Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ব্যাঙ্কে তালা ঝোলাল তৃণমূল

এ রাজ্যে কারখানা, অফিস এমনকী স্কুলেও তালা ঝুলিয়ে রাজনৈতিক দলের ‘দাদাগিরি’ এখন নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু ঋণ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা এ রাজ্যে সম্ভবত প্রথম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৫ ০০:১২
Share: Save:

এ রাজ্যে কারখানা, অফিস এমনকী স্কুলেও তালা ঝুলিয়ে রাজনৈতিক দলের ‘দাদাগিরি’ এখন নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু ঋণ না দেওয়ার অভিযোগ তুলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা এ রাজ্যে সম্ভবত প্রথম। শুক্রবার ঠিক সেটাই ঘটেছে হাওড়ার কোনাতে। রাজ্যের স্বনির্ভর প্রকল্পগুলিতে সময় মতো ঋণ দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগে ওই এলাকায় ইউকো ব্যাঙ্কের একটি শাখায় তালা লাগিয়ে দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। শুধু তা-ই নয়, ব্যাঙ্কের উল্টো দিকে মাইক লাগিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ কর্মসূচিও। শাসকদলের এই ‘দাদাগিরি’র সাক্ষী থাকলেন এলাকার বাসিন্দারা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হাওড়া পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ত্রিলোকেশ মণ্ডলের নেতৃত্বে কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক ইউকো ব্যাঙ্কের কোনা শাখার সামনে জড়ো হয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দেন। এর পরে ব্যাঙ্কের দরজায় দলীয় পতাকা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এই ব্যাঙ্কটি রাজ্যের বিভিন্ন স্বনির্ভর প্রকল্প যেমন বিএসকেপি, কন্যাশ্রী, বিবেকানন্দ যোজনার জন্য আবেদনকারীদের ঋণ দিতে অহেতুক দেরি করছে। ফলে দিনের পর দিন ভুগছেন অসংখ্য গ্রাহক।

এ দিন সকালে ব্যাঙ্কে কর্মচারীরা এসে দেখেন, গেট বন্ধ। সেখানে তৃণমূলের পতাকা লাগানো। উল্টো দিকে তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা বক্তৃতা দিচ্ছেন। গ্রাহকদের বক্তব্য, এই ব্যাঙ্কটির গ্রাহক পরিষেবা নিম্নমানের, এই অভিযোগ ঠিক। কিন্তু এ ভাবে ব্যাঙ্কে তালা ঝুলিয়ে তাঁদের অসুবিধা করে বিক্ষোভ দেখানো অর্থহীন।

রমা সেনাপতি নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কটির পরিষেবা প্রায় নেই বললেই চলে। যে কোনও কাজ করতে দীর্ঘ সময় নেয়। কিন্তু শাসক দল কী ভাবে ব্যাঙ্কে তালা ঝুলিয়ে গ্রাহকদের সমস্যায় ফেলেন?’’ ত্রিলোকেশবাবু বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে ইচ্ছাকৃত ভাবে রাজ্য সরকারের স্বনির্ভর প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে ঋণ দিতে দেরি করছেন। গ্রাহকেরা এসে অ্যাকাউন্টও খুলতে পারছেন না।’’

স্বনির্ভর প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে দেরিতে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি কার্যত মেনে নিয়েছেন ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষ। ম্যানেজার বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত এক বছর ধরে বকেয়া ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারা যায়নি। ঋণ আদায়ের জন্য পর্যাপ্ত কর্মীও নেই। এ কারণেই নতুন করে সরকারি প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Howrah Bank Agitation Trinamool loan money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE