Advertisement
০২ মে ২০২৪

‘গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে’ ভাঙচুর, আতঙ্ক লেক টাউনে

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তাঁরা শুধু আতঙ্কিতই নন, বিরক্তও। তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের মতে, বিজেপি এখন মাথাচাড়া দিচ্ছে।

দাপাদাপি: কার্যালয়ের ভাঙা কাচ। মঙ্গলবার, লেক টাউনে। নিজস্ব চিত্র

দাপাদাপি: কার্যালয়ের ভাঙা কাচ। মঙ্গলবার, লেক টাউনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৬
Share: Save:

ভরদুপুরে ভাঙচুর চালানো হল লেক টাউনে শাসক দলের এক কাউন্সিলরের কার্যালয়ে। সেই সঙ্গে বাইক-বাহিনীর দাপটে সন্ত্রস্ত হয়ে উঠল এলাকা। তবে মঙ্গলবার ওই ঘটনার পরে আক্রান্তেরা কিন্তু বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন না। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই কাউন্সিলর মানসরঞ্জন রায়ের বরং অভিযোগ, হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। তাতে নেতৃত্ব দিয়েছে তিন দাগি। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, হামলার পিছনে রয়েছেন বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসু। ব্যক্তিগত রেষারেষির জেরেই এই গোলমাল বলে মত তৃণমূলের একাংশের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুজিত ও তাঁর ঘনিষ্ঠেরা।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তাঁরা শুধু আতঙ্কিতই নন, বিরক্তও। তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের মতে, বিজেপি এখন মাথাচাড়া দিচ্ছে। এমন সময়ে এই ধরনের ঘটনা আত্মহত্যারই শামিল। মানস দীর্ঘদিন ধরেই সুজিতের ‘খাস লোক’ বলে এলাকায় পরিচিত। কিন্তু পুজোর পর থেকেই দুই নেতার কোন্দল শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ৫০-৬০টি মোটরবাইকে সওয়ার হয়ে শ’খানেক যুবক লেক টাউনের মনসাবাড়ি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে। তাদের কাছে অস্ত্রশস্ত্র ছিল বলেও অভিযোগ। মনসাবাড়ি উইমেন্স কলেজের উল্টো দিকে মানসের কার্যালয়। অভিযোগ, বাইক-বাহিনী ওই রাস্তায় ঢুকে মানসের নামে হুমকি দিতে শুরু করে। তখন অবশ্য মানস এলাকায় ছিলেন না।

খবর পেয়ে তিনি অফিসের সামনে এসে বসেন। তাঁর অফিসের বাইরে বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল পাতা ছিল। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা সেই চেয়ার-টেবিল ভাঙতে শুরু করে। মানসের অনুগামীরা খোলা বারান্দায় বসে ছিলেন। তাঁরা প্রাণভয়ে ছুটে পালান। মানস ছুটে অফিসে ঢুকে পড়েন। তাঁর অভিযোগ, সেখানেও রেহাই মেলেনি। ইট-পাথর ছুড়ে সেই ঘরের কাচের দরজা ভেঙে ফেলা হয়। মানসের অনুগামীরা বলেন, ‘‘বাইক-বাহিনীর ছেলেরা বারবার হুমকি দিচ্ছিল, ‘এখানে কারও নেতাগিরি চলবে না। এখানে আমাদের পারমিশন ছাড়া কোনও কাজ চলবে না’।’’

মানস বলেন, ‘‘এটা সমাজবিরোধীদের কাজ। এর পিছনে বিজেপি-র হাত দেখছি না। আমার দলের কেউ এমন ঘটনা ঘটাবেন বলে বিশ্বাস করি না। প্রিয়ঙ্কর মোদক, বিশ্বজিৎ দাস এবং রাজু ঘোষ নামে তিন দাগিকে আমি চিনতে পেরেছি। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি। আশা করি, তাদের গ্রেফতার করা হবে।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, যুব সংগঠনের নেতা মানসকে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে গোলমাল বাধে সুজিতের। সুজিত নাকি চাননি, তাঁর এলাকায় ‘অন্য কেউ’ কোনও কার্যকলাপ চালান। কিন্তু মানস তাতে রাজি হননি। অভিযোগ, তার পর থেকেই মানসকে ‘টার্গেট’ করা হয়। যদিও মানস নিজে তেমন অভিযোগ করেননি।

এ নিয়ে সুজিতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার নামে কেউ কোনও অভিযোগ করেননি। তাই এ নিয়ে কিছু বলব না।’’

উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘পুলিশ নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। আমি দলের উপরমহলের সঙ্গে কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lake Town Hooligans BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE