Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গাছ-জলে নড়বড়ে ভিত, জরুরি সারাই জাদুঘরে

বেশ কিছু দিন আগে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এমনটা ধরা পড়ায় রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন জাদুঘরের কর্তারা। প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রীর সংরক্ষণও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা।

জাদুঘর ভবনের গায়ে এ ভাবেই একাধিক গাছ জন্মেছিল। সম্প্রতি তা পরিষ্কার করা হয়। নিজস্ব চিত্র

জাদুঘর ভবনের গায়ে এ ভাবেই একাধিক গাছ জন্মেছিল। সম্প্রতি তা পরিষ্কার করা হয়। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৪
Share: Save:

নিকাশি নালার পথ বন্ধ। জল জমে যাচ্ছে ক্রমাগত। সঙ্গে পুরনো ভবনের যেখানে-সেখানে গাছ জন্মাচ্ছে। ভবনের গায়ে দিব্যি মাথা তুলছে গাছের শিকড়। জমা জল ও গাছের শিকড়— এতেই নড়ে যেতে বসেছিল ভারতীয় জাদুঘরের ভিত!

বেশ কিছু দিন আগে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে এমনটা ধরা পড়ায় রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন জাদুঘরের কর্তারা। প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রীর সংরক্ষণও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। এর পরেই ২০০ বছর পেরোনো ওই প্রাচীন ভবনকে কী ভাবে সুরক্ষিত করা যায়, তা নিয়ে বিশেষ বৈঠকে বসেন কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি জরুরি ভিত্তিতে ভারতীয় জাদুঘরের ভিত মজবুত করার পাশাপাশি ভবনের গায়ে যত গাছ জন্মেছে, সেগুলি পরিষ্কার করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আটকাতে বিশেষ পরিকল্পনাও করছেন জাদুঘর কর্তৃপক্ষ।

জাদুঘর সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে যখন মূল ভবন সংস্কারের কাজ হয়েছিল, তখন থেকেই সমস্যার শুরু। সংস্কারের কাজ চলাকালীন ইট-পাথর সহ আরও নানা জিনিস জাদুঘরের নিকাশি নালার মধ্যে ক্রমাগত জমে গিয়েছিল। প্রথমে সেটা টের পাওয়া যায়নি। কিন্তু পরে জাদুঘরের কর্তারা লক্ষ করেন, ভবনের লনের ভিতরে জল জমে যাচ্ছে। আরও অনেক জায়গায় জল উপচে পড়ছে। পরীক্ষা করে দেখা যায়, সংস্কারের কাজের সময়ে যে সব জিনিসপত্র বাতিল করা হয়েছিল, সেগুলির অবশেষ পড়ে জাদুঘরের নিজস্ব নিকাশি ব্যবস্থার মুখ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আর তার জেরেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভবনের ভিত। ২০০ বছরের পুরনো ভবনের ভিত চুঁইয়ে ভিতরে ঢুকছে জল।

জাদুঘরের অধিকর্তা রাজেশ পুরোহিত বলেন, ‘‘জল বেরোতে পারছিল না। কারণ, নিকাশি নালার মুখ প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অন্য দিকে জল ঢুকে ভিত ক্রমেই হয়ে পড়ছিল দুর্বল। বিষয়টা ধরা পড়ার পরেই জরুরি ভিত্তিতে তা সারানো হয়েছে।’’

শুধু জমা জলই নয়, মূল ভবনের গায়ে যখন-তখন গাছ জন্মাচ্ছিল বলেও জানাচ্ছেন জাদুঘরের কর্তারা। কয়েকটি বেশ বড়ও হয়ে গিয়েছিল। সেগুলি নজরে পড়ার পরেই পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘এমনিতেই পুরনো বাড়ি। গাছের শিকড় যাতে কোনও ভাবে ক্ষতি করতে না পারে, সে দিকে নজর রাখা হয়। কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছিলভবনের গায়ে গাছ জন্মাচ্ছে। সেগুলি পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।’’

অধিকর্তা জানাচ্ছেন, ভবনের গায়ে যাতে স্থায়ী ভাবে গাছ জন্মানো বন্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। জাদুঘর ভবনটি হেরিটেজ হওয়ায় এখানে সংস্কারের কোনও কাজ করতে গেলে তা হেরিটেজ শৈলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। তাই এ ব্যাপারে হেরিটেজ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জাদুঘর সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE