Advertisement
০৭ মে ২০২৪

ঘর থেকে প্রাক্তন সহ-উপাচার্যের মৃতদেহ উদ্ধার

শনিবার সকালে ৪০এ, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী আবাসনের দোতলার একটি ফ্ল্যাটের মেঝে থেকে তাঁকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ।

আশিসবাবুর ফ্ল্যাটে তদন্তকারীরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

আশিসবাবুর ফ্ল্যাটে তদন্তকারীরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

আবাসনের দোতলার ঘরের মেঝে থেকে উদ্ধার হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য আশিসস্বরূপ বর্মার দেহ। এই ঘটনায় পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

শনিবার সকালে ৪০এ, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী আবাসনের দোতলার একটি ফ্ল্যাটের মেঝে থেকে তাঁকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ। আনুমানিক পঞ্চান্ন বছর বয়সি আশিসবাবুর কী ভাবে মৃত্যু হল তা জানতে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহের পাশ থেকে হিন্দিতে লেখা একটি চিরকুট মিলেছে। তাতে লেখা রয়েছে, ‘একাকিত্ব গ্রাস করেছে। এই কাজের জন্য কেউ দায়ী নয়।’ কিন্তু চিরকুটের হাতের লেখা আশিসবাবুরই কি না, সে ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত নয়। নিশ্চিত হতে হস্তরেখা বিশারদ ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানান তদন্তকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ডিসেম্বরে তাঁর চার বছরের সহ-উপাচার্য পদের মেয়াদ শেষ হয়েছিল। ওই সময় তিনি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন, তাঁকে আরও কিছু দিন ওই ফ্ল্যাটে থাকতে দেওয়া হোক। সেই অনুরোধ মেনেই তাঁকে সেখানে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। তিনি কয়েক মাসের জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বও সামলেছিলেন। বর্তমানে বেসরকারি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আশিসবাবু।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জেনেছে, ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন প্রাক্তন সহ-উপাচার্য। ফ্ল্যাটে একাধিক ঘর। এ দিন সকাল দশটা নাগাদ ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখে তাঁর পরিচারিকা ঢুকে দেখেন, একটি ঘরের মেঝেয় মাথায় বালিশ দিয়ে শুয়ে রয়েছেন আশিসবাবু। তাঁর পরনে ছিল চেক কাটা হাফ প্যান্ট ও টি-শার্ট। অনেক বার ডেকেও সাড়া না পেয়ে পরিচারিকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষ খবর দেন টালিগঞ্জ থানায়। পুলিশ গিয়ে দুপুরেই আশিসবাবুর দেহ ময়না-তদন্তে পাঠায়। ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে বাইরে থেকে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীরা জানার চেষ্টা করছেন, কী কারণে ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ছিলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর রক্তে শর্করার পরিমাণ প্রায়ই ওঠানামা করছিল। ঘর থেকে প্রচুর সিগারেট ও অবসাদ কাটানোর ওষুধ মিলেছে। তিনি ধূমপান ছাড়ার ওষুধও নিয়মিত খেতেন বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা।

এ দিন আশিসবাবুর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই ফ্ল্যাটে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ, রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু এবং অন্য আধিকারিকেরা। পুলিশকে তাঁরা জানান, আশিসবাবু আদতে বারাণসীর বাসিন্দা। তাঁর বৃদ্ধা মা সেখানে থাকেন। এ দিন দুপুরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বৃদ্ধার নম্বর জোগাড় করে পুলিশ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এ দিন রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘ডিসেম্বরে তাঁর কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছিল।

কিন্তু উনি ছ’মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসনে থাকার অনুমতি চেয়েছিলেন। নিয়মিত ভাড়াও দিতেন। আকস্মিক এই মৃত্যু দুঃখজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Former Vice Chancellor Jadavpur University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE