পুলিশি হস্তক্ষেপে ফের অটোয় উঠছেন যাত্রীরা।
দিনের ব্যস্ত সময়ে উল্টোডাঙা থেকে সল্টলেকে ঢোকার মুখে অটো থামিয়ে জোর করে যাত্রীদের নামিয়ে দিলেন অটোচালকদেরই একাংশ। আচমকা এই ঘটনায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকাল দশটা নাগাদ। বিধাননগর পুলিশ প্রথমে দাবি করেছিল, ঘটনাটি কলকাতা পুলিশ এলাকার। যদিও কিছু পরেই পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় তারা। পুলিশ গিয়ে গণ্ডগোল থামিয়ে যাত্রীদের অটোয় তুলে দেয়। তাতেও অবশ্য যাত্রীদের ভোগান্তি কমেনি। এর কিছু ক্ষণ পরে ফের পিএনবি মোড়ে অটো থেকে যাত্রীদের নামানোর চেষ্টা হয়। তবে পুলিশ থাকায় সেখানে অটো আটকাতে ব্যর্থ হন বিক্ষোভকারীরা।
বিধাননগর পুলিশ সূত্রের খবর, ‘অটোচালক ভাইবৃন্দ’ নামে চালকদের একটি গোষ্ঠী এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। অটো নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সম্প্রতি কিছুটা সক্রিয় হওয়াতেই অটোচালকদের একাংশ তাতে প্রবল ক্ষুব্ধ। সেই কারণেই এ দিন যাত্রীদের হেনস্থা করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছে তারা। তবে পুলিশ সেই চেষ্টা সফল হতে দেয়নি। যাত্রীদের অভিযোগ, অটোচালকেরা যে কতটা বেপরোয়া, এ দিনের ঘটনা তারই প্রমাণ। সল্টলেকের এক নম্বর সেক্টরে কর্মরত সুশান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সল্টলেকে অটোর রুট কিংবা ভাড়া নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। কিন্তু এ দিন রীতিমতো দাদাগিরির মুখে পড়লাম। জোর করে অটো থেকে নামিয়ে দেওয়া হল। অফিসে সময়ে পৌঁছতে পারলাম না।’’ আরতি দাস নামে আর এক যাত্রী বলেন, ‘‘বিধাননগর হাসপাতালে যাচ্ছিলাম। অটো থেকে নামিয়ে দিল। পুলিশ তাড়াতাড়ি এসে পড়ায়
সমস্যা মিটেছে। পুলিশ অন্য অটোয় তুলে দিল।’’
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগেই বিধাননগর রোড স্টেশনের কাছে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন অটোযাত্রীরা। তার পরে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, সল্টলেকে রুটের কোনও ঠিকঠিকানা নেই। ভাড়াও হাঁকা হয় ইচ্ছেমতো। যাত্রীরা মুখ বুজে সব মেনে নিতে বাধ্য হন।
এর পরে অবশ্য আর কোনও গোলমালের খবর মেলেনি। সল্টলেকে একটি অটো ইউনিয়নের এক নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘অটো নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কিছু পদক্ষেপ করছে বলে একদল অটোচালক এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমরা এটা সমর্থন করছি না। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে পদক্ষেপ করা হবে।’’ সল্টলেকের আরও একটি অটো ইউনিয়নের নেতা সুজিত পালও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, যাত্রীদের এমন হেনস্থার ঘটনা মানা যায় না।
অটো না পেয়ে অনেকেই ওঠেন ভিড় বাসে। সোমবার সকালে, উল্টোডাঙা থেকে সল্টলেক ঢোকার রাস্তায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
অটোচালকদের একাংশের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করছে। রুট ভাগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। যদিও অভিযোগ খারিজ করে পুলিশের দাবি, পুলিশ আগ বাড়িয়ে কোনও পদক্ষেপ করেনি। অটো চলাচলের ক্ষেত্রে নিয়ম ভাঙলে পুলিশ তার করণীয় করবেই। আর রুট ভাগের বিষয়টি দেখে আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, সল্টলেকে অটো নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। সমস্যা মেটাতে নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। দ্রুত তা কার্যকর করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy