তরফে পুলিশ এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধা আমার দফতরে অভিযোগ জমা দিলে ব্যবস্থা নেব।’’
প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ অভিযুক্ত প্রোমোটারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যেখানে অপারগ, সেখানে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর কতটা ব্যবস্থা নিতে পারবে? এই প্রশ্নের উত্তরে সাধনবাবু বলেন, ‘‘প্রথমে অভিযুক্ত প্রোমোটারকে আমাদের দফতরের গ্রিভান্স সেলে ডেকে পাঠিয়ে আপস মীমাংসার চেষ্টা করা হবে। তাতেও কাজ না হলে ক্রেতা সুরক্ষা দফতর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করবে।’’
শহরে বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটে চললেও নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ‘ক্রেডাই’ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয় না কেন? এ প্রসঙ্গে ‘ক্রেডাই’-এর অন্যতম কর্তা সুশীল মোহতার কথায়, ‘‘শহরে অনেকেই নির্মাণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নারকেলডাঙার ঘটনায় আমাদের সংস্থার কোনও সদস্য যুক্ত নন। এ ব্যাপারটা পুলিশ দেখুক।’’ সুশীলবাবু আরও বলেন, ‘‘রিয়্যাল এস্টেট অ্যাক্ট, ২০১৬ চালু হলেও এ রাজ্যে তা এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। ওই আইন চালু হয়ে গেলে ক্রেতারা অনেকটাই সুবিধা পাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy