Advertisement
০৫ মে ২০২৪

হাসপাতালেই ডেঙ্গি, ক্যানসার রোগিণীর মৃত্যু

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোদপুরের এইচবি টাউনের বাসিন্দা ওই মহিলা গত ১২ সেপ্টেম্বর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের জন্য মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

মর্মান্তিক: মেয়ের সঙ্গে মৌ (ইনসেটে)। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গি হেমারেজিক শকের উল্লেখ করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

মর্মান্তিক: মেয়ের সঙ্গে মৌ (ইনসেটে)। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গি হেমারেজিক শকের উল্লেখ করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জটিল অস্ত্রোপচার সফল হয়েছিল। কিন্তু ডেঙ্গির কাছে হেরে গেলেন সোদপুরের বাসিন্দা মৌ দত্ত (৪০)। অভিযোগ, হাসপাতালেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি। তাঁর বছর নয়েকের এক মেয়ে রয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোদপুরের এইচবি টাউনের বাসিন্দা ওই মহিলা গত ১২ সেপ্টেম্বর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের জন্য মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি-পর্বের জন্য লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত মৌ টানা কয়েক সপ্তাহ হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন। গত ৫ অক্টোবর হাসপাতালের তরফে পরিবারকে জানানো হয়, তাঁর জ্বর হয়েছে। যদিও রক্ত পরীক্ষায় কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি। ৭ অক্টোবর তাঁর অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রতিস্থাপনের পরেও মৌ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ১০ তারিখ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, তাঁর রক্তে এনএস-১ পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। ১১ অক্টোবর চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গিতে মৌয়ের মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক। ১২ তারিখ, শুক্রবার তিনি মারা যান।

হাসপাতালের দেওয়া ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘ডেঙ্গি হেমারেজিক শক’ উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন মৌ। তাঁর স্বামী স্বর্ণাঙ্কুর দত্ত জানান, মৌ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু জ্বর কিংবা বমির মতো কোনও উপসর্গ ছিল না। অথচ, হাসপাতালের বিশেষ নজরদারি থাকা ঘরে থাকাকালীনই তাঁর দেহে ডেঙ্গির সংক্রমণ ধরা পড়ে। স্বর্ণাঙ্কুরবাবুর কথায়, ‘‘মশার কামড়ে ডেঙ্গি হয়। তা হলে হাসপাতালেই যখন ডেঙ্গি সংক্রমণ হয়েছে, বোঝাই যাচ্ছে, হাসপাতাল পর্যাপ্ত নজরদারি করে না।’’

তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্থিমজ্জার চিকিৎসায় মৌকে একাধিক বার রক্ত দিতে হয়েছে। বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে সেই রক্ত কিনে আনা হয়েছিল। ফলে সেই রক্ত থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। হাসপাতালের এই যুক্তিতে গাফিলতির অভিযোগ এড়ানো যাবে না বলেই জানাচ্ছে মৃতার পরিবার। তাদের অভিযোগ, বাইরের ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে কিনে আনা রক্তে কোনও রকম সংক্রমণ রয়েছে কি না, সেটা যাচাই করার দায়িত্বও তো হাসপাতালের। তাই হাসপাতাল কোনও ভাবেই দায় এড়াতে পারে না। হাসপাতালের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করা হবে।

মুকুন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, মৃতার পরিবারের তরফে তাদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ হলে খতিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Dengue Cancer Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE