—প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা কলকাতায় গত বারের চেয়ে কম হলেও পুর প্রশাসনের কপালে ভাঁজ পড়ছে ডেঙ্গি ভাইরাসের ‘টাইপ’ পরিবর্তনে। কলকাতায় এ বার ডেঙ্গ-২ টাইপে আক্রান্তের প্রবণতা দেখা দেওয়ায় নতুন করে সমস্যায় পড়েছে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। সেটা মাথায় রেখেই আগামী বছরে ডেঙ্গিবাহী মশা দমনের কাজে নতুন পরিকল্পনা করছে পুর প্রশাসন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, শহরের যে সব এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলেছে, সেই এলাকার রাস্তা ধরে ওই রোগ প্রতিরোধের কাজে নামবে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। আপাতত এমন ৬০টি রাস্তা চিহ্নিত করেছে পুর প্রশাসন। আগামী বছরের ফেব্রয়ারি মাস থেকে সেই কাজ শুরু হবে।
কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি জানান, চলতি বছরে প্রায় ২৫০০ বাসিন্দা কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের নাম-ঠিকানা সবই পুরসভার কাছে আছে। সেই তালিকা নিয়েই ২০১৯ সালে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ শুরু হবে। তাতে শহরের ৬০টি এলাকার রাস্তা চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলির কোথায় জল জমে থাকে, কোথায় জঞ্জাল জমে এবং কোথায় মশার বংশবৃদ্ধি হয়, তার উপরে লাগাতর নজর রাখা হবে। অতীনবাবু বলেন, ‘‘আমরা এতকাল ডেঙ্গির এক ধরনের ভাইরাস পাচ্ছিলাম। এ বার ডেঙ্গ-২ টাইপের সংক্রমণ ধরা পড়ছে। তা বিপজ্জনক। মাত্র দু’-তিন দিনের জ্বরে মৃত্যু হয়েছে, এমন উদাহরণও আছে।’’ তাই ওই টাইপের ডেঙ্গির ভাইরাস নাশ এ বার পুরসভার বড় চ্যালেঞ্জ। সে ব্যাপারেই নানা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পুর সূত্রের খবর, গত সেপ্টেম্বর থেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে একাধিক মৃত্যু ঘটেছে। ল্যাবরেটরিতে রাখা ওই ডেঙ্গি-আক্রান্তদের রক্ত পরে পরীক্ষা করে বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইসেড। তখন অতীনবাবু জানিয়েছিলেন, সেই রক্তে ডেঙ্গ-২ টাইপ ভাইরাস মিলেছে। গত দু’মাসে আরও কয়েক জনের রক্ত পাঠিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গ-২ টাইপে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এর পরেই পুরসভা সিদ্ধান্ত নেয়, ওই টাইপের জন্য প্রস্তুত হতে হবে পুরসভাকেও।
ডেপুটি মেয়র জানান, এ বছর যে এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এই এলাকার কোন রাস্তায় কোন বাড়িতে ডেঙ্গির সংক্রমণ হয়েছে, মানচিত্র করে তা রেকর্ড করা হচ্ছে। নতুন বছর থেকে সেই মানচিত্র নিয়ে কাজ শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবির করবে ডেঙ্গি প্রতিরোধের দল। বাড়ি বাড়ি যাবেন কর্মীরা। মশার বংশবৃদ্ধি রোধে নজর রাখবেন। যেখানে কর্মীরা পৌঁছতে পারবেন না, সেখানে পাঠানো হবে ড্রোন। ওই ৬০টি রাস্তা ধরে কাজ চললেও নজর থাকবে শহরের সর্বত্র। পুরসভার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায় জানান, ডেঙ্গির ৫টি টাইপ। কলকাতায় চারটি টাইপ হতে পারে। সবচেয়ে বিপজ্জনক ডেঙ্গ-২। তাই ডেঙ্গিবাহী মশা নাশ করা এখন প্রধান কাজ। যা শহরবাসীর সহায়তা ছাড়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy