Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Cancer

লকডাউনের মধ্যেই জরুরি অস্ত্রোপচার ক্যানসার আক্রান্তের

গত দু’মাস ধরে পেটের উপরিভাগে অসহ্য যন্ত্রণা, বদহজম ও গ্যাসের কষ্টে ভুগছিলেন জানবাজারের বন্দনা সিংহ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জয়তী রাহা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০১:৫৯
Share: Save:

লকডাউনে একের পর এক হাসপাতাল থেকে যখন রোগী ফেরানোর ঘটনা ঘটছে, তার-ই মধ্যে কিছু কিছু ঘটনা যেন আশার আলো দেখাচ্ছে।

যেমন এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেখানে সব বহির্বিভাগ চালু আছে। রোগীর সংখ্যা এক চতুর্থাংশে ঠেকলেও যাঁরা আসছেন, প্রয়োজন বুঝে তাঁদের চিকিৎসা হচ্ছে। যেমন, সম্প্রতি বহির্বিভাগে দেখাতে আসা এক রোগীকে সে দিনই ভর্তি করে তিন দিনের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। আপাতত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন সেই রোগী।

গত দু’মাস ধরে পেটের উপরিভাগে অসহ্য যন্ত্রণা, বদহজম ও গ্যাসের কষ্টে ভুগছিলেন জানবাজারের বন্দনা সিংহ। বছর তেত্রিশের বন্দনার বাড়ি আদতে বিহারের ছাপরা জেলায়। কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকা তাঁর পরিবার স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায় তাঁকে। লকডাউনের মধ্যে ফের যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে এসএসকেএমের জরুরি বিভাগে পৌঁছন বন্দনার বাড়ির লোক। তখনও সাধারণ শল্যের বহির্বিভাগ চালু থাকায় চিকিৎসকেরা রোগীকে সেখানে পাঠান। সিটি স্ক্যানের রিপোর্টে ধরা পড়ে পিত্তনালী ও পিত্তথলির আশপাশের লসিকা গ্রন্থিতেও ক্যানসার ছড়িয়েছে। দ্রুত অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা।

‘এক্সটেন্ডেড র‌্যাডিক্যাল কোলেসিস্টেকটোমি’ করে বাদ দেওয়া হয় পিত্তথলি এবং যকৃতের (লিভার) চার বি এবং পাঁচ অংশটি। চিকিৎসক দলের প্রধান সদস্য বিতানকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লিভারের গায়ে পিত্তথলি লেগে থাকায় লিভারের ওই দুই অংশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তাই বাদ দেওয়া হয়েছে। আপাতত সুস্থ রোগী। বায়োপসি রিপোর্ট আসার পরে কেমোথেরাপির সিদ্ধান্ত হবে। লকডাউন তুলে নেওয়ার অপেক্ষা করলে ক্যানসার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ত। তাই অস্ত্রোপচার জরুরি ছিল।’’ তাঁর তত্ত্বাবধানে সুনন্দ দে, পবন মণ্ডল, সৌরভ চক্রবর্তী, দেবতনু হাজরা, পঙ্কজ কুমার, অর্ণব পাল ও অ্যানাস্থেটিস্ট স্নিগ্ধদেব ঘোষ তিন ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করেন।

একই কথা বলছেন ক্যানসার শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়। তাঁর মতে, ‘‘কোনও রোগীর ক্যানসার বা অন্য অস্ত্রোপচার পিছোলে যদি তাঁর ক্ষতির আশঙ্কা থাকে, তবে এই পরিস্থিতিতেও অস্ত্রোপচার হবে। ভয় না পেয়ে নিজের চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখুন।’’

এমন পরিস্থিতিতে অন্য রোগীরাও যে পরিষেবা পাচ্ছেন, সেই বিভাগীয় পরিসংখ্যান দিচ্ছে এসএসকেএমের সাধারণ শল্য বিভাগ। স্বাভাবিক দিনে ওই বিভাগে রোগী আসেন দুশোর বেশি। বর্তমানে সেখানে দিনে রোগী আসছেন ৭০ জন। প্ল্যানড ওটি এখন দিনে ৫-৬টি হচ্ছে। আগে হত ১৫-১৬টি। সুতরাং সংখ্যা কমলেও জরুরি পরিষেবা দেওয়া হচ্ছেই, জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cancer SSKM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE