Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মশা দমনে বছরের শুরু থেকেই উদ্যোগী বিধাননগর

দত্তাবাদ এবং সংযুক্ত এলাকার পাশাপাশি রাজারহাট-গোপালপুরে বেশ কিছু নিচু এলাকায় নিকাশি পরিকাঠামো উন্নত নয়।

রুদ্ধ: ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল ভরেছে আগাছায়। জন্মাচ্ছে মশা। ছবি: শৌভিক দে

রুদ্ধ: ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল ভরেছে আগাছায়। জন্মাচ্ছে মশা। ছবি: শৌভিক দে

কাজল গুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
Share: Save:

মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে অন্য বছরের তুলনায় সাফল্য মিলেছে গত বছরে। তবে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও মশাবাহিত রোগে মৃত্যু আটকানো সম্ভব হয়নি। এ বার তাই বছরের শুরু থেকেই মশাবাহিত রোগ নির্মূল করতে জোরকদমে কাজ করতে চাইছে বিধাননগর পুরসভা।

এর জন্য গত বছরে কোথায়, কত জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এখনও পুর কর্তৃপক্ষের তরফে তৎপরতা চোখে পড়েনি। তবে পুর প্রশাসনের দাবি, পরিকল্পনা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। দ্রুত তা কার্যকরী করা হবে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকের এক দিকে কেষ্টপুর খাল এবং অন্য প্রান্তে ইস্টার্ন ড্রেনেজ চ্যানেল সংলগ্ন এলাকায় সম্প্রতি মশার উপদ্রব বেড়েছে। বাসিন্দাদের কথায়, খালে জলের প্রবাহ বজায় থাকলে মশার উপদ্রব কমে। পুরকর্মীদের একাংশের কথায়, খাল দু’টি যে ভাবে কচুরিপানায় ভরে গিয়েছে তাতে নৌকা নামিয়ে, ওষুধ স্প্রে করেও কাজ হবে না। পুরনিগমের দাবি, খালে জলের প্রবাহ বজায় রাখতে সেচ ও নগরোন্নয়ন

দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। পাশাপাশি, দ্রুত কচুরিপানা সরিয়ে নৌকা নামানো এবং ওষুধ স্প্রে করার কাজ করা হবে।

পুর প্রশাসনের একাংশের কথায়, মশবাহিত রোগ বৃদ্ধির পিছনে অপ্রতুল নিকাশি পরিকাঠামো, প্রান্তিক এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অভাবের মতো বিষয়ও দায়ী। পুর প্রশাসন সূত্রের খবর, দূরবর্তী সংযুক্ত এলাকা থেকে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে রক্তপরীক্ষা করতে গিয়েই অনেকটা সময় কেটে যায়। আবার প্রান্তিক দু’টি এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র করতে গিয়েও নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হচ্ছে পুরনিগমকে। এই সব সমস্যার সমাধানে এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যেমন, সচেতনতার প্রসারে সর্বাধিক জোর দেওয়া। সেই কারণে ইতিমধ্যে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করেছে পুরনিগম। বিভিন্ন জায়গায় সেই তথ্যচিত্র দেখিয়ে সচেতনতার বার্তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, যে সব জায়গা থেকে হাসপাতালের দূরত্ব বেশি, সেখানে মোবাইল মেডিক্যাল ভ্যান পাঠানো হবে। যাতে দ্রুত রোগীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা যায়। বাড়ির ভিতরে ও বাইরে জল জমতে না দেওয়া, এলাকা সাফ রাখা, নিয়মিত মশার তেল স্প্রে করার কাজও করা হবে। পাশাপাশি, কেউ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হলে তার খবর কিংবা স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট যাতে দ্রুত নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে পৌঁছয়, তা সুনিশ্চিত করা হবে।

দত্তাবাদ এবং সংযুক্ত এলাকার পাশাপাশি রাজারহাট-গোপালপুরে বেশ কিছু নিচু এলাকায় নিকাশি পরিকাঠামো উন্নত নয়। এ ছাড়া খালের উপরে বহু জায়গায় ঝুপড়ি তৈরি হওয়ায় সেখানে জলের প্রবাহ থমকে যায়। সাফাইয়ের কাজও ঠিক ভাবে করা যায় না। ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় জানান, গত বছরে লাগাতার কাজের জেরে সাফল্য এসেছে। এ বারেও জোরকদমে কাজ শুরু করা হচ্ছে। জোর দেওয়া হবে সচেতনতায়। বাসিন্দাদের একাংশ বহু প্রচার সত্ত্বেও সচেতন হচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ করার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidhannagar Water Borne Disease
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE