পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।—ফাইল চিত্র।
কালীপুজোয় শব্দ-তাণ্ডব রোধে নির্ধারিত মাত্রার উপরে যাতে মাইক, বড় মাপের সাউন্ড বক্স বা ডিজে বক্স বাজানো না হয়, তার জন্য থানার আধিকারিকদের সতর্ক করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। রবিবার রাতে তিনি প্রতিটি থানার আধিকারিকদের নির্দেশ পাঠিয়েছেন ওই বিষয়ের উপরে নজরদারি চালাতে।
সোমবার পুলিশ কমিশনার বলেন,‘‘থানাগুলিকে সব ধরনের সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা এবং জুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’
কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যেই নির্দিষ্ট মাত্রায় মাইক বাজানোর বিষয়ে নির্দেশ জারি আছে আদালতের তরফে। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ বড় মাপের সাউন্ড বক্স বা ডিজে বক্স বাজানোও। কিন্তু প্রতি বছরই বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানো হয়। এই বছর দুর্গাপুজোর বিসর্জনেও ডিজে বাজতে দেখা গিয়েছে। কালীপুজোর মরসুমে বহু জায়গায় জলসায় নির্ধারিত মাত্রার বেশি শব্দে বক্স বাজানোর অভিযোগ ওঠে।
শব্দজব্দ
• ডিজে বক্সের মালিকদের নিষিদ্ধ সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া না দিতে নির্দেশ।
• পুজো কমিটিগুলিকে বিসর্জনের সময়ে ডিজে সম্পর্কে সতর্ক করা।
• নির্দেশ না মানলে আইনি ব্যবস্থা।
• শব্দবাজি ঠেকাতে বহুতলে নজরদারি।
• শহরে বাজি ঢোকা ঠেকাতে জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক ও তল্লাশি।
• বাজি নিয়ে গোয়েন্দাদের নজরদারি বৃদ্ধি।
লালবাজার সূত্রের দাবি, পুলিশ কমিশনার সেই সব বিষয় মাথায় রেখে থানার ওসিদের এখন থেকেই সর্তক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। যাতে দুর্গাপুজোর মতো শহরে কালীপুজোও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, দুর্গাপুজোর বিসর্জনের পরেই ধ্বনি ব্যবসায়ীদের মাইকে সাউন্ড লিমিটার লাগাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ডিজে বক্স ভাড়া দিতেও নিষেধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিটি কালীপুজো কমিটিকে বিসর্জনের সময়ে সব ধরনের শব্দবিধি মেনে চলতে বলেছে পুলিশ। চলতি সপ্তাহেও কলকাতা পুলিশের সব কয়টি থানা তাদের এলাকার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে নির্দেশের কথা ফের মনে করিয়ে দেবে বলেই সূত্রের দাবি।
লালবাজার সূত্রের খবর, বড় মাপের ডিজে বক্স এবং নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর সব চেয়ে বেশি অভিযোগ ওঠে দক্ষিণ শহরতলির
যাদবপুর, ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকা, রিজেন্ট পার্ক, বাঁশদ্রোণী, হরিদেবপুর, উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট, জোড়াবাগান, বড়বাজার-সহ পূর্ব কলকাতার মানিকতলা, বেলেঘাটার মতো এলাকায়। ওই সব
এলাকার বেশির ভাগই জেলা পুলিশ লাগোয়া। তাই ওই সব থানাকে জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, গত বছরের তুলনায় শব্দ-তাণ্ডব কমাতেই পুজো কমিটিগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। যাঁরা
নির্দেশ না মেনে শোভাযাত্রায় বেশি শব্দের বক্স বাজাবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান
ওই পুলিশকর্তা।
যদিও নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একটি অংশের দাবি, প্রতি বারই লালবাজার নানা নির্দেশ জারি করে। তা সত্ত্বেও প্রভাবশালী বিভিন্ন পুজো কমিটি বিসর্জনের শোভাযাত্রায় নিষিদ্ধ বাজি ফাটায় এবং উচ্চগ্রামের বক্স বাজায়। তাদের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রেই তেমন কোনও ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত নেওয়া হয় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy