(বাঁ দিকে) সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাপস রায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কলকাতার এক নামী স্কুলকে ‘ঘর’ বানিয়ে নিয়েছেন উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই থাকেন তিনি। সেখান থেকেই ভোটের কাজ চলে তাঁর। এমনটাই অভিযোগ ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের। এই অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগে সুদীপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগপত্রে তাপস লিখেছেন, ‘‘সুদীপ যেখানে থাকেন, তার ঠিকানা ৭২/৪এফ/৩ এসএন ব্যানার্জী রোড, কলকাতা-১৪। সেটি কলকাতার ক্যালকাটা বয়েস স্কুলের ক্যাম্পাসের মধ্যেই পড়ে। সেখানে দু’টি ফ্ল্যাট এবং একটি পার্টি অফিস রয়েছে। নির্বাচনের কাজ সেখান থেকেই পরিচালনা করা হচ্ছে। সুদীপ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জোর করে ওই এলাকা দখল করেছেন। স্কুলের অধিকাংশ ছাত্রের অভিভাবকেরা এর বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক দল এবং স্কুল পাশাপাশি চলতে পারে না বলে মনে করেন তাঁরাও। ভোটের কাজও ওখান থেকেই হচ্ছে বলে অভিভাবকেরা মনে করছেন, এতে ছাত্রদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে।’’
তাপস আরও লিখেছেন, ‘‘ওই স্কুলভবনটিকে নির্বাচনের সময়ে বুথ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কোনও প্রার্থী যেখানে থেকে ভোটের প্রচার করছেন, সেখানে ভোটগ্রহণ হতে পারে না। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখে আমি উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অনুরোধ করছি। উনি যেন ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওখানে না থাকেন, ওখান থেকে কোনও ভোটের কাজ পরিচালনা না করেন, কমিশন তা নিশ্চিত করুক।’’
তাপসের অভিযোগ, ওই স্কুলের কাছেই বেআইনি নির্মাণ করেছেন সুদীপ। যেখান থেকে তাঁর সাংসদ দফতরের কাজ, তাঁর স্ত্রীর বিধায়ক দফতরের কাজ চলে। এই বেআইনি দফতরগুলি ভেঙে ফেলা আবশ্যিক বলে কমিশনে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন তাপস। যত দ্রুত সম্ভব, সুদীপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, সুদীপ এবং তাপসের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা সকলের জানা। তৃণমূলে থাকাকালীনও প্রকাশ্যে সুদীপকে আক্রমণ করতেন তাপস। এমনকি, তাঁর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসার অন্যতম কারণও এই সুদীপ। দল ছাড়ার পর সুদীপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তাপসকে সেই সুদীপের বিরুদ্ধেই উত্তর কলকাতায় প্রার্থী করা হয়েছে। সুদীপের বিরুদ্ধে অনুরূপ অভিযোগে সম্প্রতি সরব হয়েছেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষও। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, দীর্ঘ দিন ধরে উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি থাকা সত্ত্বেও সুদীপের কোনও জেলা কার্যালয় নেই। স্কুলের দফতর থেকেই তিনি কাজ চালান। এ ভাবে দলের সংগঠন চলতে পারে না। কুণালকে দলবিরোধী কথা বলার জন্য রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। আগামী ১ জুন সপ্তম দফায় উত্তর কলকাতা কেন্দ্রে ভোট রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy