ইমরান খান
সিআইটি রোডের বাসিন্দা ইমরান খানের খুনের পিছনে কি রয়েছে ক্রিকেট বেটিং অথবা জুয়ার টাকা— প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই ধারণা তদন্তকারীদের।
সোমবার সকালে প্রগতি ময়দান থানার পিছনে আড়ুপোতা রোডের পাশের খাল থেকে উদ্ধার হয় ইমরানের দেহ। তাঁর মাথার পিছনে ক্ষত, ডান কান কাটা এবং মুখে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনাস্থলেই পুলিশ জানিয়েছিল, খুন হয়েছেন ইমরান এবং একাধিক ব্যক্তি জড়িত এর পিছনে। কারণ, যে জায়গায় দেহ মিলেছে সেই ঝোপঝাড়় এমন ভাবে ভেঙেছে যা দেখে তদন্তকারীদের মনে হয়েছে, খুনের সময়ে আততায়ীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়েছিল ইমরানের। তা ছাড়াও গাড়ি থেকে মিলেছে কিছু বোতল এবং প্লাস্টিকের গ্লাস। বোতলগুলিতে কিছু তরলও মিলেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, ইমরানকে পরিকল্পনা করে পরিচিতেরা খুন করেছে।
ইমরানের পরিবার সূত্রের খবর, এন্টালির ফুটপাতে তাঁর কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে। পাশাপাশি টাকার জন্য গত দু’মাস ধরে তিনি ভাইয়ের গতিধারা নিয়ে রাতে বেরোতেন শাটল্ খাটতে। উপার্জনের জন্য এমনটা করতেন মনে হলেও পরে ইমরানের পরিজন ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, আগে তিনি ক্রিকেট বেটিং এবং জুয়া খেলতেন। আইপিএল-এ বেটিং করতেন তিনি। সঙ্গে জুয়াও চলত। এ সবের কারণেই বন্ধুদের কাছে প্রচুর টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
সম্প্রতি সেই টাকার তাগাদা দিয়ে কয়েক জন বাড়িতে এসে হুমকিও দিয়ে যায়। যাদের মধ্যে ছিল এন্টালির এক বন্ধু, যে ইমরানের থেকে অনেক টাকা পেত। পুলিশের অনুমান, সেই টাকা মেটাতে না পারায় ইমরানকে খুন করা হয়েছে।
ইমরানের পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, তাঁর বাবা হাফিজ খান কিছু বন্ধুর ধার মিটিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু ধার এখনও রয়ে গিয়েছে। যার জন্যে নিয়মিত বাড়িতে পাওনাদারেরা হানা দিত। তাদের হাত থেকে বাঁচতে মাস দু’য়েক আগে ইমরান বাড়ি থেকে পালান বলেও পরিবার সূত্রে খবর।
তদন্তকারীদের আরও অনুমান, আগে থেকেই জায়গা ঠিক করে রেখেছিল খুনিরা। কারণ, রাত ১১-১২ টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরোনোর পরে রাত দুটো নাগাদ ইমরান খুড়তুতো ভাই পারভেজকে ফোন করে চৌবাগা যাওয়ার রাস্তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যে রাস্তার উপরে সোমবার সকালে ইমরানের দেহ ও গাড়ি মিলেছে সাধারণত রাতে ওই রাস্তা কেউ ব্যবহার করেন না। আর ওই রাস্তার ওইটুকু অংশে কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। যদিও বেশ কয়েকটি জায়গা যেগুলির সঙ্গে বাইপাসের যোগ রয়েছে সেখানে ক্যামেরা রয়েছে। সে সব খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, সোমবার পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট থেকে ইমরান গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পার্ক সার্কাস কানেক্টর হয়ে পরমা আইল্যান্ডে যে পৌঁছন সে ফুটেজ মিলেছে। তার পরেই ইমরান খুন হন। ফলে ওই সময়ে যাঁরা গাড়িতে ছিলেন তাঁরাই ইমরানকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু তারা কারা, সেটাই এখন খুঁজছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy