Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
কলকাতা বিমানবন্দর

এটিসি-র আপত্তি, তবু কমলো প্রস্তাবিত টাওয়ারের উচ্চতা

কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৭ মিটার উঁচু টাওয়ারটি তৈরির কাজ ৩২ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:০২
Share: Save:

কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকলেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৭ মিটার উঁচু টাওয়ারটি তৈরির কাজ ৩২ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ তারিখ।

এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট এটিসি অফিসারদের গিল্ড। কর্তৃপক্ষের কাছে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জিও জানিয়েছে তারা। অফিসারদের অভিযোগ, মাত্র বছরখানেক আগে ঠিক হয়েছিল কলকাতায় এটিসি টাওয়ারের উচ্চতা হবে ১১২ মিটার। ভারতে আর কোনও বিমানবন্দরে এত উঁচু টাওয়ার নেই। অথচ এখন বলা হচ্ছে, কলকাতায় ৫৭ মিটার উঁচু টাওয়ার তৈরি করা হবে। বর্তমানে কলকাতা বিমানবন্দরে বিমান নামা-ওঠায় এটিসি-র নজরদারি টাওয়ারটির উচ্চতা ৩৫ মিটার।

এটিসি অফিসারদের অভিযোগ, ২০১৩ সালে কলকাতা বিমানবন্দরে হওয়া নতুন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের সামনে নতুন অনেকগুলি পার্কিং বে করা হয়েছে। বিমানে ওঠানামার জন্য টার্মিনালের গায়ে রয়েছে অনেকগুলি অ্যারোব্রিজ। এই পার্কিং বে এবং অ্যারোব্রিজ থেকে বিমান রানওয়েতে যাতায়াতের কিছুটা অংশ এখনকার টাওয়ারে বসে দেখা যায় না। এটিসি গিল্ডের অভিযোগ, নতুন টাওয়ারের উচ্চতা ৫৭ মিটার হলেও ওই গতিবিধি অনেকটাই তাঁরা দেখতে পাবেন না। টাওয়ারটি ১১২ মিটার উঁচু হলে অনায়াসে বিমানের ওই গতিবিধি দেখা যেত বলে জানিয়েছে গিল্ড।

অফিসারদের অভিযোগ, বছর খানেক আগে ১১২ মিটার উঁচু টাওয়ার তৈরির কথা ঘোষণা করেও এ বার সেই পরিকল্পনা বদলে ফেলেছেন কর্তৃপক্ষ। অফিসারদের গিল্ডের পূর্বাঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক কৈলাশপতি মণ্ডল চিঠি লিখে কর্তৃপক্ষের রিজিওনাল এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর (আরইডি) সঞ্জয় জৈন এবং তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়কে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। বিমানবন্দরের পরামর্শদাতা কমিটির চেয়ারম্যান সৌগতবাবু।

বিমানবন্দরের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্রের কথায়, ‘‘পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই ঠিক হয়েছে, ৫৭ মিটারের চেয়ে উঁচু টাওয়ার বসানো যাবে না। প্রতিটি বিমানবন্দরের জমির পরিমাণ, রানওয়ে থেকে টাওয়ারের দূরত্বের উপরে তার উচ্চতাও নির্ভর করে।’’

তা হলে গত বছর কেন বলা হয়েছিল, ১১২ মিটার উঁচু টাওয়ার হবে? সঞ্জয় জৈন বলেন, ‘‘সম্ভবত তা প্রস্তাব ছিল। এ রকম আরও কিছু প্রস্তাব আমাদের কাছে এসেছিল। চারটি জায়গা দেখা হয়েছিল। শেষে ঠিক হয়েছে, এখনকার টার্মিনালের ঠিক উল্টো দিকে নতুন টাওয়ারটি তৈরি হবে। ওখানে ৫৭ মিটারের বেশি উঁচু টাওয়ার তৈরির অনুমতি পাওয়া যাবে না।’’ এর ফলে বিমান যাতায়াতের যে অংশ সরাসরি দেখা যাবে না বলে অফিসারেরা অভিযোগ করছেন, সেই অংশ রেডারের মাধ্যমে টাওয়ারে বসে মনিটরে দেখতে পাওয়া যাবে বলেও সঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন।

অফিসারদের অভিযোগ, দিল্লিতে ১০১ মিটার ও মুম্বইয়ে ৮৩ মিটার উঁচু টাওয়ার তৈরি হয়েছে। সেখান থেকেও রানওয়ের দূরত্ব বেশি নয়। তা অবশ্য মানতে চাননি সঞ্জয়বাবু। তাঁর দাবি, দিল্লিতে জমির পরিমাণ অনেক বেশি। মুম্বইয়ের টাওয়ার রানওয়ে থেকে অনেক দূরে। কলকাতার এটিসি অফিসারদের অভিযোগের কথা তিনি শুনেছেন। তবে সঞ্জয়বাবুর কথায়, ‘‘সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার, তা দিল্লি থেকেই নেওয়া হয়েছে। আমার কিছু করার নেই।’’

সৌগতবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ গুরুতর। বিষয়টি বিমানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। উত্তরের অপেক্ষায় রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE