ফাইল চিত্র।
সপ্তাহ দু’য়েক আগে কৌতূহলী চোখে জোকার গুরুসদয় মিউজিয়ামে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন কলকাতায় নিযুক্ত ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার ব্রুস বাকনেল। কাচের বাক্সে রাখা একটি সুজনি কাঁথার সামনে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি। কাঁথার গায়ে এক দিকে ব্রিটিশ, অন্য দিকে ভারতীয় সেনার নকশা করা। একদৃষ্টে খানিক ক্ষণ তাকিয়ে থেকে ব্রুস বলেন, ‘‘ব্রাভো!’’
সঙ্গী গ্যালারি-অ্যাসিস্ট্যান্ট বললেন, ‘‘এ জিনিস ক’দিন আর এ ভাবে দেখাতে পারব জানি না। টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে আমাদের।’’ কিছু করা যায় কি না, দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার।
তাঁর মতো সাহায্যের আশ্বাস এসেছে রাজ্য সরকারের কাছ থেকেও। কারণ, গত নভেম্বরেই তাঁদের সঙ্গে গুরুসদয় মিউজিয়ামের চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে বস্ত্র মন্ত্রক। তার পর থেকেই কর্মীদের বেতন বন্ধ। এই প্রেক্ষিতে আজ, বৃহস্পতিবার ব্রতচারী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা গুরুসদয় দত্তের ১৩৭তম জন্ম-জয়ন্তীতে আর্থিক অনুদান সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছেন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ।
গুরুসদয় মিউজিয়ামের সচিব বিজনকুমার মণ্ডল জানান, গুরুসদয় দত্তের জন্ম-জয়ন্তীতে প্রতি বছরের মতো এ বারেও লোকসংস্কৃতি এবং লোকশিল্প সংক্রান্ত একাধিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। থাকছে আলোচনাচক্র ‘দ্য লাইফ অব আওয়ার হেরিটেজ’। বক্তা হিসেবে থাকার কথা ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কিউরেটর-সেক্রেটারি জয়ন্ত সেনগুপ্ত সহ বিশিষ্টদের। বিজনবাবু বলেন, ‘‘মিউজিয়াম সঙ্কটে। তাই মিউজিয়ামের বিশেষ নিদর্শনের ছবি সহ টি-শার্ট ও নানা ব্যবহারিক জিনিস বিক্রির পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমরা আর্থিক অনুদান দেওয়ার জন্যও অনুরোধ জানাব।’’
১৯৮৪ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ব্রতচারী সমিতির সঙ্গে চুক্তি হয় তৎকালীন রাষ্ট্রপতির। তার পর থেকে বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনে মিউজিয়াম চলত। পরে দায়িত্ব হস্তান্তরিত হয় কেন্দ্রীয় বস্ত্র
মন্ত্রকের হাতে। সম্প্রতি সেই চুক্তিও শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। মিউজিয়ামে অবিভক্ত বাংলার হস্তশিল্প এবং লোকশিল্পের নানা নিদর্শন রয়েছে। গুরুসদয় দত্ত
নিজেও বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করেছিলেন।
জয়ন্তবাবু বলছেন, ‘‘মিউজিয়ামটির গুরুত্ব মানুষের কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। সরকার তো বটেই, ব্যক্তিগত সাহায্যও দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy