Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Shopping

লকডাউন নিয়ে বিভ্রান্তি, ফের হিড়িক কেনাকাটার

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ফের শুরু হতে চলা লকডাউনের কারণে চলছে আগাম কেনাকাটা।

জমজমাট: কিছু এলাকায় ফের চালু হবে লকডাউন, ঘোষণার পরে ভিড় মুদির দোকানে। বুধবার, বারাসতের বড়বাজার এলাকায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ

জমজমাট: কিছু এলাকায় ফের চালু হবে লকডাউন, ঘোষণার পরে ভিড় মুদির দোকানে। বুধবার, বারাসতের বড়বাজার এলাকায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৮
Share: Save:

কোথায় কোথায় শুরু কড়া লকডাউন, তা জানা নেই। তাই আগাম কেনাকাটা সেরে রাখতে বুধবার সকাল থেকে বাজারহাটে ভিড় জমালেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দারা। দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে, মাস্ক না-পরেই দোকানে দোকানে রীতিমতো হামলে পড়লেন তাঁরা।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মুখ্য রেজিস্ট্রার আক্রান্ত হওয়ার পরে এ দিন সকালে তাঁর অফিস জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছিল। তার ঠিক পাশের রাস্তাতেই দেখা গেল দোকানপাটে রীতিমতো ভিড়। আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে ফের শুরু হতে চলা লকডাউনের কারণে চলছে আগাম কেনাকাটা। কিছুটা দূরে বারাসত জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে অনেকের মুখেও মাস্কের আড়াল নেই।

সদ্য করোনা-মুক্ত হয়ে ঘরবন্দি হয়ে রয়েছেন বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এত প্রচারেও নিজের ভাল কেউ কেউ বুঝতে পারছেন না। বারাসতে তাই লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। পুলিশকে বলছি, কড়া ব্যবস্থা ছাড়া উপায় নেই।’’

এ দিন সকাল থেকে প্রচার চালিয়ে এলাকার চায়ের দোকান, হোটেল, সেলুন বন্ধ রাখতে বলেছে পুলিশ। তবু হুঁশ নেই অনেকের। কার্যত অসহায়ের সুরে বারাসত জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘রাস্তায় দাঁড় করিয়ে বোঝানো, মাস্ক দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া— আর কি কি করবে পুলিশ? দোকানদারই যদি মাস্ক না পরেন, মানুষ যদি নিজের ভাল না বোঝেন তা হলে কি ভাবে করোনা ঠেকানো যাবে!’’

স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েক দিনে উত্তর ২৪ পরগনায় লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে কোন কোন এলাকায় লকডাউন করা হবে, তা নিয়ে গত দু’দিন ধরে ধন্দে রয়েছে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশও। বুধবার কোয়রান্টিন জ়োন হিসেবে ৫২৯টি এলাকার তালিকা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই জেলার কলকাতার অংশ, শহরতলি-সহ বেশ কিছু জায়গার অবস্থা খারাপ। মূলত যেখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে বা অধিক সংক্রমণ হচ্ছে, সেইসব এলাকাই লকডাউনের আওতায় রাখা হচ্ছে। তাই সংখ্যার হেরফের হচ্ছে।’’

কিন্তু কোথায় কোথায় কড়া লকডাউন চালু হতে চলেছে, তা নিয়ে বিভ্রান্তিতে রয়েছেন এই জেলার বিধাননগর, দমদম, ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত, দেগঙ্গা, বনগাঁ, বসিরহাটের বাসিন্দারা। তাই লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই ওই সব এলাকার বাসিন্দারা প্রয়োজনীয় জিনিস জমিয়ে রাখতে দূরত্ব-বিধি শিকেয় তুলে ফের ভিড় জমিয়েছেন মুদিখানা ও আনাজের বাজারে। বারাসতের বাসিন্দা পিয়াল সরকার বলেন, ‘‘বুঝতে পারছি না এখানে লকডাউন হবে কি না। তাই বাজার করে রাখছি। খেতে হবে তো!’’

প্রতি সকালে বারাসতের হাটখোলায় বসে জেলার পাইকারি আনাজ বাজার। সেখানে দেখা গেল, অনেকেই মাস্ক না-পরেই কেনাকাটা করছেন। বামনগাছি বাজারে মাস্ক না পরে বাজার করতে এসেছিলেন এক যুবক। পুলিশ বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। সমস্যায় পড়েছেন বিক্রেতারাও। দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা বাজারের আনাজ বিক্রেতা মান্নান আলি বলেন, ‘‘দোকান খুলতে পারব কি না, বুঝতে পারছি না।’’ তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, প্রচার করে কোথায় কোথায় লকডাউন থাকবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। কোয়রান্টিন জ়োনগুলিতে কড়া নজরদারির পাশাপাশি মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরোলেই আটক করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE