Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হয়নি কাজ, টাকা ফেরত গেল বঙ্কিম-প্রকল্পের

দখল: এখন এমনই অবস্থা বঙ্কিম পার্কের। রবিবার, পঞ্চাননতলা রোডে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দখল: এখন এমনই অবস্থা বঙ্কিম পার্কের। রবিবার, পঞ্চাননতলা রোডে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪৬
Share: Save:

হাওড়ার যে বাড়িতে থাকতেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সেটির সংলগ্ন এলাকা ঘিরে সংগ্রহশালা ও প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হওয়ার কথা ছিল। এর জন্য গ্রিন সিটি প্রজেক্ট থেকে বরাদ্দ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকাও। কিন্তু কাজ না হওয়ায় সেই টাকা ফেরত গেল হাওড়া পুরসভা থেকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকা বর্তমানে বেআইনি ভাবে বিয়েবাড়ি ভাড়া দেওয়া ও মঙ্গলাহাটে আসা গাড়ি পার্কিং-এর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। অভিযোগ, আগের পুরবোর্ডে থাকা তৃণমূলের কিছু কর্তার ‘স্বজনপোষণ’-এর জেরেই আটকে গিয়েছে প্রকল্পটি।

চাকরির সুবাদে ১৮৮১ সাল থেকে ১৮৮৬ পর্যন্ত হাওড়ায় বসবাস করেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র। হাওড়া ময়দান সংলগ্ন ২১২ নম্বর পঞ্চাননতলা রোডের যে বাড়িতে তিনি থাকতেন, সেই বাড়ি এবং সংলগ্ন বেশ কিছুটা জমিতে তৈরি হয়েছিল বঙ্কিম পার্ক। পরে বাড়িটি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার কথা চিন্তা করে হাওড়া পুর নিগম উদ্যোগী হয়। ২০১৫ সালের অগস্ট মাসে হেরিটেজ কমিশনের প্রতিনিধিরা বাড়িটি পরিদর্শন করেন। তৎকালীন মেয়র রথীন চক্রবর্তী ওই বাড়ি, পার্ক এবং সংলগ্ন এলাকায় একটি বঙ্কিমচন্দ্রের স্মৃতিতে সংগ্রহশালা ও প্রেক্ষাগৃহ তৈরির বিষয়ে উদ্যোগী হন। ২০১৭ সালে এর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন পায় তৎকালীন তৃণমূল পুরবোর্ড।

তার পরে দু’বছর কেটে গেলেও কেন শুরু হয়নি কাজ?

হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নিজের পরিচিত ঠিকাদারদের কাজ দেওয়া নিয়ে ওই সময়ে পুরবোর্ডে থাকা কর্তাদের মধ্যে গোলমাল বাধে। প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আসলে স্বজনপোষণের জন্যই প্রকল্পটি বিশ বাওঁ জলে চলে যায়।’’

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘আমি ওই পার্কের পাশেই থাকি। পার্কটি বর্তমানে বেআইনি ভাবে বিয়েবাড়ির জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলাহাটের সমস্ত গাড়িও ওখানে পার্ক করা হয়। এলাকার বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি।’’

হাওড়ার পুর কমিশনার তথা প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণ এই প্রসঙ্গে বলেন,“গ্রিন সিটি প্রজেক্ট থেকে ৫ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল কয়েক বছর আগে। কিছু বিভিন্ন কারণে কাজ শুরু করা যায়নি”। তিনি জানান, প্রকল্পটি ওই জায়গায় না করে হাওড়ার বিজয়ানন্দ পার্কে স্থানান্তরিত করার একটি প্রস্তাব আসে। কিন্তু একটি প্রকল্পের স্থান পরিবর্তন করতে গেলে রাজ্য সরকারের বিশেষ অনুমোদন লাগে। সেই অনুমোদন মেলেনি। তাই টাকাও ফিরে গিয়েছে। কী ভাবে কাজটি শুরু করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankim Chandra Chatterjee Park Howrah City Project
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE