ছবি: সংগৃহীত
এ যেন সিনেমার দৃশ্যকেও হার মানায়!
নতুন কেনা মোটরবাইক নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন দুই বন্ধু। রবিবার রাতে গার্ডেনরিচ থেকে মাঝেরহাট যাওয়ার পথে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় দুই আরোহীকে নিয়ে উড়ালপুল থেকে সটান নীচে পড়ে গেল সেই বাইক। পুলিশ জানিয়েছে, গার্ডেনরিচ উড়ালপুলে পাহাড়পুর এলাকার কাছে ওই ঘটনা ঘটে। গুরুতর জখম অবস্থায় দুই বন্ধু এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত ৮ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের উদ্বোধন করেন। প্রায় ৪.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই উড়ালপুল দক্ষিণ কলকাতার গার্ডেনরিচ থেকে শুরু হয়ে শেষ হচ্ছে মাঝেরহাট সেতুর কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, সপ্তাহখানেক আগে কেনা মোটরবাইক নিয়ে রবিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ গার্ডেনরিচের বাসিন্দা সাহেব আলম ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বন্ধু আরাফত সিদ্দিকি।
পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের মাথাতেই ছিল হেলমেট। তবে বাইকে কোনও নম্বর প্লেট ছিল না। দুই বন্ধু গার্ডেনরিচ উড়ালপুল ধরে মাঝেরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন। বেপরোয়া গতিতে চলা মোটরবাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়পুরের কাছে উড়ালপুলের রেলিংয়ে সজোর ধাক্কা মারে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রেলিংয়ে ধাক্কা মারার পরেই মোটরবাইক নিয়ে দু’জন
নীচে পড়ে যান। সেই সময়ে কাছেই ছিলেন পশ্চিম বন্দর থানার পুলিশকর্মীরা। তাঁরাই ওই দু’জনকে দেখতে পেয়ে দ্রুত উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
উদ্বোধনের মাস দেড়েকের মধ্যেই গার্ডেনরিচ উড়ালপুলে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটায় পুলিশের নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, চালু হওয়ার পর থেকে উড়ালপুলের দু’দিকে টহলদার পুলিশের দেখাই পাওয়া যায় না। যানজট এড়াতে বন্দর এলাকা থেকে শহরের অন্যত্র যেতে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলকেই ব্যবহার করছেন অধিকাংশ মানুষ। কিন্তু সেখানে নজরদারি নেই বললেই চলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের একাধিক জায়গায় বিপজ্জনক বাঁক রয়েছে। এ রকম উড়ালপুলে ট্র্যাফিক পুলিশের ২৪ ঘণ্টা নজরদারি প্রয়োজন। না হলে আগামী দিনে আরও বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারে।’’ পুলিশকর্মীদের একাংশেরও অভিযোগ, ‘‘মা উড়ালপুলের মতো গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের পথেও বহু জায়গায় বাঁক রয়েছে। চালক একটু অসাবধান হলেই বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’’
রবিবার রাতের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘গার্ডেনরিচ উড়ালপুল চালু হওয়ার পর থেকেই পুলিশের নজরদারি যথাযথ রয়েছে। রাত দশটার পরে ওই উড়ালপুলে কোনও মোটরবাইককে উঠতে দেওয়া হয় না। কিন্তু তার আগে তো আমরা কাউকে আটকাতে পারি না’’ মোটরবাইক-সহ দুই আরোহীর উল্টে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মোটরবাইকটির গতি যে খুব বেশি ছিল না, তার প্রমাণ, দুর্ঘটনার পরেও সেটি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাইকটি কী ভাবে উড়ালপুল থেকে নীচে পড়ে গেল, সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy