Advertisement
০২ মে ২০২৪
Dum Dum

মেয়ের দেহ নিয়ে দু’দিন বাড়িতে বৃদ্ধ

পুলিশ জানিয়েছে, শাশ্বতী ছিলেন অটিস্টিক। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। থাকতেন বাবা বিষ্ণুপদ মিত্রের সঙ্গে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

দু’দিন আগে পরিচারিকাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন দরজা থেকে। তার পরে রোজ সকালে নিয়ম করে সেই পরিচারিকা এলেও তাঁকে আর বাড়িতে ঢুকতে দেননি গৃহকর্তা। এরই মধ্যে সপ্তমীর সন্ধ্যা থেকে ওই বাড়ির আশপাশে গেলে পাওয়া যাচ্ছিল প্রবল দুর্গন্ধ। দক্ষিণ দমদমের যুগিপাড়া এলাকায় সেই বৃদ্ধের পড়শিরা অনুমান করেছিলেন, বাড়ির অসুস্থ মেয়ের কোনও অঘটন ঘটেছে। কিন্তু গৃহকর্তা পড়শিদের জানিয়ে দেন, মেয়ে সুস্থ আছে। ঢুকতে দেওয়া হয়নি চিকিৎসক, এমনকি পুলিশকেও। শেষ পর্যন্ত শনিবার, অষ্টমীর সকালে পুলিশ বাড়িতে ঢোকে। সেখানেই মেলে শাশ্বতী মিত্র (৪৬) নামের এক মহিলার পচাগলা দেহ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দিন দুয়েক আগেই সম্ভবত হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার।

পুলিশ জানিয়েছে, শাশ্বতী ছিলেন অটিস্টিক। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। থাকতেন বাবা বিষ্ণুপদ মিত্রের সঙ্গে। বিষ্ণুপদবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি ভেবেছিলেন, মেয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বিষ্ণুপদবাবুর এক নিকটাত্মীয় দমদম এলাকার প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। ভিন্ রাজ্যে গিয়ে আক্রান্ত হন তিনি। পরে তাঁর মৃত্যুও হয়।

বিষ্ণুপদবাবুর পড়শিরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তাঁরা গিয়ে ওই বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, মেয়ে সুস্থ আছেন। তিনি ঘুমোচ্ছেন। তবু তাঁরা এক বার শারীরিক পরীক্ষার জন্য রাতে এক চিকিৎসককে ডেকে আনেন। বৃদ্ধ তাঁকেও বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেননি। তত ক্ষণে দুর্গন্ধ আরও বেড়ে গিয়েছে। রাতে দমদম থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ আসে। পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধ তাঁদের বলেন, “এত রাতে কেন এসেছেন? মেয়ে ঘুমোচ্ছে।” তিনি ঢুকতে দেননি পুলিশকে। ফিরে যায় তারা।

আরও পড়ুন: ব্যবস্থাপনাতেই ‘সীমাবদ্ধ’ রায়, অষ্টমীতে পথে জনজোয়ার​

বেশি রাতে বিষ্ণুপদবাবুর এক আত্মীয়কে ডাকা হয়। তাঁকে বাড়িতে ঢুকতে দেন বৃদ্ধ। তিনি পড়শিদের জানান, শাশ্বতীর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে বিছানায়। কিন্তু বিষ্ণুপদবাবু বিশ্বাস করছেন না যে, তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে ফের পুলিশ আসে। তাঁরা বিষ্ণুপদবাবুকে বোঝান। তার পরে দরজা খুলে দেন তিনি। পুলিশ এক জন চিকিৎসককে নিয়ে আসে। তিনিই শাশ্বতীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dum Dum Dead Father Daughter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE