জোড়াতাপ্পি: করুণাময়ী সেতুতে বসানো হয়েছে এই লোহার পাত। তবে তাতেও এড়ানো যায়নি যানজট। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
মাঝেরহাট সেতু ভাঙার স্মৃতি এখনও টাটকা। আর তার মধ্যেই শনিবার দুপুরে টালিগঞ্জ এবং হরিদেবপুরের সংযোগকারী করুণাময়ী সেতুর একটা অংশ বসে গেল। এর জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল স্থানীয় লোকজনের মধ্যে।
হরিদেবপুরের দিকে সেতুর একাংশ যে বসে গিয়েছে, শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তা প্রথম নজরে আসে ঠাকুরপুকুর ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসারদের। তাঁরাই খবর দেন কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারদের। ততক্ষণে অবশ্য গার্ডরেল দিয়ে ওই অংশটুকু ঘিরে দেয় পুলিশ। নিয়ন্ত্রণ করা হয় যান চলাচলও।
পরে ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেতুটি পরীক্ষা করেন। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সেখানে একটি লোহার পাত বসিয়ে গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা। ওই অংশের উপর দিয়ে আপাতত ছোট গাড়ি যাবে। বাকি অংশ দিয়ে বড় বা ভারী গাড়ি যেতে পারে।
সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, এক্সপ্যানশান জয়েন্টের ফাঁক বেড়ে গিয়েছে। আজ, রবিবারই ইঞ্জিনিয়ারেরা মেরামতি শুরু করবেন। সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সেই মতো সারানো শুরু হবে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ওই সেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করা হলেও যানজট এড়ানো যায়নি।
যদিও স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, করুণাময়ী সেতু যে বিপজ্জনক অনেকেরই জানা। কারণ আশির দশকে সেতুটি তৈরির পরেই একটি ত্রুটি ধরা পড়েছিল। সেতুর উপরে একটি ফাটল তখন থেকেই ছিল। কিন্তু কখনও সেটি সারানো হয়নি। তার উপর দিয়েই গাড়ি চলাচল করত। শনিবার সেতুর সেই অংশই বসে যায়।
এলাকাবাসী জানান, সেতুটির উপরের অংশ ছাড়াও সেতুর নীচে পিলারের গায়ে বেশ কিছু ফাটল রয়েছে। কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, টালিনালার নোংরা জল এতটাই দূষিত যে তা থেকে সেতুর ক্ষতি হওয়া স্বাভাবিক। কারণ টালিনালার জলে অ্যাসিডের পরিমাণ মারাত্মক। তার উপরে সেতু তৈরির পর থেকে কয়েক বার রেলিং সারাই হয়েছে। টালিনালার উপরে যে পিলারগুলি সেতুটিকে ধরে রেখেছে, পাঁচ-ছ’বছর আগে এক বার সেগুলি সারাই করেছিল সেচ দফতর। কিন্তু সেতুর উপরের অংশে কখনও হাত পড়েনি।
সম্প্রতি মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে নিউ আলিপুর, আলিপুর, চেতলার চাপ কমানোর জন্য ভারী গাড়িগুলি টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো হয়ে করুণাময়ী সেতুর উপর দিয়ে বেহালা, জোকায় পাঠানো হচ্ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy