Advertisement
১১ মে ২০২৪
Murder

ভাইকে খুনে ‘নিষ্ঠুর’ স্ত্রীর ফাঁসি চান দাদা

স্ত্রীকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হোক, গার্ডেনরিচ খুনে দাবি স্বামীর।

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ঋজুকে খুন করা হয়।

তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ঋজুকে খুন করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০২:১৫
Share: Save:

বাবা-মা ছোট ছেলেকে বেশি আদর দিলে সহ্য হত না বৌদি প্রিয়াঙ্কার। মাঝেমধ্যেই স্বামী সুব্রত দাসের কাছে তা নিয়ে নালিশও জানাত সে। তবে তাতে কর্ণপাত করতেন না সুব্রত দাস। কিন্তু এর পরিণতি যে এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা ভাবতেও পারেননি তিনি। আট বছরের ভাই ঋজু দাসকে ড্রামের মধ্যে জলে ডুবিয়ে খুন করেছে তাঁরই স্ত্রী, এ কথা জানার পরে সারা রাত দু’চোখের পাতা এক হয়নি সুব্রতের। ভাইয়ের মৃত্যুর ‘আসল’ কারণ জানতে পেরেও তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি।

গত অক্টোবরেই ২০ বছর বয়সি প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সুব্রতের। সেই স্ত্রী যে এতটা ‘নিষ্ঠুর’ হতে পারে, তা ভাবতেও পারছেন না সুব্রত। গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডের বাড়িতে বসে বুধবার তিনি বলেন, ‘‘ঋজু খেতে ভালবাসত। মা ওকে একটু বেশি খাবার দিলে আমার স্ত্রী আমার কাছে নালিশ করত। যদিও ওর কথায় আমি পাত্তা দিতাম না। কিন্তু ও যে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে, তা জানতাম না।’’ ভাইকে খুনের জন্য স্ত্রীয়ের কঠোর শাস্তির দাবি করছেন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে সুব্রত বলছেন, ‘‘ড্রামের মধ্যে ভাই স্নান করতে নামার পর ঢাকনা বন্ধ করে ধরে রেখেছিল প্রিয়াঙ্কা। ভাই ওই সময়ে কতটা যন্ত্রণায় ছটফট করে মরেছে, সেটা ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে। স্ত্রীকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হোক, এখন এটাই চাই।’’

গত শুক্রবার গার্ডেনরিচের বাড়িতে শৌচালয়ে রাখা জলভর্তি লম্বা ড্রামের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ঋজুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হয়েছিল, এ নিছকই দুর্ঘটনা। কিন্তু সেই তত্ত্ব মন থেকে মেনে নিতে পারেননি সুব্রত। তাই বারবারই স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাকে প্রশ্ন করে জানতে চেয়েছিলেন যে, ঘটনার দিন ঠিক কী ঘটেছিল। প্রশ্নের মুখে গত সোমবার রাতে ভেঙে পড়ে প্রিয়াঙ্কা। নিজেই স্বামীর কাছে স্বীকার করে, ড্রামের মধ্যে সে-ই ডুবিয়ে মেরেছে ঋজুকে। প্রিয়াঙ্কার এই স্বীকারোক্তির পরে মঙ্গলবার সকালে মেটিয়াবুরুজ থানার পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। বুধবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৯ জুলাই পর্যন্ত প্রিয়াঙ্কার পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

ছেলেকে খুনের দায়ে বৌমার কঠোর শাস্তির দাবি করছেন ঋজুর বাবা-মাও। ঋজুর বাবা, পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী দুখিরাম দাস মানসিক ভাবে এতই বিপর্যস্ত যে, এ দিন কাজে যেতে পারেননি। বলছেন, ‘‘ঋজু খুব মিশুকে ছিল, পাড়ায় সকলে ওকে ভালবাসত। তার সঙ্গে কী ভাবে এমনটা করতে পারল!’’ আর মা ডলি বলেন, ‘‘খুনি বৌমা শাস্তি পেলে ছেলের আত্মা হয়তো শান্তি পাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Capital Punishment Garden Reach
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE